Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Amit Shah

এনপিআর: আস্থা নেই অমিত-আশ্বাসে

ডিসেম্বর রাজ্যসভাতেই অমিত বলেছিলেন, গোটা দেশে এনআরসি করতে সরকার বদ্ধপরিকর। কিন্তু গত চার মাসে সরকার-বিরোধী আন্দোলন তীব্র হয়েছে।

অমিত শাহ।

অমিত শাহ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২০ ০২:২৪
Share: Save:

আশ্বাসই সার!

জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জি (এনপিআর) নিয়ে ধোঁয়াশা জিইয়ে রাখলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। নীরব রইলেন জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) নিয়ে। বিরোধীদের মতে, দেশ জুড়ে বিক্ষোভ-আন্দোলন দেখে এনআরসি-প্রসঙ্গ ইচ্ছে করেই এড়িয়েছেন তিনি। এনপিআর-এর মাধ্যমে সন্দেহজনক ভোটারদের তালিকা তৈরি করা হবে না বলে যে দাবি অমিত গত কাল করেছেন, তার সত্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা। কারণ এই সংক্রান্ত নাগরিকত্ব আইন (১৯৫৫) বলছে সম্পূর্ণ উল্টো কথা। সেখানে এনপিআরের ভিত্তিতে সন্দেহজনক ভোটারদের চিহ্নিতকরণের কথাই বলা রয়েছে। বিরোধীদের পাল্টা প্রশ্ন, সেই আইন না-বদলালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বয়ানের কী ভরসা! যেখানে রাজনাথ সিংহ বা কিরেণ রিজিজুর মতো মোদী সরকারের মন্ত্রীরাই একাধিক বার জানিয়েছেন, এনপিআর হল এনআরসি-র প্রথম ধাপ।

ডিসেম্বর রাজ্যসভাতেই অমিত বলেছিলেন, গোটা দেশে এনআরসি করতে সরকার বদ্ধপরিকর। কিন্তু গত চার মাসে সরকার-বিরোধী আন্দোলন তীব্র হয়েছে। দিল্লি ভোটে হেরেছে বিজেপি। উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে গোষ্ঠী সংঘর্ষ থামাতে ব্যর্থ অমিতের নিয়ন্ত্রণাধীন দিল্লি পুলিশ। এক কংগ্রেস নেতার কথায় ‘‘দেশব্যাপী বিক্ষোভ দেখে এ যাত্রায় এনআরসি প্রসঙ্গ চেপে গেলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।’’ তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন বলছেন, ‘‘এনপিআর করে এনআরসি-র রাস্তা খোলা রাখতে চাইছে সরকার।’’ .

এনপিআর ও এনআরসি রূপায়ণ যাদের হাতে, সেই রেজিস্ট্রার জেনারেল অ্যান্ড সেন্সাস কমিশনারের বার্ষিক রিপোর্টও বলছে, এনআরসি-র প্রথম ধাপ এনপিআর। যদিও আজ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বলেছে, সরকার শুধু এনপিআর করার নির্দেশিকা দিয়েছে। এনআরসি করা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। কিন্তু শীতকালীন অধিবেশনে খোদ অমিত যে ভাবে প্রথমে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ), তার পরে এনপিআর ও শেষে এনআরসি করা হবে বলেছিলেন, তাতে স্বরাষ্ট্র কর্তাদের কথায় আদৌ ভরসা নেই বিরোধীদের।

অতীতেও দু’বার এনপিআরের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করেছে কেন্দ্র। কিন্তু এ বারের এনপিআর ফর্মে নতুন আটটি প্রশ্ন যোগ হয়েছে। যেখানে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে তাঁর মাতৃভাষা, বাবা-মায়ের জন্মতারিখ ও জন্মস্থান জানাতে হবে। যদিও সরকার দাবি করে আসছে, ওই তথ্য জানানো বাধ্যতামূলক নয়। বরং ঐচ্ছিক। কিন্তু নাগরিকত্ব আইনের ৪ নম্বর ধারার ৪ নম্বর উপধারায় বলা হয়েছে, এনপিআরের উত্তর দেখে যদি স্থানীয় রেজিস্ট্রারের মনে কারও সম্পর্কে সন্দেহ জাগে, সে ক্ষেত্রে ওই ব্যক্তিকে সন্দেহজনক নাগরিক হিসেবে চিহ্নিত করা যাবে। পরবর্তী ধাপে রেজিস্ট্রার ওই ব্যক্তির নাগরিকত্ব নিয়ে তদন্ত করে দেখতে পারবেন। ওই ব্যক্তি সম্পর্কে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রেজিস্ট্রারের। যাঁদের নাম সন্দেহভাজনদের চূড়ান্ত তালিকায় থাকবে, তাঁদের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে নিজেদের নাগরিকত্ব প্রমাণের সুযোগ দেওয়া হবে। যেমনটা হয়েছে অসমে। নাগরিকত্ব প্রমাণে সফল হলে সংশ্লিষ্টের নাম ‘সন্দেহভাজন’ তালিকা থেকে বাদ যাবে— অন্তর্ভুক্ত হবে এনআরসি-তে। দেশের নাগরিক বলে বিবেচিত হবেন তিনি। যাঁদের নাম উঠবে, তাঁদের নাগরিকত্ব কার্ড দেবে সরকার। বিরোধীদের অভিযোগ, শেষের এই ধাপগুলোই চেপে যাওয়ার কৌশল নিয়েছে মোদী সরকার। যা প্রকাশ করা হচ্ছে, তা অর্ধসত্য।

অন্য বিষয়গুলি:

Amit Shah NPR
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy