Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Narendra Modi

UP assembly election 2022: উত্তরপ্রদেশে ফিরছে বিজেপি, দাবি মোদীর

প্রথম পর্বের ভোট শুরুর ঠিক আগের সন্ধ্যায় টিভি সাক্ষাৎকারে আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দাবি করেন, উত্তরপ্রদেশে প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতার হাওয়া নেই।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৬:১৭
Share: Save:

মায়াবতী পারেননি। পারেননি অখিলেশ যাদব। এ বার কি বদলাবে ইতিহাস? পরপর দু’বার উত্তরপ্রদেশের মানুষ বিজেপিকে বেছে নেন কি না, সেই পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আগামিকাল। সাত দফা নির্বাচনের প্রথম পর্বের ভোট শুরুর ঠিক আগের সন্ধ্যায় টিভি সাক্ষাৎকারে আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দাবি করেন, উত্তরপ্রদেশে প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতার হাওয়া নেই। বরং প্রতিষ্ঠান তথা সরকারের পক্ষে মানুষ থাকায় উত্তরপ্রদেশে ফের ক্ষমতায় আসতে চলেছে বিজেপি। আগামিকাল নির্বাচন হওয়ায় প্রচার বন্ধ ছিল ভোটমুখী ৫৮টি বিধানসভা কেন্দ্রে। কিন্তু ভোটের ঠিক আগের সন্ধ্যায় এ ভাবে সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনী আচরণবিধি ভেঙেছেন বলে অভিযোগ তুলে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হওয়ার কথা ভাবছেন বিরোধীরা। কংগ্রেস নেতা রণদীপ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘পরাজয় নিশ্চিত বুঝেই রাজা ভয় পাচ্ছেন। কিন্তু জনতা নিজের মন প্রস্তুত করে ফেলেছে।’’

এ যাবৎ পরপর দু’বার উত্তরপ্রদেশের মসনদ জিততে ব্যর্থ সব দলই। কিন্তু আজ মোদী দাবি করেছেন, কেবল উত্তরপ্রদেশই নয়, পাঁচ রাজ্যেই বিজেপির পক্ষে হাওয়া রয়েছে। কেন উত্তরপ্রদেশে দল জিতবে, তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এক দিকে যেমন যোগী আদিত্যনাথের কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন, তেমনই দাবি করেছেন, যোগী সরকারের কাজ করার যে আন্তরিক প্রচেষ্টা ছিল, তা মানুষ লক্ষ্য করেছেন। ভরসা পেয়েছে আমজনতা। মোদীর কথায়, “যে গরিব মানুষটি এ পর্বে ঘর পাননি, তিনিও বুঝতে পেরেছেন, পাশের লোক যখন পেয়েছেন তখন পরের সরকারে তিনিও নিশ্চয়ই পাবেন।’’ যোগীর প্রশংসা করে মোদী বলেন, “যোগীর কাজ দেখে বিরোধীরা সেই কাজের কৃতিত্ব দাবি করতে এগিয়ে আসছেন। তাঁদের সময়ে ওই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করে লাভের কড়ি কুড়িয়ে নিতে চাইছেন। এখানেই প্রশাসক হিসাবে যোগীর সাফল্য।’’

একই সঙ্গে গত পাঁচ বছরে উত্তরপ্রদেশে আইনশৃঙ্খলার উন্নতি, মহিলাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, গুন্ডা-মাফিয়ারাজ শেষ করার মতো ‘সাফল্যের’ কথা এ দিন তুলে ধরেছেন প্রধানমন্ত্রী। সম্প্রতি লখিমপুর খেরি কাণ্ড এবং তাতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনি ও তাঁর ছেলের সরাসরি হাত থাকার অভিযোগ ওঠায় রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়ে যান বিজেপি নেতৃত্ব। ব্রাহ্মণ ভোটের কথা ভেবে টেনির বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নিতে পারেনি দল। যদিও আজ খেরি কাণ্ডেও যোগী প্রশাসনের ‘নিরপেক্ষতা’ তুলে ধরতে ছাড়েননি মোদী। তিনি বলেন, “এ ক্ষেত্রেও সুপ্রিম কোর্ট যা নির্দেশ দিয়েছে, তা মেনে নিয়েছে যোগী প্রশাসন।’’ মোদী ওই কথা বললেও বিরোধীদের দাবি, নেহাত সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে তদন্ত হচ্ছে। তা না হলে গোড়ায় যে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল, তাতে সম্পূর্ণ ছাড় দেওয়া হয়েছিল টেনির পরিবারকে। সুরজেওয়ালার প্রশ্ন, কেন এখনও মন্ত্রিসভায় রয়ে গেলেন টেনি?

আগামিকাল পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের জাঠ বলয় ও ব্রজভূমিতে ভোট। ২০১৩ সালে মুজফ্‌ফরনগরের দাঙ্গার পর থেকে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে জাঠ ও মুসলিম সমাজের মধ্যে আড়াআড়ি বিভাজন ঘটে। তার ফায়দা গত আট বছরে বিভিন্ন ভোটে পেয়ে এসেছে বিজেপি। কিন্তু কৃষি আইন ঘিরে আন্দোলন, মহাপঞ্চায়েতগুলিতে জাঠ ও মুসলিমরা ফের কাছাকাছি আসার পরে জাঠ নেতা, রাষ্ট্রীয় লোক দলের জয়ন্ত চৌধুরির সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন সমাজবাদী নেতা অখিলেশ যাদব। রাজনীতির অনেকেই মনে করছেন, পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে যাদব ও মুসলিমদের সঙ্গে সফল ভাবে জাঠ ভোট যোগ হলে ওই এলাকা থেকে কার্যত মুছে যাবে বিজেপি। উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিতে অখিলেশ ও জয়ন্তের বিরুদ্ধে তাঁর ও যোগীর লড়াই প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এর আগেও দুই লড়কে (রাহুল গান্ধী ও অখিলেশ) লড়তে এসেছিলেন। এত অহঙ্কার যে, তাঁরা ‘গুজরাতের দুই গাধা’— এমন শব্দ প্রয়োগ করেছিলেন। পরে ওই দুই লড়কের সঙ্গে এক বুয়া (মায়াবতী) যোগ দিয়েছিলেন। লাভ হয়নি কিছুই।’’

পাঁচ রাজ্যে ভোট আসন্ন হলেও প্রধানমন্ত্রীর আজকের সাক্ষাৎকারের সিংহভাগ জুড়ে ছিল উত্তরপ্রদেশ। যদিও পাঁচ রাজ্যেই জয় নিয়ে আত্মবিশ্বাসী মোদী। এ যাত্রায় উত্তরপ্রদেশের ভোটে বিজেপির মূল প্রতিপক্ষ সমাজবাদী পার্টি। তাই অখিলেশ ও তাঁর পরিবারকে আজ ফের ‘নকল সমাজবাদী’ বলে আক্রমণ শানান মোদী। কারণ ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘‘এঁরা এমন সমাজবাদী যে, এঁদের পরিবারের ৪৫ জন দলের কোনও না কোনও পদ আঁকড়ে রয়েছেন। এঁদের পরিবারে কারও বয়স ২৫ হলেই নির্বাচনে নেমে পড়েন। এঁদের কারণেই দল পরিবারের হাতে যায়, যা গণতন্ত্রের পক্ষে সব থেকে বড় বিপদ।’’ তিন কৃষি আইনের কারণে বিজেপি উত্তরপ্রদেশ ও পঞ্জাবের কৃষকদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে বলেই মনে করছেন দলের একাংশ। এই ক্ষত ঢাকতে ও কৃষকদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে আজ প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, ছোট কৃষকদের উন্নয়নের স্বার্থেই ওই আইন আনা হয়েছিল। পরে ‘দেশহিতে’ সেই আইন প্রত্যাহার করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

অন্য বিষয়গুলি:

Narendra Modi UP Assembly Election 2022
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy