লোকসভায় বক্তৃতা করছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ভিডিয়ো থেকে নেওয়া।
একুশের বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পরে আজ পর্যন্ত একশো দিনের কাজ, কেন্দ্রীয় আবাস যোজনায় বরাদ্দ ‘দশ পয়সাও’ দেয়নি বিজেপি সরকার, এই অভিযোগে লোকসভায় শ্বেতপত্রের দাবি জানান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ অভিষেকের দাবি, চব্বিশের লোকসভায় বিজেপি মেরুকরণের প্রবল চেষ্টা করেও পশ্চিমবঙ্গে ব্যর্থ হয়েছে মূলত আবাস যোজনা এবং একশো দিনের কাজের বকেয়া টাকা না দেওয়ার জন্য।
অভিষেকের কথায়, “আমরা গ্রামীণ এলাকায় গিয়ে বাংলার বিরুদ্ধে কেন্দ্রের অর্থনৈতিক বঞ্চনা নিয়ে প্রচার করেছি। বিজেপির পাল্টা ভাষ্য মানুষের সামনে সফল ভাবে হাজির করতে পেরেছি। উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশে কেন্দ্রীয় আবাস যোজনায় টাকা দেওয়া হলেও আমাদের টাকা দেয়নি মোদীর সরকার, তা স্পষ্ট করা হয়েছে। ভোটে তার ফল দেখা গিয়েছে।” অভিষেক জানান, কেন্দ্রকে ফের আবেদন করা হয়েছে। টাকা না দিলে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে রাজ্যের তরফ থেকে আবাসের টাকার প্রথম কিস্তি আবেদনকারীদের কাছে চলে যাবে। অর্থাৎ কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিষয়টিকে হাতিয়ার করেই যে ছাব্বিশের বিধানসভা ভোটে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছে তৃণমূল, সেই আভাস আজ পাওয়া গিয়েছে।
একশো দিনের কাজ করানোর পরেও যে ২১ লক্ষ মানুষের মজুরি কেন্দ্র মেটায়নি বলে অভিযোগ, লোকসভা ভোটের আগেই সেই বাবদ সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকা নিজেদের কোষাগার থেকে দিয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এ বার মাথার উপরে ছাদের জন্য ১১ লক্ষ ৩৬ হাজার মানুষের টাকাও বছরের শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করে রাজ্যই দেবে বলে আজ জানান অভিষেক। তাঁর কথায়, এ ক্ষেত্রে রাজ্যের কোষাগারে চাপ কমাতে নতুন নীতি এমন হবে, যাতে রাজস্ব বাড়ে অথচ বাড়তি কর না চাপে। মনরেগায় ন্যূনতম পঞ্চাশ দিনের মজুরির প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি।
আজ রাজ্যসভায় বাজেট বিতর্কের জবাবে বঙ্গের প্রতি বঞ্চনার অভিযোগ নিয়ে আলাদা করে মুখ খোলেননি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। তবে কোনও রাজ্যের প্রতিই বৈষম্য হচ্ছে না বলে দাবি করে তাঁর ব্যাখ্যা, রাজ্যগুলিকে রাজ্যের জিডিপি-র ৩% পর্যন্ত ঋণ নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। কেন্দ্রের কথামতো বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে সংস্কারের শর্ত মানলে অতিরিক্ত ০.৫% ঋণ নেওয়ার অনুমতিও দেওয়া হয়। সেই শর্ত মেনে পশ্চিমবঙ্গ সরকার ২০২১-২২ অর্থবর্ষে প্রায় ৬৯০০ কোটি টাকা, ২০২২-২৩-এ ৮৩৫২ কোটি টাকা, ২০২৩-২৪-এ প্রায় ৭২০০ কোটি টাকা বাড়তি ঋণের অনুমতি পেয়েছে।
বিপর্যয় খাতে বরাদ্দ কেন্দ্রীয় অর্থের হিসাব দেওয়ার ক্ষেত্রে বঙ্গের ভূমিকার আজ সমালোচনা করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আজ রাজ্যসভায় কেরলের ওয়েনাড়ের ভূমিধস প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে শাহ বলেন, “কেন্দ্র ২০১৪-২৪ সময়কালে পশ্চিমবঙ্গের জন্য বিপর্যয় খাতে ৬২৪৪ কোটি টাকা মঞ্জুর করেছে। যে ভাবে খরচের হিসাব আসে, সে ভাবে টাকা ছাড়া হয়। মোট অর্থের মধ্যে ৪৬১৯ কোটি টাকা ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ওখানে হিসাব পাঠানো নিয়ে সমস্যা রয়েছে। তার সমাধান আমি করতে পারি না, পশ্চিমবঙ্গ সরকারকেই করতে হবে। এ তো সরকার, রাজনৈতিক দল নয়। সরকারের কিছু নিয়মকানুন থাকে, অ্যাকাউন্টিং ব্যবস্থা থাকে, অডিটর জেনারেলের অডিট হয়। কিন্তু আমি কাউকে মেনে চলব না, তা হলে তো মুশকিল।” শাহের আরও দাবি, “ধীরে ধীরে পরিস্থিতি পাল্টাচ্ছে। আগের চেয়ে পরিস্থিতি উন্নত হয়েছে। সেই কারণেই ৪৬১৯ কোটি টাকা কেন্দ্র ছেড়ে দিয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy