আশিস ও সন্ধ্যা। ফেসবুক থেকে
যোরহাটের রৌরিয়ার বায়ুসেনা বিমানঘাঁটির রানওয়েতে ওড়ার জন্য তৈরি আন্তোনভ এএন-৩২ বিমানটি। গন্তব্য অরুণাচলের মেচুকা। মেরেকেটে মিনিট চল্লিশের রাস্তা। ককপিটে বসে ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট আশিস তানোয়ার। ১২টা ২৬ মিনিটে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল থেকে টেক অফের সবুজ সঙ্কেত দিলেন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট সন্ধ্যা সোলাঙ্কি।
লিভার সামনে ঠেললেন ক্যাপ্টেন আশিস। হরিয়ানার আশিসের সঙ্গে গত বছরই বিয়ে হয়েছিল মথুরার মেয়ে সন্ধ্যার। সম্প্রতি তাইল্যান্ডে ছুটি কাটিয়ে ২৬ মে ফের কাজে যোগ দেন
স্বামী-স্ত্রী। স্বামীর হাতে ককপিটের ভার, স্ত্রী সামলাচ্ছেন এটিসি। স্ত্রীর নির্দেশ পেলে তবেই ডানা মেলতে পারেন আশিস—এ নিয়ে সহকর্মীরা ঠাট্টাও কম করেনি। কিন্তু ৩ জুন, বেলা ১২টা ২৭ মিনিটে যে শেষ বারের মতো স্বামীর উড়ানে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছেন তিনি, ভাবতে পারছেন না সন্ধ্যা। সেই ছবিটা মনে পড়লেই সংজ্ঞা হারাচ্ছেন এখনও।
দু’দিন পার হয়ে গিয়েছে। এখনও খোঁজ মেলেনি অরুণাচলের সিয়াংয়ের আকাশে হারিয়ে যাওয়া বায়ুসেনার বিমানটি। সকলেই ধরে নিচ্ছেন, দুই চালক আশিস তানোয়ার ও ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মোহিত গর্গ, ৬ জন ক্রু সদস্য ও পাঁচ জন এয়ারম্যানের বেঁচে ফেরার আশা আর নেই। নৌসেনার পি৮আই, সি-১৩০জে, এএন-৩২, এমআই-১৭ ও ধ্রুব কপ্টার, সুখোই-৩০ এমকেআই— সম্ভাব্য সব কিছুই ব্যবহার করা হচ্ছে তল্লাশিতে। তবে এখনও কোথাও মেলেনি ধ্বংসাবশেষ।
স্বামী আশিসকে দেওয়া শেষ সংকেত যে তাঁর হাত থেকে এসেছে, সে কথা মনে পড়লেই কেঁপে উঠছেন সন্ধ্যা। তবে এখনও আশা ছাড়েননি তিনি। ছুটি কাটিয়ে আসার পরে সোশ্যাল মিডিয়া এই ‘হ্যাপি কাপল’-এর ছবিতে ভরে উঠেছিল। হাসিখুশি দম্পতির সঙ্গে অসম ও অরুণাচলেরও অনেকেরই বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। তাই আশিসদের মঙ্গল কামনায় প্রার্থনা চলছে সর্বত্র।
বিমানের সহকারী চালক ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মোহিতেরও বিয়ে হয়েছে গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে।
স্ত্রী আদতে জালন্ধরের মেয়ে। এখন যোরহাটেরই বাসিন্দা। স্থানীয় ব্যাঙ্কে কাজ করেন। মোহিত বরাবরই বিমানবাহিনীতে যোগ দিতে চেয়েছিলেন। এনডিএ থেকে ভাল ফল করার পরে পুণেতে বিমান চালনার প্রশিক্ষণ নিয়ে যোরহাটে বায়ুসেনার কমিশনড অফিসার হিসেবে কাজে যোগ দেন তিনি। বিমান নিখোঁজ হওয়ার খবর পেয়ে তাঁর বাবা সুরেন্দ্র গর্গ ও কাকা ঋষি গর্গ যোরহাটে
চলে এসেছেন।
বিমানে থাকা সাত জনের নাম আজ বায়ুসেনা সূত্রে প্রকাশ করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে আশিস ও মোহিত ছাড়া রয়েছেন উইং কম্যান্ডার জি এম চার্লস, স্কোয়াড্রন লিডার এইচ বিনোদ, উইং অফিসার কে কে মিশ্র, ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট সুমিত মহান্তি এবং ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট রাজেশ কপা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy