হিন্দি ছবি দেখছেন কুকি-জো-মারেরা। —নিজস্ব চিত্র।
হাউ ইজ় দ্য জোশ? হাই স্যার!
এক দিবসের এত ব্যঞ্জনা শেষ কবে দেখেছে মণিপুর!
এ বছর এত রক্তপাত, এত হিংসা, এত ঘরপোড়া অসহায়তার পরেও নিজেদের ভারতীয় প্রমাণ করার এক দাঁতচাপা লড়াই ছুঁড়ে দেওয়া হয়েছে কুকিদের সামনে। সেই তাগিদেই হিন্দি ছবিকে নিখাদ ভারতীয়ত্বের কষ্টিপাথর হিসেবে বেছে নিলেন পাহাড়ের বাসিন্দা কুকি-জো-মার সম্প্রদায়ের লোকেরা। ২৩ বছরে ব্যবধানে মণিপুরে প্রকাশ্যে প্রদর্শিত হল হিন্দি সিনেমা। চূড়াচাঁদপুর জেলার রেংকাইয়ের মাঠে প্রথম ছবি হিসেবে বেছে নেওয়া হল ‘উরি-দ্য সার্জিকাল স্ট্রাইক’কে। এবং, সরকারি নির্দেশ নয়, প্রাণের তাগিদেই জো-কুকিদের সব জানালা, বারান্দা সেজে উঠল তেরঙায়। পূর্ণ জোশ-এ!
কুকি জনজাতিদের একটি যৌথ মঞ্চ এমনও ঘোষণা করেছে, কেন্দ্র পৃথক প্রশাসনের দাবি মানুক বা না মানুক, এই ১৫ অগস্ট তারা মেইতেই বশ্যতা থেকে স্বাধীন হওয়ার দিন হিসেবে উদযাপন করছে।
নিষিদ্ধ হওয়ার আগে শেষ যে বলিউডি হিট মণিপুর মাতিয়েছিল- তা হল ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’। অঞ্জলি-রাহুল তাই সেখানকার মানুষের নস্টালজিয়ায়। এ দিন স্বাধীনতা দিবসের দ্বিতীয় ছবি হিসেবে সেই কে২এইচ২-কেই বেছে নেন কুকিরা।
২০০০ সালে মণিপুরি জঙ্গি সংগঠন পিএলএ-র নিষেধাজ্ঞায় রাজ্যে হিন্দি ছবি দেখানো ও সিংহভাগ হল বন্ধ হয়ে যায়। বাকিগুলিতে শুধুই মুক্তি পেয়েছে মেইতেই সিনেমা। এমনকি, ঘরের মেয়ে মেরি কমকে নিয়ে সিনেমার শুটিংও সম্ভব হয়নি মণিপুরে। ছবিটি বড় পর্দায় দেখা থেকেও বঞ্চিত হয়েছেন মণিপুরবাসী।
কুকিরা তাই সেই হিন্দি ছবি, বকলমে হিন্দি ভাষাকে ভারতীয় হওয়ার পরাকাষ্ঠা হিসেবে তুলে ধরতে চাইলেন ৭৭ তম স্বাধীনতা দিবসে।
মঙ্গলবার সকাল থেকে কুকি এলাকায় মহা সমারোহে স্বাধীনতা দিবস পালিত হয়। গ্রামরক্ষীরা কালো পোশাকে, হাতে হাতে নকল রাইফেল নিয়ে নামলেন কুচকাওয়াজে! মেইতেই জঙ্গিদের যৌথ মঞ্চ এ বারেও স্বাধীনতা দিবস বয়কটের ডাক দিয়েছে। জবাবে, কুকিরা মেইতেই জঙ্গিদের হাতে নিহত নিরাপত্তাবাহিনীর খতিয়ান তুলে ধরেছে দেশের সামনে। মেইতেইরা আবার মণিপুরের স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করেন এক দিন আগে। কারণ ১৯৪৭ সালের ১৪ অগস্ট ইংরেজরা মণিপুরের রাজার হাতে শাসনভার তুলে দিয়েছিল। তার দু’বছর পরে মণিপুর ভারতের অংশ হয়। তাই, ১৪ অগস্ট মণিপুরের পতাকা উত্তোলন করে মেইতেই রাজা ও মুখ্যমন্ত্রীরা মণিপুরের স্বাধীনতা দিবস পালন করেন। কুকিরা স্বাধীনতার দিন নিয়ে এই ‘ওরা-আমরা’র কুমীরডাঙা তুলে ধরেও কেন্দ্রের মন জিততে চাইছে। এ দিকে ইম্ফলে স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ যুযুধান দুই পক্ষের কাছে ‘ভুলে যাওয়া ও ক্ষমা করা’র আহ্বান জানালেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy