প্রতীকী ছবি।
বিজেপি শাসিত বেশ কয়েকটি রাজ্য ইতিমধ্যেই ‘লাভ জেহাদ’ রুখতে আইন প্রণয়নের তোড়জোড় শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে দিল্লি হাইকোর্ট এক মামলার প্রেক্ষিতে গত কাল জানিয়েছে, এক জন প্রাপ্তবয়স্ক মহিলার নিজের ইচ্ছায় যে কোনও জায়গায় থাকার ও স্বেচ্ছায় যে কোনও ব্যক্তির সঙ্গে থাকার স্বাধীনতা রয়েছে। আইনজীবীদের একটা বড় অংশের মতে, সমাজে যখন ‘লাভ জেহাদ’, ভিন্ জাতে বিয়ের কারণে খুন, ‘পরিবারের সম্মান রক্ষার্থে হত্যা’র মতো ঘটনা বেড়ে চলছে, তখন দিল্লি হাইকোর্টের এই মন্তব্য নিঃসন্দেহেই তাৎপর্যপূর্ণ।
পরভিন নামে এক মহিলা দিল্লি হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন, তাঁর বোন সুলেখা গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে নিখোঁজ। তাঁকে যেন আদালতের সামনে হাজির করা হয়। সুলেখার পরিবারের সন্দেহ ছিল, বাবলু নামে এক ব্যক্তির সঙ্গেই বাড়ির মেয়ে পালিয়ে গিয়েছে। আদালতের নির্দেশে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে সুলেখাকে বিচারপতি বিপিন সঙ্ঘী এবং বিচারপতি রজনীশ ভাটনগরের বেঞ্চের সামনে হাজির করে পুলিশ। সুলেখা জবানবন্দিতে জানিয়েছিল, তিনি বাবলুর সঙ্গে স্বেচ্ছায় বাড়ি ছেড়েছেন এবং বাবলুকে বিয়ে করেছেন। এই বক্তব্য জানার পরে আদালত, সুলেখাকে তাঁর স্বামীর সঙ্গে থাকতে সম্মতি দিয়েছে। দিল্লি হাইকোর্ট বলেছে, ‘‘স্ট্যাটাস রিপোর্ট অনুযায়ী সুলেখার জন্ম ২০০০ সালে। যখন নিখোঁজ হয়েছিলেন, তখন তিনি প্রাপ্তবয়স্ক। অতএব সুলেখার স্বেচ্ছায় যে কোনও জায়গায় থাকার এবং যে কোনও ব্যক্তির সঙ্গে নিজের ইচ্ছানুসারে বসবাসের স্বাধীনতা রয়েছে।’’
পুলিশকে দিল্লি হাইকোর্টের নির্দেশ, বিষয়টি নিয়ে সুলেখার বাবা-মাকে যেন বোঝানো হয়। তাঁরা যেন কোনও অবস্থাতেই আইন নিজেদের হাতে তুলে না নেন অথবা সুলেখা ও বাবলুকে হুমকি বা শাসানো থেকে বিরত থাকেন। আদালতের আরও নির্দেশ, সুলেখাকে যেন নিরাপত্তা দিয়ে তাঁর স্বামীর কাছে পৌঁছে দেয় পুলিশ এবং ওই দম্পতি যেখানে থাকেন, সেখানের স্থানীয় থানার বিট কনস্টেবলের মোবাইল নম্বর যেন তাঁদের দেওয়া হয়। যাতে সুলেখা-বাবলু প্রয়োজনে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
আরও পড়ুন: সপ্তম পর্বের আনলকে নয়া করোনা নির্দেশিকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের
দিল্লি হাইকোর্টের রায় সম্পর্কে কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী পৌষালী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এক জন সাবালিকা যদি নিজের পছন্দ অনুযায়ী ভোট দিয়ে দেশের সরকার নির্বাচন করতে পারেন, তা হলে নিজের পছন্দ অনুযায়ী বিয়ে কেন করতে পারবে না? এটা তো ব্যক্তিগত স্বাধীনতার বিষয়। সেখানে রাষ্ট্র, পরিবার, আইন নাক গলাতে পারে না।’’
গত কালই এক হিন্দু তরুণী ও মুসলিম যুবকের বিয়ে নিয়ে মামলায় একই সুরে কথা বলেছে ইলাহাবাদ হাইকোর্ট। আদালত জানিয়েছে, পাত্র ও পাত্রীকে ধর্মের নিরিখে নয়, দুজন মানুষ হিসেবেই বিচারপতিরা দেখছেন। দেশের সংবিধান ও আইন নিজের পছন্দমাফিক বিয়ের অধিকার দিয়েছে নাগরিকদের। সেখানে বিচার্য বিষয় পাত্র বা পাত্রীর বয়স এবং সম্মতি। পৌষালীর বক্তব্য, ‘‘সংবিধানে রাইট টু লাইফ এবং ব্যক্তিগত স্বাধীনতা স্বীকৃত। অর্থাৎ আমি কী ভাবে বাঁচব তা স্থির করার স্বাধীনতা আমার রয়েছে।’’
আরও পড়ুন: নিরাপত্তার অছিলায় অ্যাপ নিষিদ্ধ করছে ভারত, অভিযোগ চিনের
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy