Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
West Bengal Assembly Election 2021

বঞ্চনার অভিযোগ তুলে ওয়েইসি লড়বেন বঙ্গে

তৃণমূল সূত্রে দাবি, ওয়েইসির প্রভাব মূলত উর্দুভাষী মুসলিমদের মধ্যে। আর বাংলার মুসলিমদের মাত্র ৬ শতাংশ উর্দুভাষী।

আসাদউদ্দিন ওয়েইসি।— ফাইল চিত্র।

আসাদউদ্দিন ওয়েইসি।— ফাইল চিত্র।

অগ্নি রায়
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২০ ০৩:৪৯
Share: Save:

বিহারের বঙ্গঘেঁষা জেলাগুলিতে মুসলিম ভোট ব্যাঙ্কে ভাগ বসিয়ে পাঁচটি আসন জেতার পর, আসাদুদ্দিন ওয়েইসি-র পরের লক্ষ্য পশ্চিমবঙ্গ। সেখানেও ‘বিজেপি-কে হারানো’র কথা বলে ভোট প্রচার করা হবে বলে দাবি তাঁর দল মজলিস-ই ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এমআইএম)-এর। এই লড়াইয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অন্যান্য বিরোধী দলের জন্যও দরজা খোলা রাখা হবে বলেই আজ জানালেন দলীয় মুখপাত্র। পাশাপাশি তাঁদের অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গে মুসলিমদের ‘বোকা’ বানিয়ে রেখেছে শাসক দল।

তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যালঘু মানুষকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টার পিছনে কারও নির্দিষ্ট স্বার্থ রয়েছে, এটা স্পষ্ট। ওয়েইসি-কে লোকসভায় আমি কাছ থেকে দেখেছি। তাঁর রাজনৈতিক ভূমিকা সম্পর্কে আমি ওয়াকিবহাল।’’ বিহারে আরজেডি এবং কংগ্রেসের মুসলিম ভোটব্যাঙ্কে ওয়েইসি ভাগ বসানোয় রাজ্যের মুসলিম-প্রধান সীমাঞ্চলেই বিজেপি তথা এনডিএ জোট ভাল ফল করেছে। বিরোধীদের অভিযোগ, প্রকারান্তরে বিজেপি-র সুবিধাই তিনি করে দিয়েছেন। প্রশ্ন উঠছে, পশ্চিমবঙ্গেও কি একই পুনরাবৃত্তি ঘটবে না? কারণ, ওয়েইসির দল রাজ্যের বিভিন্ন মুসলিম-প্রধান আসনে লড়াই করলে বিজেপি-বিরোধী মুসলিম ভোট ভাগ হয়ে সুবিধা করে দেবে অমিত শাহদেরই।

পশ্চিমবঙ্গে এমআইএম-এর দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ও মুখপাত্র আসিম ওয়াকারের দাবি, এই অভিযোগ অসত্য। তাঁর কথায়, “পটনায় সাংবাদিক সম্মেলন করে ওয়েইসি জানিয়েছিলেন, তেজস্বী যাদব মুখ্যমন্ত্রী হতে চাইলে আমরা বাধা দেব না। আমরা সঙ্গে থেকে জোট গড়ে লড়তে পারি। কিন্তু তাঁকে আমাদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। কিন্তু তেজস্বী এতটাই অহঙ্কারী যে কথা বলতে আসেননি।“ তাঁর আরও দাবি, “আমরা বিজেপিকে হারাতে চাই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি আমাদের সঙ্গে কথা বলে একসঙ্গে এগোতে চান, দরজা খোলা রয়েছে। দিদিকেই তাঁর পথ বেছে নিতে হবে।’’

আরও পডুন: বিজেপি কর্মী হত্যা নিয়ে সরব মোদী​

ওয়েইসি-র মুখপাত্রের বক্তব্য, “পশ্চিমবঙ্গের ২২টি জেলায় কাজ শুরু করে দিয়েছি। সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে বাইশের বিধানসভা ভোটে ঝাঁপাব আমরা। কেন্দ্রের পাশাপাশি এই রাজ্যের নেতৃত্বও মুসলিমদের ধোঁকা দিয়েছেন। তাঁদের কর্মসংস্থান, সংরক্ষণ, জমি হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার ঘটনা প্রচারের অন্যতম বিষয় হবে।’’এমআইএম সূত্রের বক্তব্য, ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের সময়ে পশ্চিমবঙ্গে লড়াই করার কথা ভাবা হয়েছিল। কিন্তু ওয়েইসি পরে স্থির করেন যে এই ভোটে মমতারই বেশি আসন পাওয়া উচিত মোদীকে শক্তিহীন করার জন্য। কিন্তু মুসলিমদের প্রতি ‘বঞ্চনা’ ক্রমশ বাড়ছে বলেই এ বার লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।

বিহারের ফলাফল স্পষ্ট হওযার পর গতকাল ওয়েইসি বলেছিলেন, “আমরা বাংলায় আসছি। মুর্শিদাবাদ, মালদহ, দিনাজপুরে আসছি। সেখানকার মুসলমানদের ঠিকা নিয়ে রেখেছেন নাকি অধীর চৌধুরী?” এর আগে অধীর ওয়েইসি-কে ‘ভোট কাটুয়া’ বলে অভিহিত করেছিলেন। ওয়েইসি-র কথায়, “বাংলা, উত্তরপ্রদেশ-সহ দেশের সমস্ত নির্বাচনে লড়ব। একমাত্র মৃত্যুই আমাকে থামাতে পারবে। ভোটে দাঁড়ানোর জন্য কারও অনুমতি নিতে হবে না কি? ’’

তৃণমূল সূত্রে দাবি, ওয়েইসির প্রভাব মূলত উর্দুভাষী মুসলিমদের মধ্যে। আর বাংলার মুসলিমদের মাত্র ৬ শতাংশ উর্দুভাষী। বিষয়টি উড়িয়ে দিচ্ছেন ওয়েইসি-র ঘনিষ্ঠ হায়দরাবাদের নেতা এবং দলের বিধান পরিষদের সদস্য সৈয়দ আমিন জাফারি। তাঁর বক্তব্য, “বিষয়টি বাংলা-উর্দুর নয়। সামগ্রিকভাবে মুসলিম সমাজের বঞ্চনার। পশ্চিমবঙ্গের প্রায় প্রতিটি জেলায় আমাদের সংগঠন রয়েছে। সেখান থেকেই নিয়মিত খবর পাই যে সংখ্যালঘু সমাজকে বঞ্চিত করে তাদের বোকা বানিয়ে ভোট কেনা হয়।’’ সুদীপবাবুর কথায়, ‘‘বাংলায় সংখ্যালঘুদের মধ্যে এক দল উর্দুভাষী, অন্য দল বাংলাভাষী। এঁদের কোনও পক্ষেই ওয়েইসি- র কোনও পরিচিতি নেই। সম্প্রীতি এবং সংহতির রাজনীতিতে বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই পথপ্রদর্শক।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy