স্বামীর মৃত্যু নিশ্চিত করতে খুনের পাঁচ দিন আগেই গুগ্ল করে খুঁটিনাটি জিনিস জেনে নিয়েছিলেন স্ত্রী! কর্নাটক পুলিশের প্রাক্তন ডিজি ওম প্রকাশকে খুনের ঘটনার তদন্তে নেমে প্রাথমিক ভাবে এমনই জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। প্রকাশ্যে এই বিষয়ে কিছু বলা না-হলেও তদন্তকারীদের একটি সূত্র মারফত এমনটাই জানা গিয়েছে।
ওই সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, গলার কাছে শিরা কেটে কী ভাবে কোনও মানুষকে খুন করা যায়, তা জানতে সার্চ ইঞ্জিন গুগ্লের শরণাপন্ন হয়েছিলেন প্রয়াত প্রাক্তন ডিজির স্ত্রী পল্লবী। রবিবার বেঙ্গালুরুর বাড়িতে রক্তাক্ত অবস্থায় ৬৮ বছরের ওমের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পেটে, বুকে একাধিক ক্ষতচিহ্ন ছিল তাঁর। এই খুনের মামলায় সন্দেহভাজনের তালিকায় ছিলেন ওমের স্ত্রী। ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরই রবিবার রাত থেকে টানা পল্লবী এবং ওমের কন্যাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। বাবার খুনের ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওমের পুত্র কার্তিকেশ। তাঁর দাবি, মা পল্লবী এবং বোন কৃতীই প্রাক্তন আইপিএস অফিসারকে খুন করেছেন। তাঁকে আগেও খুনের হুমকি দেওয়া হয়েছিল। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, রবিবার স্বামীকে খুনের পাঁচ দিন আগে গুগ্ল করেছিলেন স্ত্রী।
সোমবার পল্লবীকে আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাঁকে ১৪ দিন বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। সূত্রের খবর, তদন্তে জানা গিয়েছে পল্লবীর বিভিন্ন মানসিক সমস্যা ছিল। বাড়িতে প্রায়ই অশান্তি করতেন তিনি। এমনকি, তাঁকে গালিগালাজ করতেও শুনেছেন প্রতিবেশীরা। অনেক সময় তাঁরা এসে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছেন। কার্তিকেশ জানিয়েছেন, রবিবার সন্ধ্যায় তিনি কর্নাটক গল্ফ অ্যাসোসিয়েশনে ছিলেন। তখন এক প্রতিবেশী তাঁকে ফোন করে জানান, ওমকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। তাঁর শরীরে একাধিক ছুরির আঘাত রয়েছে। সোমবার সকালে একটি ভাঙা বোতল এবং একটি ছুরি পাওয়া গিয়েছে। কার্তিকেশের অভিযোগ, মাস কয়েক আগে পল্লবী তাঁর বাবাকে পাথর ছুড়ে আঘাত করেন। তাতে তিনি আহত হয়েছিলেন।
আরও পড়ুন:
পল্লবী যদিও পুলিশকে জানিয়েছেন, ওম প্রায়ই তাঁকে মেরে ফেলার হুমকি দিতেন। পরিবারের সদস্যদের না কি বন্দুক দেখিয়ে খুন করার কথা বলতেন। প্রাক্তন পুলিশকর্তার স্ত্রীর দাবির সত্যতা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, স্বামীর দিকে প্রথমে লঙ্কার গুঁড়ো ছুড়েছিলেন পল্লবী। তার পরে তাঁকে বেঁধে ভাঙা কাচের বোতল দিয়ে কুপিয়েছিলেন। স্বামীকে খুনের কথা অন্য এক পুলিশকর্তার স্ত্রীকে ফোন করে জানিয়েছিলেন পল্লবী। ওই মহিলা তাঁর স্বামীকে বিষয়টি জানান। তার পরেই ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় পুলিশ। ওম আদতে বিহারের বাসিন্দা। ২০১৫ সালের মার্চ মাসে কর্নাটক পুলিশের ডিজি হয়েছিলেন।