সোমবার ত্রিপুরায় গিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ করলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ফেসবুক।
একটি বাংলা শব্দ পড়তে পারেন না! একটি বাংলা শব্দও লিখতে পারেন না! সঠিক উচ্চারণ পর্যন্ত করতে পারেন না! তাঁরা কী ভাবে ‘ভূমিপুত্র’ হন? ত্রিপুরার মাথাভাঙার জনসভায় সোমবার বিজেপির বিরুদ্ধে এমন সব প্রশ্নই তুললেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলকে ‘বহিরাগত’ বলে বিজেপির করা আক্রমণকেও একহাত নিলেন তিনি। পাশাপাশি অভিষেক দাবি করলেন, এই তৃণমূলের জন্যই ২০২২ সালে বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী পরবর্তন করতে বাধ্য হয়েছে। আর এ বার সরকার পরিবর্তন হবে।
আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার ত্রিপুরায় ভোট। বিজেপি বার বার তৃণমূলকে ‘বহিরাগত’ বলে কটাক্ষ করেছে। এর আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ত্রিপুরা সফরে গিয়ে তার জবাব দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, বাংলা এবং ত্রিপুরার সংস্কৃতি এক, ভাষা এক, রান্নার ধরন এক। দুই রাজ্যের দূরত্ব মাত্র আধ ঘণ্টা। ভোটের তিন দিন আগে, সোমবার অভিষেকও একই সুরে কথা বললেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা বাংলা বলি, পড়ি, লিখি।’’ এর পরেই আক্রমণ করেন বিজেপিকে। তাঁর কথায়, ‘‘যাঁরা সোনার ত্রিপুরাকে সুনার ত্রিপুরা বলেন, বাংলায় নমস্কারও বলতে পারে না, নাম নিতে পারে না, তাঁরা নাকি ভূমিপুত্র! মঞ্চের পিছনে কী লেখা রয়েছে, পড়তে পারবেন না। তাঁদের দিয়েছেন ত্রিপুরার দায়ভার?’’ অভিষেকের আর্জি, এই বিজেপির বদলে এ বার তৃণমূলকেই সুযোগ দেওয়া হোক। তিনি বলেন, ‘‘পাঁচ বছর তো দেখলেন! তৃণমূলকে একটা সুযোগ দিয়ে দেখুন। আমরা যখন ঢুকেছি, মাটি কামড়ে পড়ে থাকব।’’
অভিষেকের মতে এমন কাউকে সুযোগ দেওয়া উচিত, যাঁরা ত্রিপুরার মানুষের হয়ে লড়াই করবেন। যাঁদের ভোটের পরেও দেখা যাবে। এই প্রসঙ্গেও তিনি এক বার বিজেপিকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। মমতা বলেন, ‘‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী হন বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, কাউকে দেখতে পাবেন না। নির্বাচনের পর দিল্লির নেতা দিল্লি, গুজরাতের নেতা গুজরাত চলে যাবেন। মধ্যপ্রদেশের নেতা মধ্যপ্রদেশে চলে যাবেন। বাইরের নেতা বাইরে।’’
এর পরেই অভিষেকের খোঁচা, বিজেপির শীর্ষ নেতারা ত্রিপুরা ছেড়ে চলে গেলেও স্থানীয় নেতাদের হাতে কোনও ক্ষমতা থাকে না। তাঁরা নিয়ন্ত্রিত হন দিল্লির দ্বারাই। অভিষেকের কথায়, ‘‘দেখবেন, একটা কল, একটা খুঁটি পুঁতে একটা ২০ ওয়াটের বাল্ব লাগানোর ক্ষমতা এঁদের নেই। কারণ এদের সিদ্ধান্ত নিতে হয় দিল্লির থেকে। গুজরাত থেকে। গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ থেকে সবুজ সঙ্কেত আসবে, তার পর বাবুরা ঠিক করবেন, সোনামুড়ায় রাস্তা হবে, না আমবাসায়, না খোওয়াই, না আগরতলায় রাস্তা হবে।’’ এই দায়িত্ব এ বার ত্রিপুরার সাধারণ মানুষকে নেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ। তিনি বলেন, ‘‘আপনার পাড়ায় রাস্তা হবে কি না, আলো লাগবে কি না, জল পৌঁছবে কি না, আপনাকে ঠিক করতে হবে। দিল্লি, গুজরাত বা মধ্যপ্রদেশের নেতারা ঠিক করবে না। বাংলা যদি বাংলার ভবিষ্যৎ ঠিক করতে পারে, তা হলে ত্রিপুরা কেন পারবে না?’’
অভিষেক সোমবার এ-ও দাবি করেছেন যে, ২০২২ সালে তৃণমূলের জন্য ত্রিপুরায় মুখ্যমন্ত্রী বদলে গিয়েছে। বিপ্লব দেবের জায়গায় মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন মানিক সাহা। তাঁর কথায়, ‘‘একটা ছোট্ট দল যদি মানুষকে সংগঠিত করে আন্দোলন তীব্রতর করতে চায়, তা হলে যত বড় রাজনৈতিক দলই হোক না কেন, সে-ও মুখ্যমন্ত্রী বদলাতে বাধ্য হয়। কারণ, ২০২২ সালে তৃণমূল ছিল বলেই বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী বদলাতে বাধ্য হয়েছিল। ২০২২ সালে মুখ্যমন্ত্রী বদলেছিল। ২০২৩ সালে সরকার বদলাবে।’’ আর তা যদি না হয়, তা হলে রান্নার গ্যাসের দাম ১,০০০ টাকা থেকে ২,০০০, রান্নার তেলের দাম ১০০ টাকা থেকে ২০০ টাকা হয়ে যাবে। বাংলার মানুষ সুযোগ পাবে। কিন্তু ত্রিপুরার মানুষ পাবেন না। তাই একটি বার মমতার দলকে সুযোগ দেওয়ার আবেদন জানালেন অভিষেক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy