২০ ডিসেম্বর ফিরোজাবাদে হিংস্র ভিড়ের হাত থেকে এই হাজি কাদিরই (মাঝে) বাঁচিয়েছিলেন পুলিশকর্মী অজয় কুমারকে। শুক্রবার অজয়কে দেখতে তাঁর বাড়িতে যান কাদির। ত্রাতাকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন অজয়। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া
সিএএ-র বিরোধিতায় সবচেয়ে বেশি হিংসার সাক্ষী থেকেছে উত্তরপ্রদেশ। সেই যোগী-রাজ্যই সাক্ষী থাকল অমলিন মানবিকতার।
পুলিশ-বিক্ষোভকারী সংঘর্ষে উত্তরপ্রদেশে প্রাণ গিয়েছে ১৯ জন বিক্ষোভকারীর। ‘বদলা’ নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। অভিযোগ, যোগীর ‘ব্যক্তিগত’ নির্দেশেই পুলিশ নিশানা করছে মুসলিম, বিক্ষোভকারী এবং সমাজকর্মীদের। এটা যদি মুদ্রার এক দিক হয়, অন্য দিক রয়েছে অজয় ও কাদিরের কাহিনি।
গত ২০ ডিসেম্বর ফিরোজাবাদে সিএএ-বিরোধী আন্দোলন চলাকালীন হিংস্র ভিড়ের হাত থেকে অজয় কুমার নামে এক পুলিশকর্মীকে রক্ষা করেন হাজি কাদির নামে এক স্থানীয় ব্যক্তি। অজয়ের চোখে এখন যিনি ‘দেবদূত।’ তাঁর কথায়, ‘‘উনি (কাদির) দেবদূতের মতো এসে আমায় বাঁচিয়েছেন।’’
২০ ডিসেম্বর কী ঘটছিল ফিরোজাবাদে? সে দিন আন্দোলন-বিক্ষোভ চলাকালীন অজয় কুমারকে ঘিরে ফেলেন বিক্ষোভকারীরা। ক্রমেই হিংস্র হয়ে ওঠা বিক্ষোভকারীরা মারধর করেন অজয়কে। তাঁর মাথায় এবং হাতে চোট লাগে। সেই সময় ওই উন্মত্ত জনতার হাত থেকে ওই পুলিশকর্মীকে রক্ষা করেন কাদির। একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অজয় বলেছেন, ‘‘হাজি কাদির সাহেব আমাকে ওই ভিড়ের হাত থেকে বাঁচিয়ে তাঁর বাড়িতে নিয়ে যান। আমাকে জল এবং পোশাক দেন। আমাকে তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, চিন্তা করবেন না, আপনি এখন নিরাপদ জায়গায় রয়েছেন।’’ এর পরে অজয়কে থানায় পৌঁছে দেন কাদির। অজয় বলেন, ‘‘সে দিন কাদির না থাকলে আমি খুন হয়ে যেতাম।’’
আরও পড়ুন: এনআরসি নিয়ে নীরব অমিত শাহ, আলিয়া কটাক্ষে লক্ষ্য মেরুকরণ
শুক্রবার অজয়ের পোশাক ফেরত দিতে তাঁর বাড়ি গিয়েছিলেন কাদির। অজয়ের হাতে প্লাস্টার। রক্ষাকর্তাকে দেখে কেঁদে ফেলেন তিনি। অজয়ের বাড়ির লোকজনও এক বাক্যে স্বীকার করে নেন, ‘‘ফরিস্তা (দেবদূত)-এর মতো সে দিন হাজি সাহেব এসে না-পড়লে আমরা অজয়কে ফিরে পেতাম না।’’
সংবাদমাধ্যমে ‘রক্ষাকর্তা’ কাদির জানিয়েছেন, সেই সময় তিনি নমাজ পড়ছিলেন। জানতে পারেন, কয়েক জন বিক্ষোভকারী এক পুলিশকর্মীকে ঘিরে ধরে মারধর করছে। তিনি বলেন, ‘‘ওই পুলিশকর্মী মারাত্মক জখম ছিলেন। বাঁচানোর সময় আমি তাঁর নাম জানতাম না। যা করেছি, মানবিকতার খাতিরেই করেছি।’’
এই মানবিকতার ছবিই এখন দেখতে চাইছে গোটা ভারত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy