অর্ণব গোস্বামী। —ফাইল চিত্র।
নিজেদের চ্যানেলের টিআরপি বাড়িয়ে দেখানোর জন্য অর্ণব গোস্বামী ব্রডকাস্ট অডিয়েন্স রিসার্চ কাউন্সিল (বিএআরসি)-এর সিইও হিসেবে কর্মরত পার্থ দাশগুপ্তকে কয়েক দফায় ১২ হাজার ডলার ও ৪০ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ এনেছে মুম্বই পুলিশ। সংবাদমাধ্যমে আজ এ খবর বেরিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, কবে, কোথায় ও কেন ওই অর্থ দেওয়া হয়েছে, তার বিবরণ-সহ প্রাক্তন বিএআরসি-কর্তা পার্থর লিখিত জবানবন্দি দ্বিতীয় চার্জশিটের সঙ্গে আদালতে জমা দিয়েছে পুলিশ। যদিও পার্থর আইনজীবী অর্জুন সিংহ দাবি করেছেন, “প্রমাণ হিসেবে এই লিখিত বয়ানের কোনও কোনও মূল্য নেই আইনের চোখে। কারণ, এটা চাপ দিয়ে লেখানো হয়ে থাকতে পারে।” অর্ণবের আইনজীবীরা বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছেন।
টিআরপি দুর্নীতি মামলায় মুম্বই পুলিশ ১২ জনের বিরুদ্ধে ১৪০০ পাতার চার্জশিট জমা দিয়েছিল গত নভেম্বরে। সিইও পার্থ, চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) রোমিলা রামগঢ়িয়া-সহ বিএআরসি-র বিভিন্ন পদাধিকারী, অর্ণবের টিভি চ্যানেল ও অন্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গত ১১ তারিখ তারা ৩৬০০ পাতার দ্বিতীয় তথা অতিরিক্ত চার্জশিট জমা দিয়েছে। সূত্রের খবর, তাতে রয়েছে বিএআরসি-র তৎকালীন কাজকর্মের ফরেনসিক অডিট রিপোর্ট, অর্ণব-পার্থের মধ্যে বিনিময় হওয়া হোয়াটসঅ্যাপ বার্তা (অন্তত হাজার পাতার), বিএআরসি-র প্রাক্তন কয়েক জন কর্মী ও বিভিন্ন কেব্ল অপারেটর-সহ মোট ৫৯ জনের দেওয়া বয়ান। ওই ফরেনসিক অডিট রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, অর্ণবের চ্যানেল, তাঁর পূর্ব-কর্মস্থল ও অন্য কয়েকটি চ্যানেলের টেলিভিশন রেটিং পয়েন্ট (টিআরপি)-এ কারচুপি করা হত।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত জবানবন্দিতে দেখা যাচ্ছে, পার্থ জানিয়েছেন, অর্ণবকে তিনি ২০০৪ থেকে চেনেন। একই চ্যানেলে কাজ করতেন তাঁরা। পার্থ ২০১৩-তে বিএআরসির সিইও হন। অর্ণব নিজের চ্যানেল শুরু করার আগেই তার রেটিং কী ভাবে বাড়ানো যাবে, তা নিয়ে কথা বলতেন তাঁর সঙ্গে। কারণ, অর্ণব জানতেন বিযয়টি তাঁর ভাল ভাবে জানা। পার্থ ও তাঁর সঙ্গীরা মিলে কারচুপি করে ২০১৭ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত অর্ণবের চ্যানেলকে এক নম্বর রেটিং পাইয়ে দিয়েছেন। এর জন্য অর্ণব ২০১৭ সালে সেন্ট রিজিস হোটেলে গিয়ে পার্থকে নগদ ৬০০০ ডলার দেন সপরিবার ফ্রান্স ও সুইৎজ়ারল্যান্ড ভ্রমণের জন্য। এর পরে সপরিবার সুইডেন ও ডেনমার্কে ঘুরে আসার জন্য ২০১৯-এ অর্ণব ওই একই হেটেলে গিয়ে আরও ৬০০০ ডলার তুলে দেন পার্থর হাতে। এ ছাড়া আইটিসি পারেল হোটেলে কয়েক দফায় গিয়ে অর্ণব তাঁকে আরও ৪০ লক্ষ টাকা দিয়েছেন। কেব্ল অপারেটররাও জানিয়েছেন, অর্থের বিনিময়ে একই সঙ্গে দু’টি চ্যানেলে দেখিয়ে অর্ণবদের রেটিং বাড়ানো হত।
অর্ণব গোড়া থেকে বলে আসছেন দুর্নীতিতে তিনি জড়িত নন। চার্জশিট বলছে, তাঁর চ্যানেলের রে়টিং উপরে রাখতে তাঁর আগের কর্মস্থলের তথ্য চাপার ঘটনাও ঘটেছে। বিএআরসি-র তৎকালীন শীর্ষ ছয় কর্তা এই কারচুপিতে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ আনা হয়েছে। ২০১৯-এ পার্থকে সরিয়ে বিএআরসি-র সিইও করা হয় সুনীল লুল্লা-কে। বিএআরসি জানিয়েছে, বিযয়গুলি নিয়ে তদন্ত চলছে। তাই তারা মন্তব্য করতে পারবে না। অর্ণবের চ্যানেল বিবৃতিতে বলেছে, কর্পোরেট জগত ও রাজনৈতিক স্বার্থের মিলিত চক্রান্ত এটা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy