প্রমাণ খুঁজতে তৎপর দিল্লি পুলিশ। ছবি: পিটিআই ।
ক্রমশই বাড়ছে শ্রদ্ধা হত্যাকাণ্ডের জট। পুলিশের কাছেও আসছে নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জ। তদন্তে নামার পর এখনও বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর রয়ে গিয়েছে অধরাই। এই প্রশ্নের উত্তর না মিললে তদন্ত সম্পূর্ণ হবে না বলেই মনে করছে দিল্লি পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে শ্রদ্ধা ওয়ালকারের দেহ ৩৫ টুকরো করা হয়েছিল, সেই অস্ত্র এখনও খুঁজে পায়নি দিল্লি পুলিশের তদন্তকারী দল। দিল্লি পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, “শ্রদ্ধাকে গলা টিপে খুনের পর আফতাব একটি করাত কিনে আনেন। দেহ কাটার পর তিনি ওই করাত দূরে কোথাও ফেলে দিয়ে আসেন। রক্তমাখা জামাকাপড় ফেলে দিয়ে এসেছিলেন একটি আবর্জনা সংগ্রহের ভ্যানে।’’
এখনও পাওয়া যায়নি শ্রদ্ধার শরীরের টুকরো করা সব অংশগুলি। ৩৫ টুকরোর মধ্যে ১৩ টুকরো পাওয়া গিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। সূত্র অনুযায়ী, পুলিশ মেহরৌলির ওই জঙ্গল থেকে কিছু হাড় উদ্ধার করেছে। তবে, এখনও মাথা, ধড় বা শরীরের অনেক অংশ খুঁজে পাওয়া যায়নি, যা শ্রদ্ধাকে সনাক্ত করতে পারবে।
উদ্ধার হওয়া টুকরোগুলি শ্রদ্ধার দেহেরই অংশ কি না, তা জানতে ইতিমধ্যেই ফরেন্সিক পরীক্ষা চলছে। তবে বাকি টুকরোগুলি না পেলে তদন্ত করতে গিয়ে কিছুটা হোঁচট খেতে হতে পারে বলেও পুলিশ মনে করছে।
এ ছাড়াও পুলিশের অনেক সিসিটিভি ফুটেজ এখনও খতিয়ে দেখা বাকি। সব সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া যাবে না বলেও পুলিশের অনুমান।
দিল্লি পুলিশের ঊর্ধ্বতন এক আধিকারিক সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, যে প্রমাণ উদ্ধারের জন্য একাধিক তদন্ত দল মোতায়েন করা হয়েছে। এই মুহূর্তে, এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তের একটি বড় অংশ কেবল অভিযুক্ত আফতাবের স্বীকারোক্তির উপর নির্ভর করছে বলেও ওই পুলিশ কর্তা জানিয়েছেন। তিনি এ-ও স্বীকার করেছেন যে, ছ’মাস আগে খুনের ঘটনাটি ঘটায় প্রমাণ উদ্ধারে পুলিশ বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি এসে দাঁড়িয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের সময় আফতাবের উল্লেখ করা স্থানগুলিতে গিয়েও তদন্তকারী দল বিশেষ কিছু প্রমাণ উদ্ধার করতে পারেনি। তদন্তকারীরা সন্দেহ করছেন, পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে ভুল বয়ান দিচ্ছেন আফতাব।
প্রসঙ্গত, ছ’মাস আগে ১৮ মে দিল্লির মেহরৌলিতে একত্রবাসে থাকা প্রেমিকাকে খুন করেন তাঁরই প্রেমিক আফতাব আমিন পুনাওয়ালা। এর পর এক বিদেশি ওয়েব সিরিজ দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি শ্রদ্ধার মৃতদেহ ৩৫ টুকরো করে ফেলেন। সেই মৃতদেহ সংরক্ষণ করে রাখতে কেনা হয়েছিল নতুন ফ্রিজও। এর পর ১৮ দিন ধরে ছতরপুর ছিটমহলের জঙ্গলের বিভিন্ন জায়গায় শ্রদ্ধার দেহের টুকরোগুলি ছড়িয়ে দিয়ে আসেন আফতাব। সন্দেহ এড়াতে আফতাব রোজ রাত ২টো নাগাদ একটি পলিব্যাগে করে দেহের টুকরো নিয়ে বাড়ি থেকে বার হতেন বলে পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে।
শ্রদ্ধার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে দিল্লি পুলিশ শনিবার আফতাবকে গ্রেফতার করেছে। সেই নিয়েই চলছে তদন্ত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy