বৈঠকে গরহাজির রইলেন অনেকেই। ছবি টুইটার
‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ নিয়ে সর্বদল বৈঠক ডেকেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু সেই বৈঠকে যোগ দিল না কংগ্রেস, তৃণমূল, সমাজবাদী পার্টি (এসপি), বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি) এবং দ্রাবিড় মুন্নেত্রা কাঝগম (ডিএমকে)। বৈঠকে যাবেন না বলে মঙ্গলবারই জানিয়ে দিয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন তাঁর পথ অনুসরণ করেন উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিএসপি নেত্রী মায়াবতীও। ইভিএম নিয়ে কথা হলে যদিও বা যেতেন, কিন্তু মোদী এই বৈঠকে যাওয়ার কোনও অভিপ্রায় তাঁর নেই বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।
কংগ্রেস বৈঠকে যোগ দেবে না বলে এ দিন সংসদে ঢোকার মুখেই সংবাদমাধ্যমকে জানিয়ে দেন দলের সাংসদ গৌরব গগৈ। আগেই বৈঠক বয়কট করেছিলেন ডিএমকে নেতা এমকে স্ট্যালিন। এনসিপি নেতা শরদ পওয়ারও বৈঠকে যাবেন না বলে জানা যায়। তবে নিজেরা না গেলেও, বৈঠকে প্রতিনিধি পাঠিয়েছেন কে চন্দ্রশেখর রাও, অরবিন্দ কেজরীবাল এবং চন্দ্রবাবু নায়ডুরা। বৈঠকে যোগ দেন বাম নেতারাও।
বৈঠকে না যাওয়া নিয়ে এ দিন টুইটারে মায়াবতী জানান, ‘গণতান্ত্রিক দেশে নির্বাচন কখনও বড় সমস্যা হতে পারে না। খরচের দোহাই দিয়ে সেটাকে সমস্যা বলে তুলে ধরাও ঠিক নয়। দেশ জুড়ে যখন দারিদ্র, মুদ্রাস্ফীতি, বেকারত্ব এবং হিংসার ঘটনা উত্তরোত্তর বেড়ে চলেছে, সেইসময় মানুষের নজর ঘোরাতেই এই এক দেশ, এক নির্বাচন বৈঠক ডাকা হয়েছে।’
बैलेट पेपर के बजाए ईवीएम के माध्यम से चुनाव की सरकारी जिद से देश के लोकतंत्र व संविधान को असली खतरे का सामना है। ईवीएम के प्रति जनता का विश्वास चिन्ताजनक स्तर तक घट गया है। ऐसे में इस घातक समस्या पर विचार करने हेतु अगर आज की बैठक बुलाई गई होती तो मैं अवश्य ही उसमें शामिल होती।
— Mayawati (@Mayawati) June 19, 2019
আরও পড়ুন: তোলাবাজির টাকা ফেরত দিতে দলের নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দিলেন তৃণমূল নেত্রী
মায়াবতী আরও বলেন, ‘ব্যালট পেপারের বদলে ইভিএম-এর মাধ্যমে ভোট করানোর জেদ ধরে বসে রয়েছে সরকার, যা গণতান্ত্রিক দেশ এবং দেশের সংবিধানের পক্ষে সবচেয়ে বিপজ্জনক। ইভিএম-এর উপরে আর তেমন আস্থা নেই মানুষের। তা নিয়ে আলাপ-আলোচনা করতে যদি বৈঠক ডাকা হত, অবশ্যই যেতাম আমি।’’
অসমের কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ বলেন, ‘‘যতদূর জানি, আমাদের দলও বৈঠকে যাচ্ছে না।’’
তবে মোদীর সর্বদল বৈঠকে যাবেন না বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই সর্বপ্রথম ঘোষণা করেন। গত কাল দুপুরে সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশীকে উপস্থিত না থাকতে পারার কারণ জানিয়ে চিঠি পাঠান তিনি। তাতে লেখেন, ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’-এর মতো একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে ঠিক মতো আলোচনা করা এত কম সময়ের নোটিসে সম্ভব নয়। মমতার ব্যাখ্যা, এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে হলে সংবিধান বিশেষজ্ঞ, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ এবং দলের সদস্যদের সঙ্গে আগে কথা বলা দরকার। দেশের সংসদ বিষয়ক মন্ত্রীকে তৃণমূল চেয়ারপার্সন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরামর্শ, ‘‘এই বিষয়টি নিয়ে একটি শ্বেতপত্র তৈরি করুন এবং তা সব রাজনৈতিক দলকে দিন। সময় দিয়ে এ বিষয়ে তাদের মতামত জানতে চান।’’
আরও পড়ুন: পুলিশি হয়রানির অভিযোগ প্রাক্তন মিস ইন্ডিয়ার, ডিসির নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গড়ল লালবাজার
মমতা চিঠিতে আরও লেখেন, ‘‘আমরা ১৫ জুন নীতি আয়োগের বৈঠকেই এ ব্যাপারে আমাদের মত জানিয়েছিলাম। যে কোনও রাজ্যের কয়েকটি জেলাকে পিছিয়ে পড়া হিসেবে দাগিয়ে দেওয়া নিয়ে আমাদের আপত্তি রয়েছে। এতে রাজ্যের সমস্ত জেলাগুলির সুষম বিকাশের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়। আমাদের রাজ্য সমস্ত জেলার সুষম আর্থিক এবং সামাজিক বিকাশের প্রশ্নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’’
তৃণমূল সূত্রে খবর, দু’টি বিষয়ে ক্ষুব্ধ হয়েছেন মমতা। প্রথমত, প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক হবে কিন্তু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠাচ্ছেন সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী। বিষয়টি অসম্মানজনক বলেই মনে করছেন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। দ্বিতীয়ত, শেষ মুহূর্তে চিঠি দিয়ে ডাকার পিছনে তলব করার প্রচ্ছন্ন মানসিকতা রয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
এর আগেও, একাধিকবার মোদীকে এড়িয়ে গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র প্রভাবে বাংলায় কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং কী ধরনের সাহায্য রাজ্যের প্রয়োজন, সে সব নিয়ে আলোচনার জন্য ভোট চলাকালীনই ফোনে মমতার সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন মোদী। কিন্তু রাজি হনন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। মোদীর শপথগ্রহণেও যাবেন না বলে প্রথমে জানিয়ে দিয়েছিলেন। পরে যদিও মত বদলান তিনি।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy