শুধু রাহুল গান্ধী নন। ‘আপত্তিকর মন্তব্য’ করার দায়ে সাংসদ পদ খারিজ হতে পারে আর এক বিরোধী সাংসদের। তবে এই সাংসদ কংগ্রেস এবং লোকসভার সদস্য নন। শিবসেনা (উদ্ধব ঠাকরে)-র রাজ্যসভার সাংসদ। তিনি সঞ্জয় রাউত। উদ্ধবের ঘনিষ্ঠ এই শিবসৈনিকের বিরুদ্ধে স্বাধিকারভঙ্গের প্রস্তাব পাস করিয়েছে মহারাষ্ট্র বিধানসভা। সেই প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়ের কাছেও। সেখানেও রাউতের বিরুদ্ধে এই প্রস্তাব পাশ হলে সাংসদ পদ হারাবেন তিনি। রাজ্যসভা তাঁর বিরুদ্ধে আরও কড়া কোনও পদক্ষেপ করতেও পারে।
কিছু দিন আগে মহারাষ্ট্র বিধানসভায় শাসকদলের সদস্যদের ‘চোরের দল’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন রাউত। ‘চোর মণ্ডল’ বলে সম্বোধন করেছিলেন তাঁদের। মহারাষ্ট্রের শাসনক্ষমতায় থাকা শিবসেনা এবং বিজেপির জোট সরকার রাউতের এই মন্তব্য নিয়ে স্পিকার রাহুল নারভেকারের কাছে অভিযোগ জানায়। অভিযোগপত্রে বলা হয়, নির্বাচিত বিধায়কদের চোর বলে সম্বোধন করে বিধানসভারই অপমান করেছেন রাউত। স্পিকার এই প্রসঙ্গে বলেন, নিরপেক্ষ বিচারের স্বার্থে এই বিষয়ে সঞ্জয় রাউতের বক্তব্য জানতে চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছিল। প্রথমে তিনি জবাব দিতে যথেষ্ট সময় দেন। তারপর লিখিত আকারে যে জবাব পাঠান, তা মোটেও সন্তোষজনক নয়। আমরা তাঁর বিরুদ্ধে আনা স্বাধিকারভঙ্গের প্রস্তাব রাজ্যসভায় পাঠাচ্ছি। সংসদের উচ্চকক্ষই এ বার পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণ করবে।”
আরও পড়ুন:
রাউত নিজেও তাঁর বিরুদ্ধে আনা প্রস্তাবের কথা স্বীকার করে বলেছেন, “আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত হচ্ছে।” রাহুলের মতো রাউতও জানিয়েছেন যে, এ সবে তিনি ভয় পাচ্ছেন না। নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যায় রাউত জানান, তিনি গোটা বিধানসভাকে ‘চোর’ বলে অপমান করেননি। শুধু উদ্ধবের নেতৃত্বাধীন সাবেক শিবসেনাকে ছেড়ে যে ৪০ জন বিধায়ক একনাথ শিন্ডের শিবিরে চলে গিয়ে নতুন গোষ্ঠী তৈরি করেন, তাঁদের উদ্দেশেই ওই সম্বোধন ব্যবহার করেছেন। তিনি যে তাঁর এই মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইবেন না, তা-ও স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি। মোদী পদবী নিয়ে ‘আপত্তিকর’ মন্তব্যের জেরে গুজরাতের সুরত জেলা আদালতে রাহুলকে দু’বছরের সাজা দেওয়ার কথা শোনায়। তার পর দিনই লোকসভার সচিবালয়ের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, স্পিকার ওম বিড়লা ওয়েনাড়ের সাংসদের সদস্যপদ খারিজ করেছেন। আইন অনুযায়ী, যে কোনও সাংসদ বা বিধায়ক কোনও নির্দিষ্ট মামলায় আদালতে দোষী সাব্যস্ত হলে এবং তাঁর দুই বা ততোধিক বছরের সাজা হলে তৎক্ষণাৎ সাংসদ বা বিধায়ক পদ খারিজ হয়ে যায়।