মাস দুয়েক আগেই মহাকুম্ভের আসরে দেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে যোগী আদিত্যনাথের নাম ঘোষণা করার পরিকল্পনা ছিল বিজেপির, কিন্তু তা থেকে পিছিয়ে আসে তারা— দাবি করলেন সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব। নরেন্দ্র মোদীর পরে দলে প্রধানমন্ত্রীর মুখ কে হবেন, তাই নিয়ে চাপা উত্তেজনা রয়েছে গেরুয়া শিবিরে। মনে করা হচ্ছে, এই কথা বলে সেটাই আরও উস্কে দিতে চেয়েছেন অখিলেশ।
রাজনীতিকদের মতে, চার বছর পরের লোকসভা নির্বাচনে সম্ভবত নতুন কোনও নেতার নেতৃত্বেই লড়বে বিজেপি। মোদীর পরে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন শাসক দলের একাধিক নেতা। মূল লড়াই উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মধ্যে। এ নিয়ে চাপা উত্তেজনাও রয়েছে দুই শিবিরের মধ্যে। এই আবহে যোগীকে প্রধানমন্ত্রী করার কথা বলে দুই শিবিরের বিবাদকে নতুন করে উস্কে দেওয়ার কৌশল নিলেন অখিলেশ, এমনই মনে করা হচ্ছে। আজ অখিলেশ বলেন, ‘‘শুনেছি এই মহাকুম্ভেই যোগীর নাম প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ঘোষণা করার কথা ছিল। ওঁরা কুম্ভকে ধর্মীয় কুম্ভের পরিবর্তে রাজনৈতিক কুম্ভে পরিণত করার চেষ্টা করেছিলেন।’’ এসপি নেতৃত্বের দাবি, কুম্ভে একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটতে থাকায় সেই পরিকল্পনা বাতিল করে গেরুয়া শিবির।
সূত্রের মতে, দু’বছর পরেই উত্তরপ্রদেশ নির্বাচন। ওই নির্বাচনে ক্ষমতা ধরে রেখে তৃতীয় বার উত্তরপ্রদেশের মসনদে বসা যোগীর কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। উল্টো দিকে ক্ষমতায় ফিরতে মরিয়া অখিলেশ। যোগী যদি তৃতীয় বার উত্তরপ্রদেশের মতো বড় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন, সে ক্ষেত্রে ২০২৯-এর লোকসভা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হওয়ার লড়াইয়ে তিনি অনেকটাই এগিয়ে থাকবেন। রাজনীতিকদের মতে, সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই যোগী-শাহের মধ্যে দ্বন্দ্ব উস্কে দিয়ে দলীয় ঐক্য ভাঙার কৌশল নিয়েছেন অখিলেশ। এ প্রসঙ্গে বিজেপির এক নেতা বলেন, ‘‘বিজেপি কাকে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করবে, তা দল ঠিক করবে। এমনও হতে পারে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী সক্রিয় রাজনীতিতে রয়ে গেলেন। ফলে অখিলেশের উচিত বিজেপির অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মাথা না ঘামিয়ে নিজেদের দলের অস্তিত্ব বাঁচানো নিয়ে চিন্তাভাবনা করা।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)