Advertisement
E-Paper

২ থেকে ৭০ লাখ, ঋণদাতাদের ‘চোখে ধুলো দিতে’ সন্ন্যাসী হলেন ঠিকাদার

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর তিনেক আগে ভোটের আগে ঠিকাদার হিসাবে বেশ কয়েকটি কাজ ধরেছিলেন পার্থ।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০২০ ২০:০৮
Share
Save

ঋণদাতাদের হাত থেকে বাঁচতে গুজরাতের আমদাবাদে সংসারের মায়া ত্যাগ করে ‘সন্ন্যাসী’ হয়ে গেলেন এক ব্যক্তি। পার্থ চুরাসামা, পেশায় এক জন ঠিকাদার। মাসখানেক আগে হঠাৎই নিখোঁজ হয়ে যান তিনি। পুলিশ জানিয়েছে, পার্থর এই নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পিছনে ছিল অন্য গল্প।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর তিনেক আগে ভোটের আগে ঠিকাদার হিসাবে বেশ কয়েকটি কাজ ধরেছিলেন পার্থ। যা টাকা তাঁর হাতে ছিল তা দিয়ে পুরো কাজ শেষ করা সম্ভব হত না। শ্রমিকদের মাইনে দেওয়াও অসম্ভব ছিল। কাজ যখন ধরেছেন, শেষ তো করতেই হবে। তাই এক সুদের ব্যবসায়ী রাজু দেশাইয়ের কাছ থেকে মাসিক ২ শতাংশ হারে ২ লক্ষ টাকা ধার নেন তিনি। চার মাস পর সুদ সমেত ২ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা মেটাতে গেলে রাজু তা নিতে অস্বীকার করেন। উল্টে ৭ লক্ষ টাকা দাবি করেন এবং মাসিক ১০ শতাংশ হারে। টাকা না দিলে ফল ভুগতে হবে বলেও পার্থকে শাসান রাজু। এমনটাই জানিয়েছে পুলিশ।

রাজুর টাকা মেটাতে পার্থ নিজের জমানো সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা তুলে নেন বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। আরও ২ লক্ষ টাকার জন্য ফের আর এক সুদের ব্যবসায়ীর কাছ থেকে মাসিক ১০ শতাংশ হারে টাকা ধার নেন তিনি। রাজুকে ফের টাকা মেটাতে গেলে তিনি দাবি করেন, সুদসমেত সাড়ে ১২ লক্ষ টাকা দিতে হবে। এক দিকে দ্বিতীয় সুদ ব্যবসায়ীর সুদসমেত ৩ লক্ষ টাকা এবং রাজুর সাড়ে ১২ লক্ষ টাকা— আরও ফাঁপড়ে পড়েন পার্থ। এ বার সেই টাকা মেটাতে তৃতীয় সুদ ব্যবসায়ীর দ্বারস্থ হন পার্থ। চারটে ব্ল্যাঙ্ক চেকের বিনিময়ে তাঁর কাছ থেকে ৪ লক্ষ টাকা ধার করেন। ওই চার জনের টাকা মেটাতে আরও দুই ব্যক্তির এক জনের থেকে সাড়ে ৪ লক্ষ এবং অন্য জনের কাছ থেকে সাড়ে ১৩ লক্ষ টাকা ধার নেন। পরে আরও এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ১০ লক্ষ টাকা নেন। এক জনের থেকে ধার নেওয়া টাকা অন্য জনকে মেটাতে গিয়ে ক্রমেই ঋণের জালে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে পড়েন পার্থ। সব হিসেব করে দেখেন মাত্র ২০ লক্ষ টাকা শোধ করতে পেরেছেন। তখনও ৭০ লক্ষ টাকা ধার রয়েছে গিয়েছে। তার উপর আবার সুদ। ২ লক্ষ টাকা থেকে মাত্র তিন বছরে ৭০ লক্ষ টাকা দেনায় ডুবে যান পার্থ।

আরও পড়ুন: সোমবার থেকে মহারাষ্ট্রে খুলে যাচ্ছে মন্দির-সহ সব ধর্মস্থান

পুলিশ জানিয়েছে, কী ভাবে এই টাকা শোধ করবেন তা ভেবেই পাচ্ছিলেন না। শেষে গত ২৫ অক্টোবর ঘরে একটা সুইসাইড নোট লিখে নিঃশব্দে বাড়ি ছাড়েন পার্থ। নর্মদা নদীর ধারে গিয়ে হঠাৎই মত বদলে যায় তাঁর। সেখান থেকে সোজা দিল্লিতে চলে যান। ফুটপাতে দিন কাটাতে শুরু করেন। কয়েক দিন ফুটপাতে থাকার পর বাস ধরে গিরনারে যান। সেখানে এক সন্ন্যাসীর আশ্রয় নেন।

ঋণদাতাদের হাত থেকে বাঁচতে এ ভাবেই সন্ন্যাসী হয়ে আত্মগোপন করবেন ভেবেছিলেন পার্থ। কিন্তু তা আর হয়নি। ওই সন্ন্যাসীরই আস্তানায় যান তাঁর এক ভাই। তখন সেখানে পার্থকে দেখে তিনি ভূত দেখার মতো চমকে ওঠেন। আর পার্থও তাঁর ভাইকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন। ঋণদাতাদের হাত থেকে বাঁচতেই এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে জানান পার্থ।

Ahmedabad Moneylending Contractor

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}