স্থানীয় ক্রিকেট ম্যাচ ঘিরে উত্তেজনা। তার মধ্যে পাকিস্তান জিন্দাবাদ বলার দায়ে গণপ্রহারে প্রাণ হারাতে হল এক ব্যক্তিকে। কর্নাটকের মেঙ্গালুরুর ঘটনা। পুলিশ ১০ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে।
রবিবার দুপুরে কুড়ুপু গ্রামের কাছে একটি ক্রিকেট ম্যাচের আসর বসেছিল। সেখানেই দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়ায়। জনৈক ব্যক্তি পাকিস্তান জিন্দাবাদ স্লোগান দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। পহেলগাম-পরবর্তী উত্তপ্ত আবহে তাতেই আগুনে ঘি পড়ে। ১০-১২ জন যুবক তাঁকে ঘিরে ধরে এলোপাথাড়ি মারতে থাকে। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয়। প্রায় দু’ঘণ্টা পরে খবর পেয়ে পুলিশ এসে একটি মন্দিরের কাছ থেকে মরদেহ উদ্ধার করে। ময়না তদন্তে বেরিয়ে আসে, উপর্যুপরি আঘাত এবং চিকিৎসার অভাবেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। প্রধান অভিযুক্ত সচিন নামে এক যুবক সহ মোট ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। স্থানীয় যুবক দীপকের দায়ের করা এফআইআরে মোট ১৯ জনের নাম রয়েছে। কর্নাটকের পুলিশমন্ত্রী জি পরমেশ্বর ঘটনাটিকে গণধোলাইয়ে মৃত্যুর ঘটনা বলেই মেনে নিয়েছেন। পুলিশ প্রথমে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা শুরু করলেও ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেয়ে খুনের মামলা রুজু করে।
নাগপুরে এক কাশ্মীরি ছাত্রকে মারধর করার ঘটনা নিয়েও কিছুটা চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। রবিবার ফার্মেসি প্রথম বর্ষের দুই ছাত্র হস্টেলে ফেরার পথে নিগৃহীত হয়। তারা কাশ্মীরের ডোডা জেলার বাসিন্দা। রাস্তায় কিছু লোক ঘিরে ধরে একটি ছাত্রকে মারধর করে। অন্য ছাত্রটি তখন শৌচাগারে ছিল। সে ফিরে এসে সতীর্থকে বাঁচায়। কলেজ ছাত্র জানার পরে তাদের যেতে দেওয়া হয়। দুই ছাত্র পুলিশে অভিযোগ না করলেও জম্মু-কাশ্মীর স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনকে বিষয়টি জানায়। সংস্থার তরফে নাসির খুয়েহামি ঘটনাটি এক্স হ্যান্ডলে লেখেন এবং মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডনবীসের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। সংবাদমাধ্যমের সামনে ছাত্র দু’জন ঘটনাটিকে ঘৃণার বহিঃপ্রকাশ বলে উল্লেখ না করলেও দেশের নানা প্রান্ত থেকে কাশ্মীরি পড়ুয়াদের ভীতির কথা সামনে আসছে। মঙ্গলবার পিডিপি-প্রধান মেহবুবা মুফতি বলেন, বিভেদ তৈরি করা শক্তিগুলিকে চিহ্নিতকরতে হবে এবং তাদের শক্ত হাতে মোকাবিলা করতে হবে। জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর মতে,পহেলগাম হানার পরে সমাজমাধ্যমে সাম্প্রদায়িক ঘৃণা ছড়ানো, বিভেদকারী শক্তিদের কঠোর ভাবে মোকাবিলা করা প্রয়োজন। তিনি এ দিন জানিয়েছেন, বিভিন্ন জায়গায় বসবাসকারী কাশ্মীরি পড়ুয়াদের থেকে ফোন পেয়েছেন তিনি। তাঁরা আতঙ্কে রয়েছেন বলে দাবি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)