Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
Love Jihad

বিয়েতে ‘জোর করে’ ধর্মান্তরণ হলে ১০ বছরের জেল চায় মধ্যপ্রদেশও

উত্তরপ্রদেশে যোগী আদিত্যনাথের সরকার ধর্মান্তরণ প্রতিরোধী আইন পাশ করে, চলতি ভাষায় যা ‘লাভ জিহাদ’ আইন নামে পরিচিত।

অলঙ্করণ: শৌভিক দেবনাথ।

অলঙ্করণ: শৌভিক দেবনাথ।

সংবাদ সংস্থা
ভোপাল শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২০ ১৩:২৩
Share: Save:

বিয়ের নামে জোর করে ধর্মান্তরণের বিরুদ্ধে আইন আনায় এ বার অনুমোদন দিল মধ্যপ্রদেশের মন্ত্রিসভা। মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানের নেতৃত্বে শনিবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠক বসে। সেখানে মধ্যপ্রদেশ ধর্ম স্বতন্ত্র (ফ্রিডম অব রিলিজিয়ন) বিল ২০২০ পেশ হলে, ধ্বনিভোটে সেটি পাশ হয়ে যায়। চলতি মাসের শেষেই রাজ্য বিধানসভায় বিলটি তোলা হবে। সেখানেও যদি সেটি পাশ হয়ে যায়, সে ক্ষেত্রে রাজ্যপাল আনন্দীবেন পটেলের বিলটিতে সই করার ঔপচারিকতাই বাকি থাকে। তা হলেই সেটি আইনে পরিণত হবে। প্রসঙ্গত মধ্যপ্রদেশ বিধানসভায় মোট ২৩০ আসনের ১৩০টিই বিজেপি-র দখলে।

ওই বিলটি আইনে পরিণত হলে, নাবালিকা অথবা নিম্নবর্গের মহিলাদের জোর করে ধর্মান্তরণের অভিযোগ যদি প্রমাণ হয়, সে ক্ষেত্রে দোষীদের ২ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত সাজা হতে পারে। জরিমানা হতে পারে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। বিলটি পাশ হয়ে যাওয়ার পর রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নরোত্তম মিশ্র সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেন, ‘‘নতুন ধর্ম স্বতন্ত্র বিল ২০২০-র আওতায় নাবালিকা, কোনও মহিলা অথবা তফসিলি জাতি ও উপজাতির কাউকে জোর করে ধর্মান্তরণে বাধ্য করা হলে ২ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত সাজা হবে। জরিমানা দিতে হবে কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকা।’’

মহিলা ছাড়া অন্য যে কাউকে জোর করে ধর্মান্তরিত করার অভিযোগ প্রমাণ হলে ১ থেকে ৫ বছরের সাজা এবং কমপক্ষে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে বলেও জানান নরোত্তম। আর বিয়ের পর স্বেচ্ছায় যদি কেউ ধর্মান্তরণে আগ্রহী হন, তা হলে দু’মাস আগে নোটিস দেওয়া বাধ্যতামূলক। অন্যথায় নয়া আইনের আওতায় ওই বিয়ে বাতিল এবং অকার্যকর বলে ধরা হবে। যে মহিলা ধর্মান্তরিত হবেন, যাঁদের সঙ্গে তাঁর রক্তের সম্পর্ক রয়েছে তাঁরা তো বটেই, আত্মীয়রাও এ নিয়ে অভিযোগ জানাতে পারেন প্রশাসনের কাছে।

আরও পড়ুন: আর্থিক বৃদ্ধিতে আমেরিকাকে টপকে ১ নম্বরে চিন! তিনে উঠে আসতে পারে ভারত​

বিয়ের নামে ধর্মান্তরণ বন্ধ করার লক্ষ্য নিয়ে সম্প্রতি বিশেষ আইন আনতে উদ্যোগী হয় মধ্যপ্রদেশ সরকার। এ মাসের শুরুতে তা নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকও করেন শিবরাজ। তিনি জানান, বিয়ের নামে জোর করে ধর্মান্তরণ কোনও ভাবেই বরদাস্ত করবেন না তাঁরা। তার পরই এ দিন মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিলটি তোলা হয়। বিধানসভায় সেটি যদি পাশ হয়ে যায় এবং রাজ্যপাল যদি সই করে দেন, সে ক্ষেত্রে ১৯৬৮ সালের ধর্মীয় স্বাধীনতা আইনের পরিবর্তে নয়া আইনটি কার্যকর হবে।

এর আগে, উত্তরপ্রদেশে যোগী আদিত্যনাথের সরকার ধর্মান্তরণ প্রতিরোধী আইন পাশ করে, চলতি ভাষায় যা ‘লাভ জিহাদ’ আইন নামে পরিচিত। ভিন্ ধর্মে বিবাহের ক্ষেত্রে গোটা দেশে এই আইন কার্যকর করার সপক্ষে দীর্ঘ দিন ধরেই সওয়াল করে আসছে দক্ষিণপন্থী হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি। যোগী নিজেও তা নিয়ে সরব ছিলেন। তবে হিন্দু ধর্মের মেয়েদের অন্য ধর্মে বিয়ে নিয়েই মূলত আপত্তি তাঁদের। অন্য ধর্মের মেয়ের সঙ্গে হিন্দু ছেলের বিয়ে নিয়ে এ ধরনের আইনের পক্ষে সওয়াল করতে দেখা যায়নি তাঁদের।

যোগী সরকার এই আইন কার্যকর করার পর, হরিয়ানার মনোহরলাল খট্টার সরকারও ‘লাভ জিহাদ’ আইন কার্যকর করতে উঠেপড়ে লেগেছে। এই সংক্রান্ত নিয়ম নির্ধারণে বিশেষ কমিটিও ইতিমধ্যেই গড়ে ফেলেছে তারা। মধ্যপ্রদেশের হাত ধরে সেই তালিকায় আরও একটি বিজেপি শাসিত রাজ্য ‘ল ভ জিহাদ’ আইন কার্যকর করার দিকে এগলো।

আরও পড়ুন: আজ বৈঠক কৃষক সংগঠনগুলির, সরকারের প্রস্তাবে সাড়া দেওয়া নিয়ে জল্পনা​

এই মুহূর্তে দেশের ১৭টি রাজ্যে একক ভাবে এবং জোট সরকারের অংশ হিসেবে ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। আগামী দিনে এই সব রাজ্যগুলিতেই ‘লাভ জিহাদ’ আইন কার্যকর করতে গেরুয়া শিবির উদ্যোগী হয় কি না, তা-ই এখন দেখার।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE