মোহন ভাগবত। —ফাইল চিত্র।
কেরলে ত্রিবাঙ্কুর দেবস্বম বোর্ডের নিয়ন্ত্রণে থাকা তিরুঅনন্তপুরমের সরকরা দেবী মন্দিরে আরএসএস কোনও রকম অস্ত্র প্রশিক্ষণ দিতে বা কুচকাওয়াজ করতে পারবে না বলে গত মাসেই নির্দেশ জারি করেছিল কেরল হাই কোর্ট। তার পরেই গত সপ্তাহে কেরল সরকার এক নির্দেশিকায় জানিয়েছে, ত্রিবাঙ্কুর দেবস্বম বোর্ডের নিয়ন্ত্রণে থাকা মন্দিরগুলির চত্বরে আরএসএস তাদের কার্যকলাপ চালাতে পারবে না।
বিষয়টি নিয়ে আরএসএস-বিজেপি ও তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি সরব হলেও কেরলের দেবস্বম মন্ত্রী কে রাধাকৃষ্ণন আজ বলেছেন, ‘‘শান্তিপূর্ণ পরিবেশ রক্ষা করার উদ্দেশ্যেই এই পদক্ষেপ।’’ তাঁর দাবি, গত সপ্তাহে দেবস্বম কমিশনারের জারি করা ওই নির্দেশিকা ধর্মস্থানে কারও প্রবেশ রোখার জন্য জারি করা হয়নি। এ বিষয়ে বিতর্ক অবাঞ্ছিত বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন।
কেরলের রাজনীতিতে গুরুত্বহীন বিজেপি তথা সঙ্ঘ পরিবার দীর্ঘ দিন ধরেই সে রাজ্যে ধর্মীয় রাজনীতির হাত ধরে অনুপ্রবেশ করতে মরিয়া। সেই উদ্দেশ্যে কয়েক মাস আগে তারা একাধিক মন্দিরে অস্ত্র প্রশিক্ষণ এবং কুচকাওয়াজ় করার পরিকল্পনাও করে। তার মধ্যে একটি রাজধানী তিরুঅনন্তপুরমের সরকরা দেবীর মন্দির। ত্রিবাঙ্কুর দেবস্বম বোর্ডের নিয়ন্ত্রণে থাকা ওই মন্দিরের চত্বরে সঙ্ঘ পরিবারের অস্ত্র প্রশিক্ষণ কর্মসূচির বিরোধিতা করে আদালতের দ্বারস্থ হন দুই ভক্ত। তাঁদের আর্জি মেনে নিয়ে হাই কোর্ট ওই মন্দির চত্বরে সঙ্ঘের অস্ত্র প্রশিক্ষণ ও কুচকাওয়াজ নিষিদ্ধ করার নির্দেশ দেয়।
হাই কোর্টের সেই নির্দেশকে হাতিয়ার করেই রাজ্যের বাম সরকার ত্রিবাঙ্কুর দেবস্বম বোর্ডের নিয়ন্ত্রণে থাকা সব মন্দিরেই সঙ্ঘের কর্মসূচি ঠেকাতে একটি নির্দেশ জারি করে। ত্রিবাঙ্কুর দেবস্বম বোর্ডের গত ২০ অক্টোবরের সেই নির্দেশনামার পরে গেরুয়া শিবিরের নালিশ, ধর্মস্থানগুলি থেকে সঙ্ঘ পরিবারকে দূরে সরিয়ে রাখতে চাইছে রাজ্যের বাম সরকার। কেরলে স্বশাসিত ওই বোর্ডের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বারোশোর বেশি মন্দির। জারি করা
নির্দেশনামায় বলা হয়েছে, তাদের কোনও চত্বরে আরএসএস ও ‘‘উগ্র মতাদর্শের’ সংগঠনগুলি অনুমতি ছাড়া কোনও কার্যকলাপ করতে পারবে না। তারা যাতে মন্দির চত্বরে ‘শাখা’ চালাতে অথবা অস্ত্র প্রশিক্ষণ দিতে না-পারে, সেটা অতর্কিত অভিযানে দেখতে বলা হয়েছে দেবস্বম বোর্ডের নজরদারি শাখাকে। মন্দিরের কর্মচারী ও পুরোহিতদের এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, এমন কিছু নজরে এলে কর্তৃপক্ষকে জানাতে। অন্যথায় পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
বিজেপি তথা সঙ্ঘ পরিবার বহু দিন ধরেই কেরলের মন্দিরগুলিকে নিশানা করে তাদের কাজকর্ম বাড়াতে চাইছে। এর আগে কেরলের শবরীমালা মন্দিরে সব বয়সের মহিলাদের অবাধ প্রবেশাধিকার নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধেও তারা সক্রিয় হয়ে নানা পদক্ষেপ করলেও তা সফল হয়নি।
রাজ্য সরকারের অভিযোগ, তার পর থেকেই মন্দির চত্বরগুলিতে অস্ত্র প্রশিক্ষণ এবং উগ্র হিন্দুত্ববাদী কাজকর্ম চালানোর পরিকল্পনা করেছে সঙ্ঘ পরিবার। সেই মতো পদক্ষেপের চেষ্টার কথাও জানা গিয়েছে। সেই প্রসঙ্গে রাজ্যে কোনও ভাবেই সঙ্ঘের সাম্প্রদায়িক কাজকর্মকে চলতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে সরকার এবং দেবস্বম বোর্ডের তরফে কড়া পদক্ষেপ করার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি, ত্রিবাঙ্কুর দেবস্বম বোর্ড জানিয়েছে, সাম্প্রতিক নির্দেশনামা অমান্য করলে তা আদালতের আদেশ লঙ্ঘন করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy