নবগ্রামে ভোট-প্রচারে
‘‘কী বলছিস এ সব! সবাই জানে, আমি ভোটে দাঁড়িয়ে জিততে পারি না। এই বয়সে আর এ সব করে অসম্মান করাস না!’’
প্রস্তাবটা তাঁর কাছে পাড়ার পরে এই ছিল প্রথম প্রতিক্রিয়া। বোঝাতে থাকলাম, এক বার ভরসা করে দেখুন না! মুর্শিদাবাদ থেকে আমরা আপনার ভোটে জেতার স্বপ্ন সফল করে দেখাব। নিমরাজি হয়ে শেষমেশ প্রণবদা বললেন, কিন্তু দিল্লি আমাকে ছাড়বে না। আমি বললাম, আমরাও ছাড়ব না! ছুটলাম সনিয়া গাঁধীর কাছে। তিনি বিস্মিত হয়ে বললেন, প্রণবদা? কংগ্রেসের জাতীয় ইস্তাহারটা উনি লিখছেন। উনি কখন কী ভাবে মুর্শিদাবাদে গিয়ে ভোটে লড়বেন? আর্জি জানালাম, ম্যাডাম, আপনি শুধু হ্যাঁ বলে প্রণবদা’র নামটা লিখে দিন। যেতে না পারলে যাবেন না। কিন্তু ভোটটা হবে। দলের অনেকেই তখন বারণ করেছিল এত কিছু করতে। কিন্তু সেই ২০০৪ সালেই জঙ্গিপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে একটা ইতিহাস তৈরি হল!
ব্যস্ততার কারণে চার দিন নিজের কেন্দ্রে প্রচারে গিয়েছিলেন প্রণবদা। একটা বাড়ি ভাড়া নেওয়া ছিল। ফল বেরোনোর পরে কী খুশি! কেন্দ্রে কংগ্রেসের সরকার হল, প্রণবদা’র আরও চরম ব্যস্ততা। কিন্তু জঙ্গিপুরকে ভোলেননি। বিশেষ বিমানে কলকাতায় এসে হেলিক্পটারে মুর্শিদাবাদ চলে যেতেন, কখনও আবার গাড়িতে। পাঁচ বছর পরে ফের প্রার্থী হওয়ার সময়ে অবশ্য সমস্যা হয়নি। জঙ্গিপুরে একটা বাড়িও করে ফেললেন প্রণবদা। ‘জঙ্গিপুর ভবন’ তাঁর স্মৃতি নিয়ে থেকে যাবে।
শ্রদ্ধার্ঘ্য।—নিজস্ব চিত্র।
ভারতীয় রাজনীতির এমন ‘এনসাইক্লোপেডিয়া’, বিরল ব্যক্তিত্ব, এক ‘ভারতরত্নে’র সঙ্গে মুর্শিদাবাদের সংযোগ হয়েছিল, এটা আমাদের কাছে গর্বের কথা। কিন্তু তাঁর অভিভাবকত্ব হারালাম, এই ক্ষতি পূরণ হওয়ার নয়।
আরও পড়ুন: গত ৫০ বছরে তাঁর জীবন দেশের গত ৫০ বছরের ইতিহাস, প্রণব কন্যাকে চিঠি সনিয়ার
আরও পড়ুন: ভালবাসতেন, চোখের জলও ফেলিয়েছিলেন
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy