বছরের শেষে ভোট বিহারে। তার আগে বিজেপি-বিরোধী শক্তিগুলিকে একজোট হওয়ার বার্তা দিলেন আরজেডি নেতা লালুপ্রসাদ যাদব। রাজ্য রাজনীতিতে লালুপ্রসাদের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের উদ্দেশে ওই বার্তা দেওয়া হয়েছে বলেই মনে করছেন রাজনীতিকেরা। যদিও নীতীশ ঘরোয়া ভাবে জানিয়েছেন এনডিএ জোট ছাড়ার কোনও পরিকল্পনা তাঁর নেই। আসন্ন নির্বাচনে একজোট হয়ে লড়বে এনডিএ জোট।
মূলত হোলির শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে আজ লালুপ্রসাদ বিরোধীদের ওই বার্তা দিলেও, দিন কয়েক আগে নীতীশকে ব্যক্তিগত ভাবে আক্রমণ শানিয়েছিলেন লালু-ঘরণী রাবড়ী দেবী। তিনি বলেন, নীতীশ মুখ্যমন্ত্রী হয়েও সারা দিন গাঁজা খেয়ে থাকেন। যা নিয়ে প্রবল বিতর্ক হয়। নীতীশকে ব্যক্তিগত ভাবে রাবড়ী দেবীর আক্রমণ করা নিয়েও প্রশ্ন তৈরি হয়। সেই বিতর্কের রেশ ভাল করে মেটার আগেই আজ হোলি উৎসবকে সামনে রেখে বার্তা দেন লালুপ্রসাদ। যা নীতীশকে কাছে টানার উদ্দেশ্যেই করা হয়েছে বলে মনে করছেন রাজনীতিকেরা। লালুপ্রসাদ সমাজমাধ্যমে আজ সকালে লেখেন, ‘‘দারিদ্র, দুর্নীতি, বেকারত্ব, অপরাধ এবং অস্থির সরকার। এ বারের হোলি কা দহনে ওই খারাপের শেষ হবে।’’
বার্তা সাধারণ হলেও রাজনীতিকদের অনেকের মতে, তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এতে নীতীশ সরকারের কোনও উল্লেখ বা সমালোচনার রাস্তায় হাঁটেননি লালুপ্রসাদ। কারণ লালুপ্রসাদ খুব ভাল করেই জানেন বিহারে সরকারে ফিরতে হলে নীতীশ কুমারের সাহায্য ছাড়া অসম্ভব। সেই কারণেই সম্ভবত নীতীশ কুমারকে বার্তা দেওয়ার কৌশল নেন লালুপ্রসাদ। কারণ অতীতে ভোটের ঠিক আগে এ ভাবে নীতীশ এনডিএ ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন। এ বারেও তেমনটি হোক চাইছেন আরজেডি শীর্ষ নেতৃত্ব। দলের বক্তব্য, জেডিইউ নেতৃত্বকে বুঝতে হবে একমাত্র ওই পথেই বিজেপিকে ক্ষমতা থেকে দূরে রাখা সম্ভব।
এখন পর্যন্ত বিহারে বিজেপির সঙ্গেই জোট করে নির্বাচনে লড়ার পরিকল্পনা রয়েছে নীতীশের। কিন্তু একটি বিষয় নীতীশ ভাল করেই বুঝতে পারছেন, শরিক দল হিসেবে বিজেপির তুলনায় যদি জেডিইউ কম আসন জেতে সে ক্ষেত্রে রাজ্যে অস্তিত্বের সঙ্কটে ভুগবে জেডিইউ। ওড়িশাতে ঠিক যে কারণে বিজেপির আগ্রাসনের দাপটে গুটিয়ে গিয়েছেন বিজেডি নেতৃত্ব। দলের একটি অংশ নিজেদের অস্তিত্ব ধরে রাখতে বিজেপির সঙ্গ ছেড়ে একলা লড়ার পক্ষে। তাঁরাও ক্রমশ চাপ বাড়াচ্ছেন নীতীশের উপরে। সূত্রের মতে, নীতীশের পাশাপাশি জেডিইউ দলের সেই অংশের উদ্দেশেও বার্তা দিয়েছেন লালুপ্রসাদ।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)