Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Durga Puja 2022

মেঘের দেশে শেলা নদীর পারে অন্য পুজো! খাসি জনজাতির মেয়েদের হাতেই দুর্গা আরাধনার আয়োজন

বাঙালির কাছে পর্যটনকেন্দ্র হিসাবে পরিচিত চেরাপুঞ্জির মিশনে এই পুজো শুরু করেছিলেন প্রয়াত প্রভানন্দ মহরাজ। পুজো দেখার পাশাপাশি বাড়তি পাওনা শেলা নদীর পারে বসে মেঘলা পাহাড় আর রংবেরঙের প্রজাপতি দেখা।

চেরাপুঞ্জির রামকৃষ্ণ মিশনে দুর্গাপুজো।

চেরাপুঞ্জির রামকৃষ্ণ মিশনে দুর্গাপুজো। ছবি: তন্ময় দাশগুপ্ত

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২২ ১৬:১০
Share: Save:

মেঘের দেশ মেঘালয়। তারই মধ্য়ে বৃষ্টির দেশ চেরাপুঞ্জি। তারই কাছে শেলা নদীর ধারে গ্রামের নাম শেলাপুঞ্জি। সেখানে রামকৃষ্ণ মিশনের পুজো বৈদিক নিয়মে হলেও প্রায় ১০০ বছর ধরে এক অন্য রকম প্রথা চলে আসছে। সাধারণ ভাবে মিশনের পুজোয় ব্রাহ্মণ ও সন্ন্যাসীদের অংশগ্রহণ থাকলেও মেঘালয়ের খাসি জনজাতির বিবাহিত বা অবিবাহিত মহিলারাও অংশ নিয়ে পারেন। তাঁরাই করেন পুজোর জোগাড়। পুজোয় অবশ্য বসেন সন্ন্যাসীরাই।

বাঙালির কাছে পর্যটনকেন্দ্র হিসাবে পরিচিত চেরাপুঞ্জির মিশনে এই পুজো শুরু করেছিলেন প্রয়াত প্রভানন্দ মহরাজ। যিনি কেতকী মহরাজ নামেই পরিচিত ছিলেন। প্রথম থেকেই স্থানীয় জনজাতি মানুষদের নিয়ে শুরু হয় পুজো। এটিই মেঘালয়ের প্রথম দুর্গাপুজো।

চারিদিকে গভীর রেইন ফরেস্ট। মাঝ দিয়ে বয়ে চলেছে শেলা নদী। সেই শেলাপুঞ্জি গ্রামে মাঝেমধ্যেই ধস নামে। তখন শিলং বা চেরাপুঞ্জির সঙ্গে কোনও রকম যোগাযোগ থাকে না। সেই সময় ইন্টারনেট দূরের কথা বিদ্যুতের যোগাযোগও থাকে না দিনের পর দিন। আশপাশের গ্রামজুড়ে বাঙালির বাস হাতে গোনা। খাসি জনজাতির মানুষের বাসই বেশি। প্রত্যন্ত সেই গ্রাম সারাটা বছর অপেক্ষায় থাকে মিশনের এই পুজোর জন্য।

বৈদিক মতে পুজো হয় রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনে। সন্ন্যাসী, ব্রহ্মচারী ও স্বেচ্ছাসেবকেরাই মিশনের পুজোর কাজ করেন। সরাসরি কোনও মহিলা-আচার অনুষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন না। কিন্তু শেলা রামকৃষ্ণ মিশনে ব্যতিক্রম। খুবই কম সংখ্যার সন্ন্যাসী ও ব্রহ্মচারী এবং স্বেচ্ছাসেবকের সঙ্গে এখানকার বাসিন্দা মহিলারা পুজোর কাজ করেন। রান্নাও করেন মহিলারা। পুজোর আবহ অন্য রকম করে দেয় বাংলার পাশাপাশি খাসি ভাষার গান।

আশপাশের পাহাড়িগ্রাম থেকে শেলা নদীর পারের আশ্রমে পুজোর ক’দিন আসেন অনেক মানুষ। সেই সঙ্গে মিশনের পুজো দেখতে কলকাতা, শিলচর, গৌহাটি, শিলং থেকে অনেক বাঙালিও আসেন। তবে এই পুজোয় বিশেষ আড়ম্বর নেই। জানালেন চেরাপুঞ্জি রামকৃষ্ণ মিশনের সেক্রেটারি স্বামী অনুরাগানন্দজি। তিনি বলেন, ‘‘কোনও রামকৃষ্ণ মিশনেই এমন ব্যতিক্রমী দুর্গাপুজো দেখা যায় না। কারণ, অন্যান্য মিশনে সাধু-ব্রহ্মচারী ও অন্যান্য পুরুষ স্বেচ্ছাসেবকরাই সাধারণত পুজোর কাজে অংশ করে থাকেন। কিন্তু এইখানে মায়েরা মাতৃবন্দনায় সরাসরি অংশগ্রহণ করেন। এ ছাড়াও অনেক প্রাকৃতিক প্রতিকূলতা সত্ত্বেও এই মাতৃবন্দনা এই অঞ্চলের সকল খাসি ও অনান্য জনজাতি এবং বাঙালিদের কাছে খুব প্রিয়।’’ মহারাজ আরও জানান, যাঁরা এই সময়ে আসেন তাঁদের এই ঐতিহ্যপূর্ণ পুজো দেখার পাশাপাশি বাড়তি পাওনা হয়, শেলা নদীর পারে বসে মেঘলা পাহাড় আর রংবেরঙের প্রজাপতি দেখা।

অন্য বিষয়গুলি:

Durga Puja 2022 meghalaya
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy