প্রতীকী ছবি।
মাঝে সপ্তাহ দুয়েকের ব্যবধান। ভারতীয় রাজনীতির মৌচাকে ফের ঢিল পড়ল মার্কিন মুলুকে প্রকাশিত খবরে!
আমেরিকার প্রথম সারির এক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকের সঙ্গে গোপন আঁতাঁত রয়েছে বিজেপির। ভারতের বিপুল সম্ভাবনাময় অললাইন কেনাকাটার বাজারে টাকা মেটানোর মাধ্যম হয়ে উঠতে চায় ফেসবুকের শাখা হোয়াটসঅ্যাপের এক পরিষেবা। সেই ব্যবসায়িক স্বার্থেই শাসক দলের সঙ্গে গোপন বোঝাপড়ার পথে হাঁটছে মার্ক জ়ুকারবার্গের সংস্থা। মানুষের মনে ঘৃণা ও বিদ্বেষের জন্ম দেওয়া বিজেপি নেতাদের অনেক বক্তব্যই নিজেদের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম থেকে চট করে মুছে দিচ্ছে না তারা।
চলতি মাসের মাঝামাঝি আর এক নামী মার্কিন সংবাদমাধ্যমে ফেসবুকের সঙ্গে শাসক দলের এই ‘মাখামাখির খবর’ সামনে আসার পরেই জ়ুকারবার্গকে চিঠি দিয়েছিল কংগ্রেস। এ দিনও ফের কড়া ভাষায় ফেসবুক কর্ণধারকে চিঠি পাঠিয়েছে তারা। স্পষ্ট জানিয়েছে, নিছক মুনাফার স্বার্থে ভারতের সামাজিক ঐক্যে চিড় ধরানোর অধিকার তাদের নেই। ফেসবুকের ভারতীয় শাখার কর্তারা কেন এবং কী ভাবে শাসক দলের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছেন, তার তদন্ত করার অনুরোধ আগের চিঠিতেই জানিয়েছিল কংগ্রেস। তার পরেও যে ভাবে নতুন তথ্য সামনে এসেছে, ফেসবুকের পাশাপাশি উঠছে হোয়াটসঅ্যাপের নাম, তাতে দ্রুত ওই প্রশ্নের উত্তর চেয়েছে তারা। হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপেরও। উল্লেখ্য, আগের অভিযোগের জবাব দিতে আগামী মাসের গোড়ায় সংশ্লিষ্ট সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সামনে হাজিরা দেওয়ার কথা ফেসবুকের ভারতীয় কর্তাদের। যে কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন কংগ্রেস নেতা শশী তারুর।
অনলাইনে টাকা মেটানোর মাধ্যম হিসেবে ফেসবুক যে এ দেশে ‘হোয়াটসঅ্যাপ-পে’ পরিষেবাকে জনপ্রিয় করতে চায়। সম্প্রতি রিলায়্যান্স জিয়োর অংশীদারি কিনতে মোটা টাকা ঢেলেছে ফেসবুক। বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, এর অন্যতম কারণ হল, ভারতীয় আমলাতন্ত্রের জটিল অলিন্দে কোন পথে হেঁটে দ্রুত নতুন ব্যবসা শুরু করা যায়, তা হাতের তালুর মতো চেনে রিলায়্যান্স।
আমেরিকার টাইম ম্যাগাজ়িনে হোয়াটসঅ্যাপ-বিজেপি আঁতাঁত ফাঁস…। হোয়াটসঅ্যাপের চ্যাট পরিষেবা ব্যবহার করেন প্রায় ৪০ কোটি ভারতীয়। এখন তারা চায় পেমেন্টের (অনলাইনে টাকা মেটানোর) মাধ্যম হতেও। যার জন্য মোদী সরকারের অনুমোদন জরুরি। সেই কারণেই হোয়াটসঅ্যাপের উপরে নিয়ন্ত্রণ রয়েছে বিজেপির।
রাহুল গাঁধী
এখন অনেকের প্রশ্ন, তবে কি অনলাইন পেমেন্টের লোভনীয় বাজারের হাতছানিতেই শাসক দলের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠতার পথে হাঁটছে ফেসবুক? এ নিয়ে নরেন্দ্র মোদীর সরকারকে বিঁধেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী। তাঁর টুইট, “আমেরিকার টাইম ম্যাগাজ়িনে হোয়াটসঅ্যাপ-বিজেপি আঁতাঁত ফাঁস। …হোয়াটসঅ্যাপের চ্যাট পরিষেবা ব্যবহার করেন প্রায় ৪০ কোটি ভারতীয়। এখন তারা চায় পেমেন্টের (অনলাইনে টাকা মেটানোর) মাধ্যম হতেও। যার জন্য মোদী সরকারের অনুমোদন জরুরি। সেই কারণেই হোয়াটসঅ্যাপের উপরে নিয়ন্ত্রণ রয়েছে বিজেপির।”
প্রথম বার প্রকাশিত রিপোর্টে উঠে এসেছিল, ফেসবুকের ভারতীয় কর্তার পারিবারিক সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠতার প্রসঙ্গ। বলা হয়েছিল, সেই খাতিরে ২০১৪ সালে ভোটের প্রচারেও ফেসবুকের থেকে সুবিধা পেয়েছিল বিজেপি। একই কথা ফের বলেছে নতুন রিপোর্টও। তবে তার সঙ্গে তৈরি হয়েছে ব্যবসায়িক স্বার্থের বিপজ্জনক ককটেল। ফলে আরও বেশি করে প্রশ্ন উঠছে, এতগুলি স্বার্থ একসঙ্গে জড়িত থাকলে, কী ভাবে আর শাসক দলের ঘৃণা ছড়ানো বার্তা মুছে ফেলবে ফেসবুক? মিথ্যে প্রচারই বা হোয়াটসঅ্যাপ মারফত হাতবদল হওয়া আটকাবে কী ভাবে?
আগের বার অভিযোগ ওঠার সময়েই বিজেপি কটাক্ষ করেছিল, যে দল নিজের নেতাদেরই নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, তারা তো সর্বত্র বিজেপির নিয়ন্ত্রণের ভূত দেখবেই। কেউ কেউ বলেছিলেন, যে কংগ্রেস ফেসবুকের ফাঁস হওয়া তথ্য কাজে লাগিয়ে জনমত তৈরিতে সচেষ্ট কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার পরিষেবা ব্যবহার করেছিল, তাদের মুখে এ কথা মানায় না। এ বার নতুন অভিযোগ সামনে আসার পরে বিজেপি কী ভাবে তার মোকাবিলা করে, এখন নজর সে দিকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy