ফল ঘোষণার পর চার দিন কেটে গেলেও এখনও মহারাষ্ট্রের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রীর নাম জানা যায়নি। প্রথমে ‘মহাজুটি’ জোটের দুই শরিক বিজেপি এবং শিবসেনার মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়ে টানাপড়েনের আভাস পাওয়া গেলেও বুধবার দুই দলেরই শীর্ষ নেতৃত্ব জোটধর্মে আস্থা রাখার বার্তা দিয়েছেন। বিদায়ী তথা তদারকি মুখ্যমন্ত্রী তথা শিবসেনা প্রধান একনাথ শিন্ডে আরও এক ধাপ এগিয়ে জানিয়েছেন, ‘পরিবারের প্রধান’ নরেন্দ্র মোদী যা সিদ্ধান্ত নেবেন, তাতেই সমর্থন থাকবে তাঁদের।
তার পরেও অবশ্য বিষয়টা খুব সহজে মিটে যাচ্ছে, বাহ্যত তেমন ইঙ্গিত নেই। বরং বৃহস্পতিবার ভোর পর্যন্ত দিল্লিতে এই বিষয়ে দফায় দফায় বৈঠক চলে। বুধবার বিকেলেই দিল্লি পাড়ি দিয়েছিলেন বিজেপি নেতা তথা বিদায়ী মন্ত্রিসভার উপমুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীস। বিকেলে দিল্লির বিমান ধরেন শিন্ডে এবং ‘মহাজুটি’র আর এক শরিক দল এনসিপি-র অজিত পওয়ারও। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, গভীর রাতে দলের নেতা বিনোদ তাওড়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করেন। মহারাষ্ট্রে সরকার গঠন নিয়ে শাহের সঙ্গে তাঁর প্রায় এক ঘণ্টা ধরে বৈঠক হয়।
বৃহস্পতিবার বেলায় শাহের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা শিন্ডে, ফডণবীস এবং অজিতের। বুধবার দিল্লি উড়ে যাওয়ার আগে অজিত জানান, বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী এবং দুই উপমুখ্যমন্ত্রীর বিষয়ে আলোচনা হবে। বিজেপি সূত্রে খবর, শাহি বৈঠকে সম্ভাব্য মন্ত্রিসভার রূপরেখা এবং শপথগ্রহণের দিনক্ষণও চূড়ান্ত হতে পারে।
আরও পড়ুন:
মহারাষ্ট্রের বিধানসভা ভোটের ফল বলছে, একক ভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে বিজেপির মাত্র ১৩টি আসন প্রয়োজন। সে ক্ষেত্রে জোটের বৃহত্তম দল হিসাবে মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার তারাই। বিজেপি নেতা-কর্মীদের একাংশের যুক্তি, ২০২২ সালের জুলাই মাসে সাবেক শিবসেনা থেকে অনুগত বিধায়কদের ভাঙিয়ে বিজেপির হাত ধরেছিলেন শিন্ডে। শিন্ডের বিদ্রোহে ভেঙে গিয়েছিল উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বাধীন শিবসেনা, কংগ্রেস এবং এনসিপির জোট সরকার। তাই শিন্ডের সেই সময়ের রাজনৈতিক গুরুত্ব এখন আর নেই বলে দাবি পদ্ম সমর্থকদের। তবে শিন্ডেসেনার অত্যুৎসাহী সমর্থকদের পাল্টা দাবি, শিন্ডের মুখ্যমন্ত্রিত্বেই ‘বড় সাফল্য’ পেয়েছে এনডিএ। তাই তাঁকেই মুখ্যমন্ত্রী করা হোক। তবে শিন্ডে যে ভাবে মোদীর সিদ্ধান্তে ‘আস্থা’ রাখার কথা জানিয়েছেন, তাতে অনেকেই মনে করছেন, ফডণবীসই ফের মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন। সে ক্ষেত্রে শিন্ডে দিল্লিতে বড় দায়িত্ব পেতে পারেন বলে বিজেপির একটি সূত্রের দাবি। তবে বৃহস্পতিবারই গোটা বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যেতে পারে বলে জানা যাচ্ছে।