Advertisement
E-Paper

Ankiti Bose: আমার সন্তানকে কেড়ে নেওয়া হল, বিতাড়িত বাঙালি সিইও অঙ্কিতি বলছেন, লড়ে যাব

অঙ্ক আর অর্থনীতির মেধাবী ছাত্রীটি গত ৭ বছর ধরে যে ই-কমার্স সংস্থা গড়ে তুলেছিলেন, তার সিইও পদে ছিলেন, সেখান থেকে বিতাড়িত এই বাঙালি মেয়ে।

অঙ্কিতি বসু।

অঙ্কিতি বসু।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০২২ ২০:১২
Share
Save

সাফল্য আর উত্থানের সিঁড়িভাঙার অঙ্ক হঠাৎই থমকে গিয়েছে অঙ্কিতি বসুর কেরিয়ারে। অঙ্ক আর অর্থনীতির মেধাবী ছাত্রীটি গত সাত বছর ধরে যে ই-কমার্স সংস্থা গড়ে তুলেছিলেন, তার সিইও পদে ছিলেন, সেখান থেকে গত সপ্তাহে বিতাড়িত এই বাঙালি মেয়ে। হিসাবের অঙ্কে গরমিলের অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। অঙ্কিতি নিজে যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে, উল্টে তাঁর বিরুদ্ধে নানা ধরনের হেনস্থার অভিযোগ আনছেন সংস্থার অন্য কর্তাদের বিরুদ্ধে।

বড় সংস্থার চাকরি ছেড়ে ব্যবসা শুরু করেন। বছর কয়েকের মধ্যেই নজরকাড়া সাফল্য।

বড় সংস্থার চাকরি ছেড়ে ব্যবসা শুরু করেন। বছর কয়েকের মধ্যেই নজরকাড়া সাফল্য।

সংস্থার নাম জিলিঙ্গো (Zilingo)। সিঙ্গাপুরের স্টার্ট আপ। ২০১৫ সালে তৈরি। ২১ লক্ষ টাকা মূলধন নিয়ে শুরু করেছিলেন অঙ্কিতি এবং তাঁর বিজনেস পার্টনার ধ্রুব কপূর। ধ্রুব গুয়াহাটি আইআইটির ইঞ্জিনিয়ার। আর অঙ্কিতি মুম্বই সেন্ট জেভিয়ার্সের প্রাক্তনী। সিঙ্গাপুরের বিভিন্ন ফ্যাশন সামগ্রী যে সব স্থানীয় বিক্রেতা মূলত ভাষার সমস্যার জন্য বৃহত্তর বাজারে নিয়ে পৌঁছতে পারেন না, তাঁদের উপর নির্ভর করেই জিলিঙ্গো তৈরি করেন অঙ্কিতি আর ধ্রুব। দু’জনেই বড় সংস্থার চাকরি ছেড়ে ব্যবসা শুরু করেন হাতে হাত ধরে। বছর কয়েকের মধ্যেই নজরকাড়া সাফল্য। ২০১৯ সালে আনন্দবাজার অনলাইন এই বাঙালি মেয়ের উত্থানের খবর করে যখন, তখন তাঁদের ব্যবসার অঙ্ক পৌঁছে গিয়েছে প্রায় ১০ হাজার কোটিতে। ওই বছর জিলিঙ্গোকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে সম্ভাবনাময় সংস্থা বলে উল্লেখ করেছিলেন কর্পোরেট বিশেষজ্ঞরা। জিলিঙ্গো ইউনিকর্ন সংস্থার তকমা পেয়েছিল দ্রুতই।

মাস দু’য়েক আগেই অঙ্কিতিকে নোটিস ধরানো হয়েছিল।

মাস দু’য়েক আগেই অঙ্কিতিকে নোটিস ধরানো হয়েছিল।

সেই অঙ্কিতি আবার সংবাদ শিরোনামে। তাঁর সেই জিলিঙ্গোই তাঁকে বরখাস্ত করেছে। অভিযোগ আর্থিক অনিয়মের। অভিযোগ অবাধ্যতার। অভিযোগ, বিভিন্ন সময়ে তিনি সংস্থার হয়ে এমন অনেক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যার অনুমোদন দেননি অন্য ঊর্ধ্বতনেরা। অভিযোগ যাঁরা এনেছেন তাঁদের মধ্যে ধ্রুব আছেন। আছেন শৈলেন্দ্র সিংহ, যিনি জিলিঙ্গোর সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী। অঙ্কিতির ঘনিষ্ঠরা বলেন, এই শৈলেন্দ্রকে সংস্থায় আনতে রাজি ছিলেন না ধ্রুব। অঙ্কিতিই তাঁকে রাজি করিয়েছিলেন।

মাস দু’য়েক আগেই অঙ্কিতিকে নোটিস ধরানো হয়েছিল। আর্থিক নয়ছয়ের পাশাপাশি তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগও আনা হয় অঙ্কিতির বিরুদ্ধে। অভিযোগে বলা হয়, জিলিঙ্গোর আর্থিক হিসাব রক্ষার প্রক্রিয়ায় বিস্তর গোলমাল আছে।

ইনস্টাগ্রামে আত্মপক্ষ সমর্থন করে তিন পাতা চিঠি লিখেছেন। লিখেছেন, তিনি নির্দোষ, তবে বর্তমানে বিপন্ন।

ইনস্টাগ্রামে আত্মপক্ষ সমর্থন করে তিন পাতা চিঠি লিখেছেন। লিখেছেন, তিনি নির্দোষ, তবে বর্তমানে বিপন্ন।

অঙ্কিতির বক্তব্য, সংস্থার হিসাব এবং সব রকম আর্থিক লেনদেন সম্পর্কে বোর্ডের বাকিরাও জানতেন। এমন কোনও চুক্তি বা লেনদেন হয়নি যা তাঁরা জানতেন না। অঙ্কিতির দাবি, আর্থিক নয়ছয়কে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থার কারণ বলে দেখানোই হয়নি। সংস্থার তরফে বলা হয়েছে, তদন্তে সহায়তা করছেন না বলেই তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা। অথচ উপযুক্ত নথি পেশ করার জন্য যে সময়টুকু দেওয়া উচিত ছিল, তার সিকিভাগও দেওয়া হয়নি বলে অঙ্কিতির অভিযোগ।

ইনস্টাগ্রামে আত্মপক্ষ সমর্থন করে তিন পাতা চিঠি লিখেছেন তিনি। লিখেছেন, তিনি নির্দোষ, তবে বর্তমানে বিপন্ন। লিখেছেন, ‘আমার মনে হচ্ছে, আমার সন্তানকে কেউ আমার থেকে কেড়ে নিয়েছে। কেন কেড়ে নেওয়া হয়েছে তার কারণ বলা হয়নি। সন্তানের জন্য লড়াই করার সুযোগও দেওয়া হয়নি। আমি এক দিকে সন্তানের শোকে কাঁদছি, অন্যদিকে নিজের জন্যও লড়ে চলেছি।’

অঙ্কিতির কথায় পরিষ্কার, লড়াই তিনি ছাড়ছেন না।

অঙ্কিতির কথায় পরিষ্কার, লড়াই তিনি ছাড়ছেন না।

পাল্টা অভিযোগও এনেছেন অঙ্কিতি। নানা ভাবে হেনস্থার অভিযোগ। ইনস্টাগ্রাম পোস্টে লিখেছেন, ‘আমার ব্যক্তিগত ছবি, নথি, চ্যাট, আমার অনুমতি ছাড়াই সংগ্রহ করা হয়েছে এবং তা ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। যা নানা ভাবে বিকৃত করে পরিবেশন করা হচ্ছে নেটমাধ্যমে।’ অভিযোগ, এ সবের জেরে নেটমাধ্যমে ধর্ষণের হুমকিও পেতে হচ্ছে তাঁকে। ধেয়ে আসছে কুৎসিত সব মন্তব্য।

অঙ্কিতি আর ধ্রুবদের মধ্যেকার লড়াই এ বার হয়তো আইনি রাস্তাও ধরবে। কে জিতবেন, কে হারবেন, না কি নতুন করে সমঝোতার পথ খুলবে দু’তরফের, তা ভবিষ্যতের হাতে। কিন্তু অঙ্কিতির কথায় পরিষ্কার, লড়াই তিনি ছাড়ছেন না। যে জেদ নিয়ে, যে অঙ্ক কষে জিলিঙ্গোকে তিনি বড় করেছেন, সেই জেদ আর অঙ্কেই নতুন করে শান দিচ্ছেন অঙ্কিতি।

Ankiti Bose bengali girls Start-up Zilingo

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}