ফাইল চিত্র।
অগ্নিপথ প্রকল্প ঘিরে বিক্ষোভে উত্তাল যুব সমাজের একাংশ। আজ সেই অগ্নিপথ শব্দবন্ধকে কটাক্ষ করে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেন, ‘‘বারংবার চাকরির মিথ্যার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকার যুবকদের বেকারত্বের আগুনের পথ (অগ্নিপথ)-এ চলতে বাধ্য করেছেন। দেশের এই পরিস্থিতির জন্য কেবল দায়ী শুধু প্রধানমন্ত্রীই।’’
আজ রাহুল গান্ধীর ৫২তম জন্মদিন। কালই তিনি দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে এক আবেদনে বলেছিলেন, চাকরির জন্য যখন দেশের যুবকেরা পথে নেমে আন্দোলন করছেন, তখন কোনও ভাবেই যেন তাঁর জন্মদিন পালন করা না হয়। পরিবর্তে দলীয় কর্মীদের সরকারের নীতির বিরুদ্ধে সরব হওয়ার আবেদন জানান তিনি। আজ সেই মতো সকাল থেকেই দিল্লির যন্তরমন্তরে প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরার নেতৃত্বে অবস্থান-বিক্ষোভে সামিল হন কংগ্রেস নেতারা। সেখানে প্রিয়ঙ্কা বলেন, ‘‘ওই প্রকল্প কেবল দেশের যুবকদেরই নয়, সেনাবাহিনীকেও শেষ করে দেবে।’’ তিনি অহিংসার পথে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে সওয়াল করে মোদী সরকারকে ক্ষমতা থেকে উপড়ে ফেলার ডাক দেন। প্রিয়ঙ্কা বলেন, ‘‘সত্যের পথে চলে এই সরকারকে ফেলে দেওয়ার লক্ষ্যে সক্রিয় হতে হবে। এমন একটি সরকার বেছে নিতে হবে, যাদের মধ্যে প্রকৃত দেশাত্মবোধ রয়েছে, যারা দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ সুরক্ষিত রাখতে সক্ষম, যারা গরিব ও যুবসমাজকে সঙ্গে নিয়ে চলতে সক্ষম।’’
আজ দিনভর যন্তরমন্তরে কংগ্রেস নেতারা ধর্না দিলেও অনুপস্থিত ছিলেন রাহুল। আগামিকাল ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় ফের ইডির কাছে হাজিরা দেবেন। সূত্রের মতে, আজ দিনভর তা নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন তিনি। তবে তারই মধ্যে টুইট করে বলেন, ‘‘গত আট বছরে মোদী সরকারের ১৬ কোটি চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ছিল। পরিবর্তে জুটেছে কী ভাবে পকোড়া ভাজতে হয় সেই জ্ঞান! বারংবার চাকরির মিথ্যা স্বপ্ন দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রী দেশের যুবকদের বেকারত্বের অগ্নিপথে হাঁটতে বাধ্য করছেন। আজ দেশের যা পরিস্থিতি তার জন্য কেবল প্রধানমন্ত্রীই দায়ী।’’
যে ভাবে গো-বলয়েরও বিভিন্ন রাজ্যের বেকার যুবকেরা অগ্নিপথ প্রকল্পের বিরুদ্ধে পথে নেমেছেন, তাতে রীতিমতো বেকায়দায় শাসক শিবির। যে ভাবে গোটা দেশ জুড়ে এ নিয়ে উত্তাপ ছড়াচ্ছে, তাতে আগামী দিনে কৃষি আইনের মতোই ওই প্রকল্প প্রত্যাহার করে নিতে হতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বিজেপি শিবিরের একাংশে। দল মনে করছে, বিভিন্ন মন্ত্রকের খালি পদে নিয়োগ কার্যত থমকে রয়েছে। তার মধ্যে সেনাতেও স্থায়ী চাকরি কার্যত বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হওয়ার বার্তা দেশ জুড়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
বর্তমানে ১৪ লক্ষ সেনার বেতন ছাড়াও কয়েক লক্ষ অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মীর পেনশন খরচ বহন করতে হয় সরকারকে। সেই খাতে খরচ কমাতেই অগ্নিবীরদের কাজের সীমা চার বছর রাখা হয়েছে বলে মত প্রাক্তন সেনাকর্তাদের। তবে পেনশনের খরচ কমাতে গিয়ে সরকার ভারতীয় সেনার কাঠামো নিয়েই ছিনিমিনি খেলতে চায় বলে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। কংগ্রেস নেতা সচিন পাইলটের মতে, ‘‘দেশের তরুণ-তরুণীরা কেবল বেতন বা পেনশনের জন্য সেনায় যোগ দেন না। তাঁরা দেশের হয়ে কাজ করার ভাবনা থেকে সেনায় যোগ দিয়ে থাকেন। বর্তমানে সেনায় ১৫ লক্ষ ব্যক্তি রয়েছেন। যদি তাঁদের পেনশন খাতে খরচ কমাতে চায় সরকার, তা হলে অন্যান্য উপায় রয়েছে।’’ এর পর প্রধানমন্ত্রীর নাম করে পাইলটের মন্তব্য, ‘‘আট হাজার কোটির জাহাজ না কিনে বা সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্প নির্মাণের জন্য কয়েক হাজার টাকার কোটি বাজে খরচ বন্ধ করলেই পেনশন খাতে খরচ অনেক কমে যাবে।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy