Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
BRICS Summit

ব্রিকসের নজর শি-মোদী বৈঠকে, আদৌ হবে কি

দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গ-এ ব্রিকস সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর বক্তৃতায় বলেন, ‘‘ব্রিকস-এর সম্প্রসারণকে পুরোপুরি সমর্থন করে ভারত।”

An image of BRICS

এ বারের ব্রিকস সম্মেলনে আন্তর্জাতিক নজরের কেন্দ্রে রয়েছে ভারত এবং চিন। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০২৩ ০৭:৩৯
Share: Save:

ব্রিকস গোষ্ঠীর সম্প্রসারণকে সমর্থন করে ভারত। কিন্তু সেই সম্প্রসারণ ঘটাতে হবে এই আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর বর্তমান সদস্যদের ঐকমত্যের ভিত্তিতে। আজ দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গ-এ ব্রিকস সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর বক্তৃতায় বলেন, ‘‘ব্রিকস-এর সম্প্রসারণকে পুরোপুরি সমর্থন করে ভারত। এ ব্যাপারে ঐকমত্যের ভিত্তিতে তৈরি হওয়া পদক্ষেপকে আমরা স্বাগত জানাই।’’ একই সঙ্গে মোদী আবেদন জানান জি ২০–তে আফ্রিকান ইউনিয়নকে স্থায়ী সদস্য করার। তাঁর কথায়,‘‘আমি আত্মবিশ্বাসী, ব্রিকসভুক্ত রাষ্ট্রগুলি এ ব্যাপারে আমাদের জি ২০-তে সমর্থন জানাবে।’’

গ্লোবাল সাউথ বা উন্নয়নশীল দেশগুলির হয়ে প্রধানমন্ত্রী গত এক বছর ধরেই স্বর চড়াচ্ছেন। অতিমারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের পর সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হয়েছে এই গ্লোবাল সাউথ, এ কথা তিনি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মঞ্চে বলছেন। আজকের সম্মেলনেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। কিন্তু পাশাপাশি ব্রিকস-কে সম্প্রসারিত করার তত্ত্বে তাঁর ঘোরতর বিরোধ রয়েছে চিনের সঙ্গে। সাউথ ব্লকের আশঙ্কা, চিন ক্রমশ তার ‘বন্ধু’ রাষ্ট্রগুলিকে ব্রিকসভুক্ত করে জি৭ এর প্রতিস্পর্ধী একটি আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী রচনা করবে। সেখানে ভারতের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা এবং তাকে কাজে লাগানোর কোনও ক্ষমতাই থাকবে না। তাই এ ব্যাপারে যেমন এক দিকে সাবধানে পা ফেলতে চাইছে ভারত, অন্য দিকে এমন কোনও বার্তাও দিতে চাইছে না, যাতে মনে হয় নতুন দেশের অন্তর্ভুক্তিতে ভারত বাধাস্বরূপ। পশ্চিম এশিয়ার কিছু বন্ধু দেশ এবং প্রতিবেশী বাংলাদেশের মতো রাষ্ট্র ব্রিকসভুক্ত হওয়ার জন্য আবেদন করেছে। ফলে এই মঞ্চে দাঁড়িয়ে বিষয়টিকে স্বাগত জানানো ছাড়া কোনও উপায় নেই ভারতের।

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে মোদীর আগেই চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ব্রিকস সম্প্রসারণ নিয়ে জোর সওয়াল করেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ব্রিকস পরিবারে আরও দেশকে আমার সদস্যপদ দিতে চাই। যাতে সবার সম্মিলিত প্রজ্ঞা ও প্রয়াসে বিশ্বের প্রশাসন আরও ন্যায্য হয়ে ওঠে এবং সাম্য পায়।’’ তিনিও কার্যত গ্লোবাল সাউথের হয়ে গলা তুলে বলেছেন, উন্নয়নশীল দেশগুলি যে ভাবে ব্রিকস-এ ঢুকতে আগ্রহ এবং উৎসাহ দেখাচ্ছে, তাতে তিনি খুশি।

এ বারের ব্রিকস সম্মেলনে আন্তর্জাতিক নজরের কেন্দ্রে রয়েছে ভারত এবং চিন। দু’দেশের শীর্ষ নেতা একই মঞ্চে রয়েছেন, গ্রুপ ছবিতে অংশ নিয়েছেন (যদিও পাশাপাশি দেখা যায়নি মোদী ও শি-কে), নিজেদের মধ্যে সৌজন্য বিনিময় এবং সামগ্রিক আলোচনায় আদানপ্রদানও করেছেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত শি জিনপিং এবং নরেন্দ্র মোদীকে আলাদা করে পার্শ্ববৈঠকে বসতে দেখা যায়নি। তবে আগামিকাল বিভিন্ন রাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন মোদী। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন পূর্ব লাদাখের বেশ কিছু বিন্দু থেকে লাল ফৌজকে পিছু হঠানোর জন্য ধারাবাহিক ভাবে যদিও বৈঠক চলছে দু’দেশের সামরিক বাহিনীর।

অন্য দিকে, আজ সম্মেলনের গ্রুপ ফটো তোলার সময় প্রধানমন্ত্রী লক্ষ্য করেন মঞ্চে ভারতের পতাকা পড়ে রয়েছে। এর পরে সঙ্গে সঙ্গে সেটি তুলে নিজের কোটের পকেটে ঢুকিয়ে নেন মোদী। যদিও আয়োজকদের দাবি, পতাকাটি মাটিতে পড়ে ছিল না। রাষ্ট্রনেতারা কে কোথায় দাঁড়াবেন, তার অবস্থান বোঝাতে রাখা হয়েছিল। দেখা গিয়েছে, ওই মঞ্চে ভারতের পতাকার পাশেই রাখা ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার জাতীয় পতাকা। যদিও সেটা দেখতে না পেয়ে পা দিয়ে দেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা। এরপর মোদীকে দেখে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্টও নিজের দেশের জাতীয় পতাকা তুলে রাখেন, এরপর তা আয়োজকদের হাতে তুলে দেন।

অন্য বিষয়গুলি:

India-China Conflict PM Narendra Modi Xi Jinping
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy