ভোটার তালিকায় ‘ভূতের বাসা’ রয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলের সর্বময় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের শাসকদল জাতীয় নির্বাচন কমিশনে স্মারকলিপি দিয়ে এই দাবিও জানিয়ে এসেছে যে, কেন পাসপোর্ট, আধার কার্ডের মতো ভোটার কার্ডের (এপিক) ‘ইউনিক’ নম্বর থাকবে না? সেই আবহেই আগামী মঙ্গলবার আধার কার্ডের সঙ্গে এপিক কার্ডের সংযুক্তিকরণের বিষয়ে বৈঠক ডাকল জাতীয় নির্বাচন কমিশন।
মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার ওই বৈঠক ডেকেছেন। বৈঠকে থাকবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব, আধার কমিশনের সিইও, সংসদ বিষয়ক মন্ত্রের সচিব এবং কেন্দ্রীয় আইনসচিব। সমস্ত জাতীয় ও আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের থেকেও কমিশন ওই বিষয়ে মতামত এবং পরামর্শ চেয়েছে। বলা হয়েছে, ওই মতামত যেন আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে পাঠানো হয় কমিশনের কাছে। মনে করা হচ্ছে, সংযুক্তিকরণের বিষয়ে ‘নীতিগত’ সিদ্ধান্ত নিতে পারে কমিশন। তা বাস্তবায়িত করতে হলে প্রক্রিয়া কী হবে, সে বিষয়েও প্রাথমিক আলোচনা হতে পারে মঙ্গলবারের বৈঠকে।
‘ভূতুড়ে ভোটার’ তথা একই এপিক নম্বরে একাধিক জনের নাম থাকার প্রসঙ্গ প্রথম তুলেছিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি নেতাজি ইন্ডোরে তৃণমূলের সভায় মমতা একাধিক উদাহরণ দিয়ে ওই অভিযোগ তোলেন। তার পরে তৃণমূলের প্রতিনিধিদল নির্বাচন কমিশনে যায়। কমিশনকে দেওয়া স্মারকলিপিতে তৃণমূল লিখেছিল, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিষয়টি না উত্থাপন করা পর্যন্ত কেন বছরের পর বছর ধরে বিষয়টি চেপে রাখা হয়েছিল?’ উল্লেখ্য, মমতার অভিযোগের পরেই পাঁচ দিনের মধ্যে জোড়া বিবৃতি দিয়ে কমিশন স্বীকার করেছে যে, এক এপিক নম্বরে একাধিক রাজ্যে ভোটার কার্ড রয়েছে। প্রসঙ্গত, তৃণমূলের তোলা অভিযোগ সমর্থন করেছে কংগ্রেস, এনসিপির মতো দলও। অ-বিজেপি একাধিক দলের বক্তব্য, একই এপিক নম্বরে বিভিন্ন রাজ্যে কী ভাবে ভোটারের নাম থাকতে পারে? এর ফলে সরাসরি নির্বাচনী বিধির ২৮ নম্বর ধারা লঙ্ঘিত হচ্ছে। দিল্লিতে তোলপাড় শুরু হওয়ার পরেই কমিশন খানিকটা নড়চড়ে বসেছিল। এ বার আধারের সঙ্গে এপিক সংযুক্তিকরণের বিষয়ে বৈঠকও চূড়ান্ত করে ফেলল নয়াদিল্লির নির্বাচন সদন।