ফাইল চিত্র।
আফগানিস্তানে তালিবানদের ‘দখলদার সরকার’ বা তথাকথিত ‘তালিবান আমিরশাহি’-কে স্বীকৃতি না দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জের সমস্ত সদস্য দেশের প্রতি আর্জি জানিয়েছেন ভারত-সহ ৩৬টি দেশের বিশিষ্ট জনেরা। রবিবার একটি ভার্চুয়াল আন্তর্জাতিক সম্মেলনে দীর্ঘ আলোচনার পরে একটি খসড়া ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত হয়। সেখানেই এই আর্জি জানিয়ে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানে শান্তি নিশ্চিত করার পরে রাষ্ট্রপুঞ্জকে সেখানে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে কাবুলে একটি গণতান্ত্রিক ও কল্যাণকর সরকার প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। ভারতের প্রতিনিধি হিসেবে এই খসড়া ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেন বিশিষ্ট চলচ্চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষ, শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার, লেখক শুভরঞ্জন দাশগুপ্ত, সাংবাদিক হিরণ্ময় কার্লেকর, মানস ঘোষ, সুখরঞ্জন দাশগুপ্ত, মানবাধিকার কর্মী শকুন্তলা সঙ্গম প্রমুখ।
ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে, তালিবান জঙ্গিরা যে ভাবে কাবুলে ক্ষমতা দখল করেছে তা ‘অবৈধ, অসাংবিধানিক এবং অগণতান্ত্রিক’। রাষ্ট্রপুঞ্জ ও তাদের সদস্য দেশগুলির উচিত হবে আসন্ন সাধারণ পরিষদের বৈঠকে বিষয়টির কঠোর নিন্দা করা। কোনও ভাবেই এই জঙ্গি-শাহিকে স্বীকৃতি দেওয়াটা উচিত হবে না। তারা ক্ষমতা দখলের পরেই আফগানিস্তানের মাটিতে ফের আন্তর্জাতিক জঙ্গিদের ঘাঁটি ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে ওঠার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তালিবানের উপরে চাপ সৃষ্টি করে এ বিষয়টি থেকে তাদের নিবৃত্ত করার কাজটি করতে হবে রাষ্ট্রপুঞ্জ ও তাদের প্রভাবশালী সদস্য দেশগুলিকে।
তালিবানরা ক্ষমতায় আসার পরে যে ভাবে হিংসা ও ধ্বংসযজ্ঞ শুরু হয়েছে, তার ফলে আফগানিস্তানে মানবিক বিপর্যয়ের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে জানানো হয়েছে ঘোষণাপত্রটিতে। এই বিপর্যয় প্রতিরোধে রাষ্ট্রপুঞ্জকে তৎপর হতে বলেছেন বিশিষ্ট জনেরা।
শরণার্থীদের জন্য চেকপোস্ট খুলে দিতে প্রতিবেশী দেশগুলির প্রতি আহ্বান জানিয়ে ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে— তবে আমেরিকা, ন্যাটোর মতো যে সব বৃহৎ শক্তির সিদ্ধান্তের ফলে আফগানিস্তানে এই মানবিক ও অর্থনৈতিক সঙ্কটের সৃষ্টি হয়েছে, এর দায় তাদের স্বীকার করতে হবে। রাষ্ট্রপুঞ্জের শরণার্থী তহবিলে তাদের মুক্ত হাতে অনুদান দিতে হবে। আফগানিস্তানের নারী-শিশু, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ সহ সকলের মানবাধিকার রক্ষা ও নিরাপত্তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রাষ্ট্রপুঞ্জকে করতে হবে। সংবাদমাধ্যমের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
বাংলাদেশের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবিরের সভাপতিত্বে রবিবারের অনলাইন সম্মেলনটিতে অংশ নিয়ে আলোচনা করেন ভারত ছাড়া বাংলাদেশ, মায়ানমার, পাকিস্তান, নেপাল, ইরান, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, আমেরিকা, ফ্রান্স, ব্রিটেন, ব্রাজিল, রাশিয়া, জাপানের মতো ৩৬টি দেশের ৩০০-রও বেশি শিল্পী, সাহিত্যিক, চলচ্চিত্রকার, লেখক, সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী। বিভিন্ন দেশের ১০ লক্ষ মানুষের স্বাক্ষর সংগ্রহের পরে এ দিনের ঘোষণাপত্রটি রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিবের দফতরে পাঠানো হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy