ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের প্রচারের প্রধান বিষয় হওয়া উচিত কেন্দ্রের বঞ্চনা, এমনটাই মনে করেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ নয়াদিল্লিতে তিনি এ কথা জানিয়ে বলেন, “আমি মনে করি আগামী বিধানসভা ভোটের কেন্দ্রীয় বিষয় হতে চলেছে বাংলার প্রতি কেন্দ্রীয় বঞ্চনা। এই নিয়ে আন্দোলন করেছি এর আগেও। আবারও সেই প্রচার তুঙ্গে নিয়ে যাওয়া হবে, যদি টাকা না দেওয়া হয়। একশো দিনের কাজ, আবাস যোজনার টাকা আটকে রেখে রাজ্যের প্রতি বিমাতৃসুলভ আচরণের দৃষ্টান্ত সামনে নিয়ে আসা হবে।”
একশো দিনের কাজ করানোর পরেও যে ২১ লক্ষ মানুষের মজুরি কেন্দ্র মেটায়নি বলে অভিযোগ, লোকসভা ভোটের আগে সেই বাবদ সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকা কোষাগার থেকে দিয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। সেই চাপ না থাকলে যে রাজ্য সরকার আরও বেশি জনকল্যাণমূলক কাজ করতে পারত, সেটা তুলে ধরার পরিকল্পনা আজ স্পষ্ট করেছেন অভিষেক। তঁর কথায়, “শুধু একশো দিনের কাজের জন্য বকেয়া সাত হাজার কোটি টাকারও বেশি। এই প্রাপ্য অর্থ দিলে প্রতিটা ব্লকে স্বাস্থ্য-শিক্ষা-পরিকাঠামো ক্ষেত্রে কতটা উন্নয়নের কাজ করা যেত, এ বার ভেবে দেখার সময় এসেছে। লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা বাড়িয়েও রাজ্যের হাতে টাকা থাকত।”
পাশাপাশি একই এপিক নম্বরে একাধিক ভোটার কার্ড থাকার বিষয়টি নিয়ে নয়াদিল্লিতে সুর চড়াচ্ছে অভিষেকের দল। আগামিকালও এই নিয়ে সংসদে একাধিক নোটিস জমা দেওয়া হবে। বিষয়টি ‘শাপে বর’ হিসাবেই ব্যাখ্যা করছেন তৃণমূল নেতা। তাঁর কথায়, “দিল্লিতে ৩ লাখ ভোটার মুছে দিয়ে পৌনে দু’লাখ নতুন ভোটার যোগ করা হয়েছে। একই ভাবে মহারাষ্ট্রে। এই রাজ্যগুলিতে যখন বিরোধীরা বিষয়টি ধরতে পেরেছেন, তখন অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। বিজেপির কৌশল ছিল বাংলাতেও এই খেলা খেলার। কিন্তু শাপে বর হয়েছে, আমরা আগেই এই চাল ধরতে পেরে ব্যবস্থা নিয়েছি।”
ছাব্বিশের ভোটের আগে দলের শীর্ষ স্তরে কোনও দ্বন্দ্ব নেই বলে আজ আবারও দাবি করেছেন অভিষেক। তাঁর ‘নতুন দল গড়া’ নিয়ে রাজধানীতে যে গুঞ্জন রটেছিল, তাকেও উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর কথায়, “আমি কোনও লবি করি না। আমি বেইমান নই। না পোষালে রাজনীতি ছেড়ে দেব। কিন্তু তৃণমূল থেকে বেরিয়ে অন্য দল করব না। বারবার বলেছি আমার নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই নিয়ে কোনও বিতর্ক হতে পারে না।”
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)