Advertisement
E-Paper

আসরে ডোভাল, প্রশ্ন শাহের পুলিশকে নিয়ে

 নিজামুদ্দিন এলাকায় বাংলেওয়ালি মসজিদ ও নিজামুদ্দিন থানা পাশাপাশি। কার্যত একই দেওয়াল। 

অজিত ডোভালের সঙ্গে মরকজ নিজামউদ্দিনের মওলানার সাক্ষাৎ। ছবি: পিটিআই

অজিত ডোভালের সঙ্গে মরকজ নিজামউদ্দিনের মওলানার সাক্ষাৎ। ছবি: পিটিআই

শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০২০ ০৪:৩৭
Share
Save

গত দেড় দিনে নিজামুদ্দিন এলাকা থেকে ২৩৬১ জনকে করোনাভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কায় ভর্তি করা হয়েছে বিভিন্ন হাসপাতাল বা আইসোলেশন সেন্টারে। এত দিন চুপ করে থেকে লকডাউনের ছ’দিনের মাথায় এই সক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্নের মুখে দিল্লি সরকার। সব জানা সত্ত্বেও ওই জমায়েতে উপস্থিতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না-নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধেও। সম্প্রতি রাজধানীতে গোষ্ঠী সংঘর্ষ থামাতে ব্যর্থ হয়েছিল দিল্লি পুলিশ। এক মাসের মধ্যে নিজামুদ্দিনের ঘটনায় নতুন করে মুখ পুড়ল দিল্লি পুলিশের। প্রশ্নের মুখে অমিত শাহের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের (দিল্লি পুলিশ তাদের আওতায়) ভূমিকাও।

নিজামুদ্দিন এলাকায় বাংলেওয়ালি মসজিদ ও নিজামুদ্দিন থানা পাশাপাশি। কার্যত একই দেওয়াল। তাই পাশের ভবনে ঠাসাঠাসি করে দু’হাজারের বেশি লোক রয়েছেন, সেই বিষয়ে পুলিশের কাছে তথ্য ছিল না, এমন যুক্তি ধোপে টিকছে না। মসজিদ কর্তৃপক্ষের দাবি, কত লোক উপস্থিত হতে পারেন, সেই বিষয়ে সম্পূর্ণ তথ্য তাঁরা জানিয়েছিলেন সংশ্লিষ্ট থানাকে। বিজেপি ও দিল্লি পুলিশের তরফে অবশ্য পাল্টা ভিডিয়ো প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, মসজিদের প্রতিনিধিদের ডেকে লকডাউনের পরে পরেই বৈঠক করা হয়েছিল থানায়। তাতে ভবনটি খালি করে দেওয়ার নির্দেশ দেয় পুলিশ। কিন্তু মসজিদের প্রতিনিধিদলের তরফে জানানো হয়, লকডাউনের ফলে সব কিছু বন্ধ। এই পরিস্থিতিতে অন্য প্রদেশ থেকে আসা লোকেরা কোথায় যাবেন? তখন দিল্লি পুলিশ ওই দলকে স্থানীয় এসডিএমের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলে।

দিল্লি পুলিশের এক অংশের দাবি, জনতা কার্ফুর পরের দিনই ১৮০০ জনের একটি দলকে স্টেশনে পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ট্রেন না-পাওয়ায় ওই দলের অধিকাংশই নিজামুদ্দিন এলাকায় ফিরে আসেন। কিন্তু তার পরেও কেন ব্যবস্থা নেওয়া হল না, সেই জবাব নেই কারও কাছে।

মসজিদ-সহ গোটা এলাকা জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে।—ছবি পিটিআই।

গত শনি-রবিবার তেলঙ্গানায় করোনা সংক্রমণে মৃত ছ’জনের নিজামুদ্দিন-সমাবেশের যোগ পাওয়ার পরে প্রথম নড়েচড়ে বসে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। অভিযোগ উঠেছে, মসজিদ সংলগ্ন আবাসন থেকে ওই দু’হাজার লোককে বুঝিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার প্রশ্নেও ব্যর্থ হয় দিল্লি পুলিশ। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সূত্রের খবর, ‘শীর্ষ পর্যায়ের নির্দেশে’ তখন আসরে নামেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। তাঁর সঙ্গে বৈঠক হয় তবলিগ-ই-জামাতের সঙ্গে যুক্ত পদস্থ কর্তাদের। অবশেষে হাসপাতালে যেতে রাজি হন ওই বাসিন্দারা। খালি করা হয় গোটা মসজিদ। আজ মসজিদ-সহ গোটা এলাকা জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়া।

গত ফেব্রুয়ারি মাসে দিল্লিতে গোষ্ঠী সংঘর্ষ থামাতেও মাঠে নামতে হয়েছিল অজিত ডোভালকে। ফলে সব মিলিয়ে বারংবার প্রশ্নের মুখে পড়ছে দিল্লি পুলিশের দক্ষতা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। কংগ্রেসের কটাক্ষ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক যে আসলে কে চালাচ্ছেন, তা বোঝা যাচ্ছে না। দিল্লি পুলিশ ওই মসজিদের সঙ্গে যুক্ত ধর্মপ্রচারক-সহ ছ’জনের বিরুদ্ধে গত কাল ফৌজদারি অভিযোগ দায়ের করে। পুলিশের আবার দাবি, গত ২৮ মার্চ থেকে ওই ব্যক্তি নিখোঁজ। কংগ্রেস মুখপাত্র জয়বীর শেরগিল আজ বলেন, ‘‘ওই মৌলানা ডোভালের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন বলে শোনা যাচ্ছে। আবার পুলিশ বলছে, তিনি নিখোঁজ। বিষয়টা স্পষ্ট করে জানাক দিল্লি পুলিশ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।’’

প্রসঙ্গত, উত্তরপ্রদেশেও তবলিগ-ই-জামাতের কাজকর্মে যুক্ত ১০০ জন বিদেশির বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে। সব মিলিয়ে ২৩৬ জন বিদেশি সে রাজ্যে কোয়রান্টিনে।

Ajit Doval Markaz Nizamuddin Masjid Delhi Police Amit Shah

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy