ছবি: সংগৃহীত।
শুধু ট্রেন নয়, বাতাসের বাধা কাটাতে জম্মু কাশ্মীরের উধমপুর-শ্রীনগর-বারামুলা রেল লিঙ্ক প্রকল্পের চেনাব এবং অঞ্জি খাদ সেতুতেও কাজে লাগছে এরোডায়নামিক (যে নিয়ম মেনে হাওয়ার বাধা কাটিয়ে বিমান ওড়ে) বৈশিষ্ট্য। রেল সূত্রের খবর, দু’পাশে খাড়া পাহাড়ের মাঝখানে গভীর গিরিখাতে ওই দুই সেতু তৈরি হয়েছে। বাতাসের ধাক্কার হাত থেকে সেগুলিকে নিরাপদ রাখতে সেতুর গায়ে বিশেষ পাত বসাতে হয়েছে। হাওয়ার গতিবেগ মাপতে বসানো হয়েছে একাধিক ‘সেন্সর’। রেলকর্তাদের বক্তব্য, ঝোড়ো বাতাসের গতি একটি নির্দিষ্ট সীমা অতিক্রম করলেই স্বয়ংক্রিয় উপায়ে দু’প্রান্তের সিগন্যাল লাল হয়ে গিয়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখার সঙ্কেত দেবে।
জম্মু-কাশ্মীরের পীরপঞ্জাল পর্বতশ্রেণির উপত্যকা বেয়ে নেমে এসেছে চন্দ্রভাগা বা চেনাব নদী। ওই নদীর ঊর্ধ্ব অববাহিকায় নির্মিত চেনাব সেতুর পাটাতনের উচ্চতা ৩৫৯ মিটার, যা প্রায় ১২০ তলা বাড়ির সমান। অত উঁচুতে গিরিখাতের পরিসরে বাতাসের গতিবেগ অত্যন্ত বেশি হয় বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের বক্তব্য, চেনাব সেতুর ক্ষেত্রে ওই অংশে ঘণ্টায় ২০০-২৩০ কিলোমিটার গতিতে ঝড় বয়ে যাওয়ারও নজিরও আছে। তাই এমন ভাবে সেতুটি তৈরি হয়েছে যাতে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২৬৬ কিলোমিটার গতিতে ঝড়েও ক্ষতি না হয়। তবে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার হলেই ট্রেন চলাচল সিগন্যাল স্বয়ংক্রিয় ভাবে লাল হয়ে যাবে। সেতুর পাটাতন যাতে বাতাসের ধাক্কায় ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তার জন্য দু’পাশ ইস্পাতের পাত দিয়ে মুড়ে দেওয়া হয়েছে। সেই কাজ এমন ভাবে করা হয়েছে যাতে বাতাস পাতে ধাক্কা খেয়ে দু’ভাগ হয়ে গিয়ে সেতুর উপর এবং তলা দিয়ে পেরিয়ে যাবে।
রেল সূত্রের খবর, মাইনাস ১০ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা সইতে পারবে। গরমে সর্বোচ্চ ২৫০ মিলিমিটার পর্যন্ত প্রসারণ হতে পারে ধরে নিয়ে সেতুর বাক্কাল প্রান্তে ৪০০ মিলিমিটার পরিসর ফাঁকা রাখা আছে। এই সেতুর নকশার ক্ষেত্রে ফিনল্যান্ড এবং জার্মানির সংস্থার সাহায্য নেওয়া হয়েছে।
চেনাব সেতু থেকে অল্প দূরত্বে অঞ্জি সেতুর স্তম্ভের শীর্ষ নদীখাত থেকে প্রায় ৩৩১ মিটার উচ্চতায় রয়েছে। ভারতের একমাত্র ঝুলন্ত রেলসেতুর পাটাতন প্রায় ১৩৫ মিটার গভীর গিরিখাতের উপর দিয়ে গিয়েছে। রেলের খবর, ইটালির সংস্থার তৈরি নকশার উপর ভিত্তি করে নির্মিত ওই সেতু সর্বোচ্চ ঘণ্টায় ২১৩ কিলোমিটার পর্যন্ত বাতাসের গতি অক্ষত অবস্থায় সইতে পারবে। মোট ৯৬টি কেবলের সাহায্যে ঝুলন্ত ৪৭৩ মিটার দীর্ঘ সেতুর উপর দিয়ে সর্বোচ্চ ৯০ কিলোমিটার গতিতে বাতাস বইতে শুরু করলে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থায় ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে। বাতাসের গতি মাপতে ওই সেতুতে শ’দুয়েক সেন্সর বসানো হয়েছে। হাওয়ার বাধা কাটাতে সেতুর দু’পাশে বিমানের সামনের অংশের আদলে বিশেষ পাত বসানো হয়েছে, যাতে ঝোড়ো বাতাস সেতুতে ধাক্কা দিয়ে তার ক্ষতি করতে না পারে। দু’টি সেতুর ক্ষেত্রেই কন্ট্রোল রুম থেকে দিনরাত নজরদারির ব্যবস্থাও থাকছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy