এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে সহযাত্রীর গায়ে প্রস্রাবের অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। সেই ঘটনার পর থেকে ‘নিখোঁজ’ শঙ্কর মিশ্র। বৃহস্পতিবার তাঁর বিরুদ্ধে লুক আউট সার্কুলার (এলওসি) জারি করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছে দিল্লি পুলিশ। কারণ, দিল্লি পুলিশের একটি সূত্র বলছে, যাঁকে নিয়ে এত হইচই, যাঁর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে, সে ব্যক্তি নিজে থেকে পুলিশের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করছেন না। শুধু তা-ই নয়, তদন্তে সহযোগিতা করতে এগিয়েও আসছেন না।
যাঁকে নিয়ে এত তোলপাড় চলছে, সেই শঙ্কর মিশ্র আদতে কে? পুলিশ প্রাথমিক ভাবে জানতে পেরেছে যে, মুম্বইয়ের বাসিন্দা শঙ্কর। তবে তাঁর আসল বাড়ি উত্তরপ্রদেশে। শঙ্কর আমেরিকার এক বহুজাতিক আর্থিক সংস্থার ভাইস প্রেসিডেন্ট। সংস্থাটির সদর দফতর ক্যালিফর্নিয়ায়। পুলিশের সন্দেহ, গ্রেফতারি এড়াতে উত্তরপ্রদেশে পালিয়েছেন শঙ্কর।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে দিল্লি পুলিশের এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, শঙ্করের মুম্বইয়ের বাড়িতে একটি দল পাঠানো হয়েছিল তাঁর খোঁজে। কিন্তু তাঁর হদিস পাওয়া যায়নি। গ্রেফতারি এড়াতে বার বার অবস্থান বদলাচ্ছেন বলে দাবি ওই পুলিশ আধিকারিকের। যদিও তাঁর খোঁজে তল্লাশি জারি রেখেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন:
অন্য দিকে, বুধবারই শঙ্করের বিরুদ্ধে দিল্লি পুলিশের পালম থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে এয়ার ইন্ডিয়া। শুধু তাই নয়, ৩০ দিন এয়ার ইন্ডিয়ার কোনও বিমানে তিনি সফর করতে পারবেন না বলে জানিয়েছে বিমান সংস্থাটি। শঙ্করের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই ভারতীয় দণ্ডবিধি এবং বিমান সংক্রান্ত আইনে মামলা রুজু হয়েছে। শঙ্করের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৯৪ (জনসমক্ষে অশ্লীল কাজ), ৩৫৪ (মহিলার সঙ্গে অভব্য আচরণ), ৫০৯ (মহিলাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালি, অঙ্গভঙ্গি এবং তাঁর সম্ভ্রমকে অপমান) এবং ৫১০ (মত্ত অবস্থায় জনসমক্ষে দুর্ব্যবহার) ধারায় মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
গত ২৬ নভেম্বর এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমান নিউ ইয়র্ক থেকে দিল্লি আসছিল। সেই বিমানের বিজ়নেস ক্লাসের যাত্রী ছিলেন মিশ্র। অভিযোগ, মত্ত অবস্থায় তাঁর পাশে বসা বছর সত্তরের এক বৃদ্ধার গায়ে প্রস্রাব করে দেন তিনি। এই ঘটনায় তোলপাড় পড়ে যায়। ২৬ নভেম্বর ঘটনাটি ঘটলেও ২৮ ডিসেম্বর বিষয়টি পুলিশকে জানায় বিমান সংস্থাটি। কেন অভিযোগ জানাতে এত দেরি হল, তার ব্যাখ্যা চেয়ে এয়ার ইন্ডিয়াকে নোটিস পাঠিয়েছিল দেশের বিমান নিয়ন্ত্রক সংস্থা (ডিজিসিএ)। বৃহস্পতিবার তার জবাব দিয়েছে এয়ার ইন্ডিয়া।
এয়ার ইন্ডিয়ার সিইও ক্যাম্পবেল উইলসন কর্মীদের বার্তা দিয়েছেন, তাঁরা যেন কোনও রকম অভব্য আচরণ বরদাস্ত না করেন। বিমানে এমন কোনও ঘটনা ঘটলে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত জানাতে হবে। শুধু তা-ই নয়, বিষয়টি যদি মিটমাটও হয়ে যায়, সে ক্ষেত্রেও জানাতে হবে।