ফাইল চিত্র।
আগামী ৭ অগস্ট নীতি আয়োগের পরিচালন পরিষদের বৈঠকে যোগ দিতে নয়াদিল্লি আসার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। রাজনৈতিক সূত্রে এই সম্ভাবনার কথা জানা গিয়েছে।
কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্কের টানাপড়েন, জিএসটি নিয়ে বিবাদের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে ওই বৈঠকটি করবেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কবে দিল্লি আসছেন তা নিয়ে নিশ্চিত হওয়া না গেলেও ৬ তারিখের মধ্যেই তাঁর দিল্লি পৌঁছনোর সম্ভাবনা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তাঁর বাসভবনে মমতার পৃথক বৈঠক হবে কি না, তা এখনও নিশ্চিত নয়। কিন্তু তিনি বৈঠকে যোগ দিলে রাষ্ট্রপতি ভবনে মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ হবে তাঁর।
গত বছর এই পরিষদের ভার্চুয়াল বৈঠকে মমতা যোগ দেননি। তার আগে ২০১৯-এ শেষ বার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীদের মুখোমুখি বৈঠকও মমতা এড়িয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর যুক্তি ছিল, নীতি আয়োগের এই বৈঠকে কাজের কাজ কিছুই হয় না। রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, এ বার যদি মমতা আসেন, তা হলে তাঁর আগের অবস্থান থেকে কিছুটা সরে আসবেন মুখ্যমন্ত্রী।
এর আগে মে মাসে বিচারবিভাগ নিয়ে সম্মেলনে নয়াদিল্লির বিজ্ঞান ভবনে একটি চা-চক্রে মিলিত হয়েছিলেন মোদী ও মমতা। আর গত বছর নভেম্বরে প্রধানমন্ত্রীকে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানাতে মুখ্যমন্ত্রী দিল্লি এসে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন।
রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, পার্থ-কাণ্ড এবং তাতে ইডি-র ভূমিকা নিয়ে যখন পশ্চিমবঙ্গ উত্তাল, তখন আসন্ন মোদী এবং মমতা সাক্ষাৎ হলে তা ভিন্ন তাৎপর্য পাবে। তৃণমূল নেত্রী গত কাল বলেছেন, ‘‘বিচারে আইন যা রায় দেবে, আমাদের দল মেনে নেবে। বিচারে যত চরমই শাস্তি হোক, আমরা কোনও হস্তক্ষেপ করব না। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিলেও আই ডোন্ট মাইন্ড!’’ প্রসঙ্গত, এর আগে অবিজেপি রাজ্যগুলিকে রাজনৈতিক ভাবে চাপে রাখতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে কাজে লাগানো নিয়ে সংসদের ভিতরে ও বাইরে এবং রাজ্যেও মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা গিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্বকে। পার্থ-কাণ্ডের পরে চলতি বাদল অধিবেশনে যদিও ইডি-সিবিআই নিয়ে এখনও পর্যন্ত রা কাড়তে দেখা যায়নি তৃণমূলের লোকসভা এবং রাজ্যসভার সাংসদদের। সব মিলিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই দিল্লির রাজনৈতিক মহলে ঔৎসুক্য তৈরি হয়েছে মোদী এবং মমতার আসন্ন সাক্ষাৎ নিয়ে।
মমতার সম্ভাব্য দিল্লি সফরের সময় কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্কে বেশ কিছু দিক রাজনৈতিক চর্চার মধ্যে রয়েছে। জগদীপ ধনখড় উপরাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী হয়েছেন। এর পরে পশ্চিমবঙ্গে কে রাজ্যপাল হবেন (অস্থায়ী ভাবে দায়িত্বে লা গণেশন) সেই তাস এখনও দেখায়নি কেন্দ্র। পাশাপাশি উপরাষ্ট্রপতি পদে বিরোধী প্রার্থী মার্গারেট আলভাকে সমর্থন করেননি মমতা। এখনও পর্যন্ত উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোটদানে বিরত থাকার সিদ্ধান্তই নিয়েছে তাঁর দল। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে নীতি আয়োগের বৈঠকের আগের দিন অর্থাৎ ৬ তারিখই উপরাষ্ট্রপতি ভোট। ওই দিনই ফলাফল প্রকাশ।
রাজনৈতিক সূত্রের খবর, দিল্লি এলে কিছু বিরোধী নেতার সঙ্গে দেখা করতে পারেন মমতা। তাঁর একটি সাংবাদিক বৈঠক করার প্রস্তুতিও নেওয়া হচ্ছে বলে সূত্রের খবর। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এমন একটি সময়ে তিনি নীতি আয়োগের পরিচালন পরিষদের বৈঠকে আসছেন, যখন পশ্চিমবঙ্গকে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের বকেয়া অর্থ না-দেওয়া নিয়ে আন্দোলন করছে তাঁর দল। মূল্যবৃদ্ধি এবং জিএসটির বিষয় নিয়ে রাজ্যসভায় হট্টগোল করায় এই সপ্তাহের জন্য সাসপেন্ড হয়েছেন তৃণমূলের সাত জন সাংসদ। তৃণমূলের সংসদীয় নেতারা বলছেন, অর্থনৈতিক ভাবে রাজ্যকে ঘেরাও করছে মোদী সরকার। আঘাত করা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে। মুখ্যমন্ত্রী মমতাও একশো দিনের কাজের মতো প্রকল্পে রাজ্যকে বঞ্চনা করে বিজেপি শাসিত রাজ্যকে বাড়তি সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy