অমরনাথ, কেদারনাথ, কামাখ্যা এবং মহাকালেশ্বর— ভারত জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বিভিন্ন তীর্থস্থান। এই সব তীর্থস্থানে যাতাযাতের সুবিধার জন্য তৈরি হতে চলেছে রোপওয়ের জাল!
ট্রেন, বাস, বিমানে চেপে পুণ্যার্থীরা তীর্থস্থানে পৌঁছতে পারলেও মন্দির চত্বর পর্যন্ত যেতে গেলে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়। কিন্তু রোপওয়ে পরিষেবা চালু হলে সেই সব ঝঞ্ঝাট থেকে মুক্তি মিলবে বলেই আশা করা যাচ্ছে।
সংবাদ মাধ্যম নিউজ১৮ সূত্রে খবর, ভারতের উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম— গোটা দেশ জুড়ে প্রধান প্রধান মন্দিরগুলিতে যাতায়াতের সুবিধার্থে ৩০টি রোপওয়ে সংযোগের প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। যাতে করে ১২০ কিলোমিটারেরও বেশি পথ অতিক্রম করা যাবে। ‘ন্যাশনাল রোপওয়ে ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম’-এর অধীনে এই গোটা প্রকল্প বাস্তবায়িত করা হবে।
আরও পড়ুন:
বর্তমানে কাশী বিশ্বনাথ মন্দির চত্বরে একটি প্রকল্প চলছে। ৩.৮৫ কিলোমিটার রোপওয়ে পথ জুড়বে বারাণসী ক্যান্টনমেন্ট এবং গোদোলিয়া চক। ফলে খুব কম সময়ে স্টেশন থেকে পৌঁছে যাওয়া যাবে কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরে। এ ছাড়াও হিমাচল প্রদেশ এবং হরিয়ানাতেও দু’টি প্রকল্পের কাজ শুরু করার ভাবনা রয়েছে।
ভারতের ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি-র অধীনে হিমাচল প্রদেশের কুলুতে বিজলি মহাদেব এবং হরিয়ানার ধোসি হিলের মহেন্দ্রগড়ের জন্য দু’টি প্রকল্পের কাজ হবে। পাশাপাশি মধ্য প্রদেশের মহাকালেশ্বর, উত্তর প্রদেশের সঙ্গম এবং কাশ্মীরের শংকরাচার্যের মন্দির— এই তিন জায়গায় মোট ৭টি প্রকল্পের কথা ভাবা হয়েছে।
এ ছাড়াও ৩০টি প্রকল্পের তালিকায় উত্তরাখণ্ডের দু’টি রোপওয়ে রুট রয়েছে। গৌরিকুণ্ড থেকে কেদারনাথ এবং চামোলির হেমকুন্দ সাহেব জী-গোবিন্দ ঘাটের মধ্যে রোপওয়েতে যাওয়া যাবে।
আরও ১৫টি প্রকল্পও ভাবনা চিন্তার স্তরে রয়েছে। যার মধ্যে উত্তরাখণ্ডের নৈনিতালে অবস্থিত কাঠগোদাম এবং হনুমান মন্দির যুক্ত হবে রোপওয়ের মাধ্যমে। মোট ১৫ কিলোমিটার পথ খুবই কম সময়ে অতিক্রম করা যাবে।
অসমের কামাখ্যা মন্দির, অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং মঠ, গুজরাতের সবরমতি রিভারফ্রন্ট এবং স্ট্যাচু অফ ইউনিটি, মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়র ফোর্ট এবং তামিলনাড়ুর মেরিনা বিচ— এই সব জায়গায়তেও রোপওয়ে সংযোগের পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি আরও কয়েকটি রুটে রোপওয়ে পরিষেবা চালু করা হবে বলেও খবর।
আরও পড়ুন:
মঙ্গলবার দিল্লিতে ‘রোপওয়ে: সিম্পোজিয়াম-কাম-প্রদর্শনী’ নামে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গডকড়ী। সেখানেই দেশ জুড়ে রোপওয়ে প্রকল্পগুলি নিয়ে কথা হয়। মন্ত্রী বলেন, “পার্বত্য অঞ্চলে পর্যটকদের কথা মাথায় রেখেই রোপওয়ে পরিষেবা চালুর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।”
‘ন্যাশনাল রোপওয়ে ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম’-এর অধীনে আগামী পাঁচ বছরে ১ লক্ষ ২৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ২০০ টিরও বেশি প্রকল্প বাস্তবায়িত করা হবে। সরকারি এবং বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে হবে এই সব প্রকল্পগুলি।