—ফাইল চিত্র।
দিল্লির পর পঞ্জাবেও ক্ষমতায় এলে জাতীয় রাজনীতিতে ‘স্বাভাবিক নিয়মে’ই কংগ্রেসের ‘বিকল্প’ হয়ে ওঠার স্বপ্ন দেখছে আম আদমি পার্টি। কিন্তু দলের মধ্যে অরবিন্দ কেজরীওয়ালের পাশাপাশি আরও এক জন মুখ্যমন্ত্রী হলে আম আদমি পার্টির অভ্যন্তরীণ সমীকরণ কী হবে, তা নিয়েও রাজনৈতিক শিবিরে আলোচনা শুরু হয়েছে।
সমস্ত বুথফেরত সমীক্ষাই জানিয়েছে, পঞ্জাবে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জিতে আম আদমি পার্টি ক্ষমতায় আসতে চলেছে। সমীক্ষা সত্যি হলে আঞ্চলিক দলগুলির মধ্যে একমাত্র আপ একের বেশি রাজ্যে ক্ষমতাসীন হবে। আপ নেতারা মনে করছেন, সে ক্ষেত্রে বিজেপি বিরোধী রাজনীতিতে বাকি আঞ্চলিক দলকে পিছনে ফেলে দেবে আম আদমি পার্টি। পঞ্জাবের ভারপ্রাপ্ত আপ-নেতা রাঘব চাড্ডার মন্তব্য, ‘‘মাত্র সাত-আট বছর আগে এই রাজনৈতিক শিশুর জন্ম হয়েছিল। এখন সেই আম আদমি পার্টিই জাতীয় রাজনীতিতে কংগ্রেসের স্বাভাবিক বিকল্প। কারণ, অরবিন্দ কেজরীওয়ালের প্রশাসনিক মডেল, দিল্লির উন্নয়নের মডেল মানুষের পছন্দ হয়েছে। ফলে জাতীয় স্তরেও আপ বিবেচনা করার মতো শক্তি হয়ে উঠেছে।’’
এ বিষয়ে আম আদমি পার্টির সকলে একমত হলেও দলের মধ্যে প্রশ্ন উঠছে, মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী ভগবন্ত মান সত্যিই পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হলে দলের সমীকরণ কী হবে? আপ-প্রধান কেজরীওয়াল দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। দেশের রাজধানী হলেও দিল্লি পূর্ণ রাজ্য নয়। ফলে কেজরীওয়ালের হাতে ক্ষমতা সীমিত। দিল্লির পুলিশ বাহিনীই তাঁর হাতে নেই। রয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের হাতে। সেই তুলনায় পঞ্জাব সীমান্তবর্তী রাজ্য হিসেবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভগবন্ত মান বা অন্য যে কেউ পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হলে তাঁর গুরুত্বও অনেক বেশি হবে। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, দলের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হবে না তো?
নির্বাচনের মধ্যেই কেজরীওয়ালের একদা ঘনিষ্ঠ কুমার বিশ্বাস দাবি করেছিলেন, কেজরীওয়াল দিল্লির গদি মনীশ সিসৌদিয়াকে ছেড়ে দিয়ে নিজে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হতে আগ্রহী। কিন্তু শিখ ভগবন্ত মানকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করে তাঁকে সরিয়ে কেজরীওয়াল নিজে মুখ্যমন্ত্রী হতে গেলে মানুষ তা মেনে নেবে না। আম আদমি পার্টির নেতারা অবশ্য দাবি করছেন, এমন কোনও পরিস্থিতি বা টানাপড়েনের সম্ভাবনা নেই। কারণ, ভগবন্ত মান দলের শীর্ষ নেতা কেজরীওয়ালের নীতি মেনেই কাজ করবেন।
পঞ্জাবের এক আপ নেতা বলেন, ‘‘আপ-এর পঞ্জাবের সাংসদ, বিধায়কদের মধ্যে একমাত্র ভগবন্ত মানই কেজরীওয়ালের কথা মেনে চলেছেন। তাছাড়া, কেজরীওয়াল যে পঞ্জাবের নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে রাখতে চান, তা বুঝিয়ে দিতে তিনি নিজেই পঞ্জাবের ভোটের দায়িত্ব সামলেছেন। সঙ্গে রেখেছেন তাঁর সব থেকে বিশ্বস্ত রাঘব চাড্ডাকে। ফলে মান মুখ্যমন্ত্রী হলেও কেজরীওয়ালই নিয়ন্ত্রণ করবেন।’’ চাড্ডা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘পঞ্জাবের মানুষ কেজরীওয়াল-মান জুটিকেই ভোট দিয়েছেন।’’ উত্তরাখণ্ড, গোয়াতেও আপ লড়তে গিয়েছিল। চাড্ডার কথায়, ‘‘এই দুই রাজ্যেও আপ-এর ভোটের হার বাড়বে। কারণ, যে সব রাজ্যের মানুষ চিরাচরিত কংগ্রেস, বিজেপি বা অন্য আঞ্চলিক দল নিয়ে হতাশ, তাঁরা আমাদের রাজনৈতিক
স্টার্ট-আপ নিয়ে ভাবছেন।’’
পঞ্জাবে মানুষের মধ্যে আগ্রহ এবং বুথফেরত সমীক্ষা দেখে আপ-নেতারা চণ্ডীগড়ের গদি নিয়ে নিশ্চিত। তবে কংগ্রেস, অকালি দলের নেতারা মনে করছেন, আপ বাস্তবে সরকার গড়ার মতো আসন জিততে পারবে না। তাঁদের যুক্তি, আপ-এর যেখানে শক্তি বেশি, সেই মালয়া অঞ্চলেই ভোট কম পড়েছে। সার্বিক ভাবেই এ বার পঞ্জাবে ভোটের হার কম। ফলে চতুর্মুখী লড়াইয়ে ভোট ভাগাভাগি হয়ে শেষ পর্যন্ত কে কত আসনে জিতবে, তা বলা কঠিন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy