আদিত্য ঠাকরে
ঠাকুরদার আপত্তি ছিল ভ্যালেন্টাইন দিবস পালনে, নাতি তা পালন করেন।
মরাঠি অস্মিতাই ছিল ঠাকুরদার রাজনৈতিক তাস। আর নাতি দক্ষিণী ধাঁচে ধুতি পরে প্রচারে নামেন।
ঠাকুরদার ভাবমূর্তি ছিল কট্টর সংখ্যালঘু বিরোধী। নাতির প্রচারে সংখ্যালঘুদের ছবি, উর্দুতে ভাষণ।
ঠাকুরদা বালাসাহেব এবং বাবা উদ্ধব ভোটে লড়েননি। শুধু মা রেশমি ঠাকরের ইচ্ছেয় ছেলে আদিত্যকে ওরলি থেকে প্রার্থী করে প্রথা ভেঙেছে শিবসেনা। ঠাকরে পরিবারের প্রতিনিধি হিসেবে প্রথম বার ভোটে দাঁড়িয়ে ৫৩ বছরের দলের নীতিতে ধাক্কা দিয়েছেন ২৯ বছরের আদিত্য।
সত্তরের দশকে অসংগঠিত ক্ষেত্রে দক্ষিণীদের হটাতে এবং মরাঠিদের সুযোগ দিতে ‘দক্ষিণী হটাও’ অভিযানে নেমেছিলেন বালাসাহেব। এখন নাতি আদিত্য ওরলির দক্ষিণী সমাজের সমর্থন পেতে দক্ষিণী কায়দায় ধুতি ও অঙ্গবস্ত্রম পরে সভা করছেন। গুজরাতি ও সংখ্যালঘুদের সমর্থন পেতে আদিত্যের ভাষণে থাকে ‘কেম ছো,’ ‘সালাম ওরলি’র মতো শব্দ। আদিত্যের ছক ভাঙার এই প্রচেষ্টা জনপ্রিয় হলেও সন্দিহান বর্ষীয়ান শিবসেনা সদস্যদের একাংশ।
শুরুতে আদিত্যের জন্য মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার হলেও পরে তা থেকে সরতে বাধ্য হয় শিবসেনা। দলের নতুন দাবি উপমুখ্যমন্ত্রিত্ব। গত বিধানসভায় একা লড়ে ৬৩টি আসন পাওয়া শিবসেনা এ বার জোট করে ৯০-১০০টি আসন পাওয়ার স্বপ্ন দেখছে। সে ক্ষেত্রে বিজেপির আসন কমবে। শিবসেনার আশা, তখন জোট সরকার গড়তে উপমুখ্যমন্ত্রিত্বের দাবি মানতে হবে বিজেপিকে। সে ক্ষেত্রে উপমুখ্যমন্ত্রী হিসেবে অর্থ বা স্বরাষ্ট্রের মতো মন্ত্রক চালানোর অভিজ্ঞতা হবে আদিত্যের। তা হলে পরবর্তী নির্বাচনে স্বাভাবিক পছন্দ হিসেবে মুখ্যমন্ত্রিত্বের দৌড়ে থাকতে পারবেন। তাঁকে জেতানোর জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে ওরলির মতো নিরাপদ আসন। স্বেচ্ছায় সরে গিয়েছেন দলের জয়ী বিধায়ক সুনীল শিন্দে। আদিত্যকে জেতাতে চরকি পাক খাচ্ছেন। বললেন, “গত বারের চেয়ে বেশি ভোট নিশ্চিত করাই আমার লক্ষ্য।” ভাইপোর বিরুদ্ধে প্রার্থী দেননি কাকা রাজ ঠাকরেও।
লোয়ার পারেল স্টেশনে আলাপ হল বি-টেকের ছাত্র ইশান্ত ও তাঁর বন্ধুদের সঙ্গে। বললেন, “আদিত্য নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধি। আশা করছি পরিবর্তন হবে।” ওরলির ১২ নম্বর রোডে পারিবারিক দোকান নাগেশের। দোসা-ইডলির। এলাকায় অনেক দক্ষিণ ভারতীয়। নাগেশের মতে, স্থানীয়দের সঙ্গে দিব্যি ব্যবসা করছেন তাঁরা। অটোচালক নইম বা মোবাইল দোকানের আনসারি—সকলেরই বক্তব্য, প্রয়োজনে পাশে থাকেন শিবসেনা নেতারা।
যদিও আদিত্যকে বাদ দিলে শিবসেনার ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দিহান অনেকেই। সুরেন্দ্র জনঢালের মতো রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, কোঙ্কন, বিদর্ভ ও মরাঠাওয়াড়া এলাকায় শিবসেনার প্রভাব কমছে। পুণেতে প্রার্থী দিতে ব্যর্থ দল। অন্তর্কলহে ইস্তফা দিয়েছে নাশিকের ইউনিট। এই সময়ে আদিত্য নবীনদের ভোট টেনে দলকে কতটা দাঁড় করাতে পারেন, তারই পরীক্ষা এ বার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy