Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Rabi Crops

কৃষি বিল নিয়ে প্রতিবাদ-প্রতিরোধের মধ্যেই ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বাড়ল মোদী সরকার

কৃষি বিল নিয়ে এবং তা পাশ করানোর পদ্ধতি নিয়ে বিরোধীরা গুচ্ছ গুচ্ছ অভিযোগ তুললেও প্রধানমন্ত্রী নিজে এই বিলকে ‘ঐতিহাসিক’ বলেছেন।

ছবি রয়টার্স।

ছবি রয়টার্স।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২২:৪০
Share: Save:

কৃষি বিল নিয়ে বিরোধীদের তীব্র প্রতিবাদ-প্রতিরোধের মধ্যেই রবিশষ্যের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (এমএসপি) বাড়াল কেন্দ্র। গম, ডাল থেকে তেলবীজ— সবেরই দাম বাড়ানো হয়েছে। সোমবার প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বৈঠকে এই সিদ্ধান্তে সিলমোহর দিয়েছে মন্ত্রিসভার অর্থ বিষয়ক কমিটি। সবেচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে মুসুর ডালের— কুইন্টাল পিছু ৩০০ টাকা। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, কৃষি বিল নিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ সামাল দেওয়ার চেষ্টাতেই তড়িঘড়ি মোদী সরকারের এই সিদ্ধান্ত।

কৃষকদের কাছ থেকে ফসল কিনে নেয় সরকার। এটাই ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বা এমএসপি। গ্রাম-গঞ্জের বাজারে সরকারের প্রতিনিধিরা গিয়ে কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ফসল কিনে নেন। এই সহায়ক বাড়ানোর সিদ্ধান্ত সোমবার ঘোষণা করল মোদী সরকার। সোমবারের অর্থ বিষয়ক ক্যাবিনেট কমিটির বৈঠকের পর বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, গমের এমএসপি কুইন্টাল পিছু ৫০ টাকা বাড়িয়ে করা হল ১৯৭৫ টাকা। সর্ষের নতুন দাম হয়েছে ৫৬৫০ টাকা। প্রতি কুইন্টালে বাড়ানো হয়েছে ২২৫ টাকা। সবেচেয়ে বেশি বেড়েছে মুসুর ডালের এমএসপি। বর্তমানে মুসুরের এমএসপি ছিল ৪৮০০ টাকা প্রতি কুইন্টাল। ৩০০ টাকা বাড়িয়ে দাম করা হল ৫১০০ টাকা। এ ছাড়া ছোলার ডালের দামও ৫১০০ টাকা। প্রতি কুইন্টালে বেড়েছে ২২৫টাকা।

কৃষি বিল নিয়ে এবং তা পাশ করানোর পদ্ধতি নিয়ে বিরোধীরা গুচ্ছ গুচ্ছ অভিযোগ তুললেও প্রধানমন্ত্রী নিজে এই বিলকে ‘ঐতিহাসিক’ বলেছেন। এমএসপি বাড়ানোর সিদ্ধান্তকে আরও এক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত আখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টুইটারে লিখেছেন, ‘কৃষি ও কৃষকদের উন্নয়নের স্বার্থে কাজ করা আমাদের অন্যতম দায়িত্ব। কৃষক-সহায়ক একাধিক পদক্ষেপের সঙ্গেই এ দিন এমসপি বাড়ানোর ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রিসভা। কোটি কোটি পরিবার এই সিদ্ধান্তের ফলে উপকৃত হবেন।’’

কৃষকরা এখন আর শুধু সরকারি প্রতিনিধি নয়, যাঁকে ইচ্ছা তাঁকেই বিক্রি করতে পারবেন— নয়া নয়া কৃষি বিলে এমন সংস্থান নিয়েই আপত্তি বিরোধীদের। তাঁদের অভিযোগ, এর ফলে ফড়ে-দালালদের বাড়বাড়ন্ত হবে। দাম পাবেন না প্রকৃত চাষিরা। তা ছাড়া এর ফলে এমএসপি-র ধারনাও ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা। পাশাপাশি সোমবারও চণ্ডীগড়, হরিয়ানা-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ দেখিয়েছে কংগ্রেস এবং কৃষকরা। তৃণমূ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার থেকে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। এই পরিস্থিতিতে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য এক দিকে কৃষকদের মন জয়ের চেষ্টা এবং বিরোধীদের ক্ষোভ প্রশমনের চেষ্টা করে কার্যত এক ঢিলে দুই পাখি মারলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

আরও পড়ুন: ‘ঐতিহাসিক ও প্রয়োজনীয়’, কৃষি বিলের পক্ষে ব্যাট ধরলেন মোদী

বিল পাশ নিয়েও নানা অভিযোগ তুলেছিল বিরোধীরা। বিল পাশ করানো নিয়ে রবিবার কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় রাজ্যসভা। বিরোধীদের নজিরবিহীন হইহট্টগোল চলতে থাকে ওয়েলে নেমে। বিক্ষোভের জেরে সাময়িক ভাবে রাজ্যসভা টিভির সম্প্রচার বন্ধ হয়ে যায়। সেই সময় চেয়ারে ছিলেন ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ নারায়ণ সিংহ। ভেঙে দেওয়া হয় তাঁর সামনের তিনটি মাইক। রুল বুক ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ ওঠে। তার জেরে আট সাংসদকে সাসপেন্ড করেছেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডু। সোমবারও দিনভর সংসদে তার রেশ ছিল। সংসদ ভবনের বাইরে ধর্নায় বসেছেন সাসপেন্ড আট সাংসদ-সহ বিরোধীরা। পাশাপাশি ডেপুটি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিলেন বিরোধী দলের সাংসদরা। কিন্তু এ দিন সেই প্রস্তাব খারিজ হয়েছে।

আরও পড়ুন: কোভিড-বেকারত্ব-চিন থেকে দৃষ্টি ঘোরাতে সোশ্যাল মিডিয়াকে হাতিয়ার করছে বিজেপি: শশী তারুর

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE