Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Mamta Banerjee

বঙ্গের স্বাস্থ্য নিয়ে মমতাকে তির মালব্যের

সূত্রের মতে, মালব্য যে হিসেব তুলে ধরে রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করেছেন, সেটি মূলত এক আর্য়ুবেদ চিকিৎসকের তথ্যের অধিকার আইনে প্রাপ্ত নথি থেকে পাওয়া।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিজেপির আইটি শাখার প্রধান অমিত মালব্য।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিজেপির আইটি শাখার প্রধান অমিত মালব্য।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২০ ০৪:৫২
Share: Save:

বঙ্গের স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিয়ে আজ আক্রমণ শানালেন বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য। টুইট করে মালব্য অভিযোগ করেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার লাগাতার কেন্দ্রীয় বঞ্চনার কথা বললেও, কার্যক্ষেত্রে আয়ুষ খাতে কেন্দ্রের পাঠানো অর্থ গত তিনটি আর্থিক বছরে খরচ করতে ব্যর্থ হয়েছে। একই সঙ্গে অন্য আর একটি টুইটে রাজ্যে চিকিৎসা বিভাগে নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়েও সরব হন তিনি। পাল্টা জবাবে তৃণমূল সাংসদ নুসরত জহানের কটাক্ষ, বিজেপির সাংসদেরা তো করোনার চিকিৎসায় ভাবীজি পাঁপড়ে উপর ভরসা রাখেন!

আজ আয়ুষ নিয়ে একটি আরটিআই-এর জবাবকে তুলে ধরে মুখ খুলেছেন মালব্য। টুইটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘পিসি’ সম্বোধন করে তিনি বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসাবে পিসি একেবারে ব্যর্থ। মোদী সরকার জাতীয় আয়ুষ মিশনে ৯৪.৯ কোটি টাকা দিলেও, মমতা প্রশাসন তার মধ্যে ৪৮.১৭ কোটি টাকা খরচ করতে ব্যর্থ হয়েছে। যা রাজ্য সরকারের ভেঙে পড়া চিকিৎসা ব্যবস্থা শোধরানোর কাজে লাগতে পারত।’’

সূত্রের মতে, মালব্য যে হিসেব তুলে ধরে রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করেছেন, সেটি মূলত এক আর্য়ুবেদ চিকিৎসকের তথ্যের অধিকার আইনে প্রাপ্ত নথি থেকে পাওয়া। যেখানে আয়ুষ মন্ত্রক হিসেব দেখিয়ে জানিয়েছে, জাতীয় আয়ুষ মিশনে ২০১৪ থেকে ২০২০-র ৩০ জুন পর্যন্ত কেন্দ্র ও রাজ্য মিলিয়ে পশ্চিমবঙ্গের জন্য অনুমোদিত হয়েছে ১৫০ কোটি ১৩ লক্ষের মতো টাকা। তার মধ্যে কেন্দ্র দিয়েছে ৯৪ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা। রাজ্য ২০২০-র জুন মাস পর্যন্ত তার মধ্যে ৪৬ কোটি ৭৩ লক্ষ টাকা খরচ করতে পেরেছে। অব্যবহৃত থেকে গিয়েছে ৪৮ কোটি ১৭ লক্ষ টাকা!

ওই হিসেব বলছে, যে টাকা খরচ করা গিয়েছে, তার মধ্যেও রাজ্য ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট দিতে পেরেছে মাত্র ২৭ কোটি ৮৭ লক্ষ টাকার। সবচেয়ে শোচনীয় অবস্থা ২০১৯-২০ আর্থিক বর্ষের। ওই বছর কেন্দ্রের দেওয়া ১৮ কোটি ৪৯ লক্ষের মধ্যে কোনও টাকাই খরচ করতে পারেনি রাজ্য। ২০২০-২১ এ এখনও পর্যন্ত রাজ্যের জন্য কোনও টাকা দেওয়া হয়নি, ফলে খরচের প্রশ্ন নেই।

২০১৮-১৯ সালে কেন্দ্র দিয়েছিল ২২ কোটি ৯২ লক্ষ টাকা। তার মধ্যে মাত্র ৫ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা খরচ করেছে রাজ্য। তার মধ্যে এখনও পর্যন্ত ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট দিতে পেরেছে মাত্র ১২ কোটি টাকার। আজ সেই তথ্যের ভিত্তিতেই তৃণমূল নেতৃত্বকে আক্রমণ শানান মালব্য। যার জবাবে তৃণমূল সাংসদ নুসরত বলেন, ‘‘বিজেপির সাংসদেরা তো করোনার চিকিৎসায় ভাবীজি পাঁপড়ে ভরসা রাখেন। তাদের সেটা অমিত মালব্যকে পাঠানোর কথা ভাবা উচিত এবং দেখা উচিত তা মালব্যের বোকামি সারাতে পারে কি না।’’ একই সঙ্গে তৃণমূলের ওই সাংসদ পাল্টা প্রশ্নে অমিত মালব্যের কাছে জানতে চান, ‘‘মালব্যজি, আপনি কি বলতে পারবেন কেন নরেন্দ্র মোদী কেবল জিডিপি-র ১.১৫ শতাংশ স্বাস্থ্যখাতে খরচ করছেন?’’ কেন্দ্রের আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের সঙ্গে রাজ্যের স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের তুলনাও টেনে এনেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের বক্তব্য, আয়ুষ্মান ভারত ও স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প-উভয় ক্ষেত্রেই পাঁচ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্য বিমা করা হয়ে থাকে। কিন্তু আয়ুষ্মান ভারতে রাজ্যগুলিকে খরচের ৪০ শতাংশ বহন করতে হয়। সেখানে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে বিনামূল্যে সমস্ত সরকারি ও ১৫৯০ বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করানো যায়। রাজ্যের দেড় কোটি পরিবারের ৭.৫ কোটি মানুষ ওই প্রকল্পের আওতায় ইতিমধ্যেই চলে এসেছেন। রাজ্য সরকার ওই খাতে ৯২৫ কোটি টাকা খরচ করেছে। সামগ্রিক ভাবে বিচার করলে যা কেন্দ্রের তুলনায় অনেক বেশি।

অন্য বিষয়গুলি:

Mamta Banerjee Amit Malviya
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy