Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
National News

দখলে থাকা সমস্ত রাজ্যেই সিএএ-বিরোধী প্রস্তাব, জানাল কংগ্রেস

রাজস্থানের অশোক গহলৌত সরকারও আগামী ২৪ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া বিধানসভার বাজেট অধিবেশনে সিএএ-বিরোধী প্রস্তাব পেশ করবে।

ছবি: পিটিআই।

ছবি: পিটিআই।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২০ ১৩:০০
Share: Save:

পঞ্জাবের পর সব কংগ্রেস শাসিত সব রাজ্যে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) বিরোধী প্রস্তাব পাশ করতে চায় দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। সাংবিধানিক ভাবে এই আইনের বিরোধিতা করার যৌক্তিকতা নিয়ে মন্তব্য করে কপিল সিব্বলরা দলের অস্বস্তি বাড়ালেও এ নিয়ে রাজনৈতিক লড়াই আরও জোরদার করতে চায় কংগ্রেস।

রবিবার কংগ্রেস নেতা আহমেদ পটেল জানিয়েছেন, এ নিয়ে ইতিমধ্যেই চিন্তা-ভাবনা শুরু করে দিয়েছেন তাঁরা। তাঁর কথায়, ‘‘পঞ্জাবের পর রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়ের মতো সমস্ত কংগ্রেস শাসিত রাজ্যগুলিতে সিএএ-র বিরোধিতায় প্রস্তাব পাশের চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। যাতে কেন্দ্রকে এই আইন নিয়ে পুর্নবিবেচনা করার বিষয়ে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া যায়।’’

ইতিমধ্যেই কেরল এবং পঞ্জাব বিধানসভায় সিএএ-বিরোধী প্রস্তাব পাশ হয়েছে। গত মাসের শেষে বাম শাসিত কেরলে এই প্রস্তাব পাশের পর দেশের দ্বিতীয় রাজ্য হিসাবে তা পাশ হয় পঞ্জাবে। রাজস্থানের অশোক গহলৌত সরকারও আগামী ২৪ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া বিধানসভার বাজেট অধিবেশনে সিএএ-বিরোধী প্রস্তাব পেশ করবে। রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তীসগঢ়ের মতোই মহারাষ্ট্রেও এ নিয়ে প্রস্তাব পাশের সম্ভাবনা রয়েছে। ওই রাজ্যে শিবসেনা এবং এনসিপি-র সঙ্গে জোট সরকারের শরিক কংগ্রেস এ নিয়ে আলোচনায় যেতে পারে বলেও মনে করছেন অনেকে। যদিও এ নিয়ে প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করেনি কংগ্রেস। তবে গত মাসে দলের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে কংগ্রেস শাসিত রাজ্যগুলিকে সিএএ-সহ জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) এবং জাতীয় জনসংখ্যাপঞ্জি (এনপিআর)-র বিরোধিতা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, বিরোধীদের সঙ্গে বৈঠকেও সিএএ, এনআরসি এবং এনপিআর-এর বিরুদ্ধে আন্দোলন জোরদার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। দলের নেতা আহমেদ পটেলের মন্তব্য, ‘‘যখন এতগুলি রাজ্য বিধানসভায় এই আইনের বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাশ করা হবে, তখন কেন্দ্রের কাছে একটি স্পষ্ট বার্তা যাবে, তা হল এটি গুরুত্ব সহকারে (সিএএ) পুনর্বিবেচনা করা উচিত।’’

আরও পড়ুন: জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণেও লক্ষ্য বিভাজন

আরও পড়ুন: কমছে মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার

সিএএ বিরোধিতায় প্রতিবাদ আরও তীব্র করার কথা বললেও ইতিমধ্যে এ নিয়ে কংগ্রেসকে অস্বস্তিতে ফেলেছেন কপিল সিব্বল, সলমন খুরশিদ বা জয়রাম রমেশের মতো দলের শীর্ষ নেতারা। সিব্বলের মতে, কেন্দ্রের পাশ করা আইন নিয়ে বিরোধিতা করলেও তা সাংবিধানিক ভাবে অমান্য করতে পারে না রাজ্যগুলি। তাঁর কথায়, ‘‘সংসদে পাশ হওয়ার পরে কোনও রাজ্য সিএএ কার্যকর না করার কথা বলতে পারে না। কোনও রাজ্য সেটার বিরোধিতা করতে পারে। বিধানসভায় সেই আইনের বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাশ হতে পারে। কেন্দ্রকে ওই আইন প্রত্যাহার করার কথাও রাজ্য বলতে পারে। কিন্তু কার্যকর করব না, এটা বলাটা অসাংবিধানিক।’’ পরে অবশ্য দলের চাপে নিজের মন্তব্যের ব্যাখ্যা করে সিব্বল জানিয়েছেন যে তিনি মনে করেন সিএএ অসাংবিধানিক। তবে সিব্বলের সুরেই সলমন খুরশিদ বলেছেন, ‘‘সংসদে পাশ হওয়া কোনও আইন মানব না, এটা কোনও রাজ্যের পক্ষে বলাটা সাংবিধানিক ভাবে বলা কঠিন।’’ অন্য দিকে, জয়রাম রমেশ মনে করেন সিএএ বা এনআরসি বিরোধিতায় ফায়দা হতে পারে বিজেপিরই। তাঁর কথায়, ‘‘সিএএ-র মতো ইস্যু নিয়ে সাধারণ মানুষ, পড়ুয়া, রাজনৈতিক দলগুলির স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদের জায়গা রয়েছে। তবে এ সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না যে, সিএএ-র মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে মোদী-শাহ সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের ইস্যুতে পরিণত করতে পারেন।’’ তবে রাজ্যগুলি যতই সিএএ-র বিরোধিতা করুক না কেন, বিচারবিভাগের আচসকাচের নীচে পড়লে তাদের যুক্তি ধোপে টিকবে কি না, তা নিয়েও নিশ্চিত নন জয়রাম রমেশ। তবে দলীয় নেতাদের এই অস্বস্তিকর মন্তব্য সত্ত্বেও সিএএ নিয়ে প্রতিবাদ আরও তীব্র করার কথাই ভাবছে কংগ্রেস।

অন্য বিষয়গুলি:

CAA NRC NPR Congress Ahmed Patel
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE