ছবি পিটিআই।
রাজধানী দিল্লি এবং সংলগ্ন অঞ্চলে প্রবল বায়ুদূষণ ঠেকানোর রাশ কেন্দ্র নিজের হাতে তুলে নিতেই নড়ে বসেছিল কেন্দ্র সরকার। সুপ্রিম কোর্টে তারা জানিয়েছিল, বিষয়টি নিয়ে খুব শীঘ্রই আইন আনা হবে। আজ এ নিয়ে মামলার শুনানির আগেই দূষণ রোধে একাধিক ব্যবস্থার কথা জানিয়ে একটি অধ্যাদেশ জারি করেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। যাতে সই করেছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।
এর আগে দিল্লির দূষণ ঠেকাতে সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি মদন বি লোকুরের নেতৃত্বে এক সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছিল শীর্ষ আদালত। তার বদলে ২০ জনের বেশি সদস্যকে নিয়ে একটি স্থায়ী কমিটি তৈরির কথা বলা হয়েছে অধ্যাদেশে। দিল্লি ও এনসিআর এলাকায় দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য যাবতীয় পদক্ষেপ করতে পারবে এই কমিটি। নিয়মভঙ্গকারীর ৫ বছর পর্যন্ত জেল এবং ১ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা হবে।
প্রতি বছর শীতকালে প্রবল ধোঁয়াশায় ঢাকা পড়ে দিল্লি। এর মূল কারণ পঞ্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশের মতো লাগোয়া রাজ্যগুলিতে ফসলের গোড়া পোড়ানো। বারবার বলেও এ সমস্যার সমাধান হয়নি। এমনিতেই বায়ুদূষণের কারণে এ দেশে মৃত্যুর হার বিপুল। তার উপর চিন্তা বাড়াচ্ছে আসন্ন শীত এবং করোনা। দূষণ যত বাড়বে, করোনায় মৃত্যুর হার তত বাড়বে বলে ইতিমধ্যেই সতর্ক করেছেন চিকিৎসকেরা। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের নয়া অধ্যাদেশে কতটা কাজ হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে প্রথম থেকেই।
এ দেশে দূষণ ঠেকাতে একাধিক আইন থাকলেও তা কেবল কাগজে-কলমে। তার উপর অবাধে গাছ কাটা, জলাশয় ভরাট পরিস্থিতি আরও খারাপ করেছে। নয়া অধ্যাদেশে জেল-জরিমানার যে কথা বলা হয়েছে, তা নিয়েও সরব অনেকে। তাঁদের প্রশ্ন, চাষিরা কয়েক হাজার টাকা খরচ বাঁচানোর জন্য ফসলের গোড়া পুড়িয়ে দেন। সেখানে তাঁরা অধ্যাদেশ অনুযায়ী এক কোটি টাকা জরিমানা দেবেন কি ভাবে? আর যাঁদের ওই পরিমাণ জরিমানা দেওয়ার ক্ষমতা আছে, তাঁরা কয়েক হাজার টাকা বাঁচানোর জন্য ফসলের গোড়া পোড়াবেন কেন? প্রাক্তন পরিবেশ মন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ এ দিন বলেন, ‘‘দিল্লি সকলের চোখের মণি। তার দিকে সকলেরই নজর রয়েছে। অথচ ২০১০ সালেই জানা গিয়েছিল, দেশের অন্তত ৮৮টি এলাকা প্রবল দূষণের শিকার। তারা কেন বঞ্চিত হবে? গোটা দেশের মানুষেরই বিশুদ্ধ বাতাস পাওয়ার অধিকার রয়েছে।’’ ক’দিন আগেই মোদী সরকারের পরিবেশ মন্ত্রী প্রকাশ জাভরেকর বলেছিলেন, ফসলের গোড়া পোড়ানোর জন্য মাত্র ৪% দূষণ হয়। এ দিন তা নিয়েও মোদী সরকারের পরিবেশ ভাবনাকে কটাক্ষ করেছেন পরিবেশবিদেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy