সুপ্রিম কোর্ট। —ফাইল চিত্র।
জম্মু ও কাশ্মীরের সংবিধান পরিষদের মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার পরে রাষ্ট্রপতির সংবিধানের ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদ রদ করার ক্ষমতা বজায় ছিল। আজ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় প্রাথমিক ভাবে সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদের এমনই ব্যাখ্যা করেছেন।
আজ থেকে সুপ্রিম কোর্টে পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চে জম্মু ও কাশ্মীরের ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদ রদের বিরুদ্ধে মামলার শুনানি শুরু হয়েছে। মোদী সরকার দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পরে ৩৭০ রদের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এই অনুচ্ছেদেই জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদার কথা বলা ছিল। একই সঙ্গে জম্মু ও কাশ্মীর ভেঙে দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল তৈরি হয়। গত চার বছর ধরে এই সিদ্ধান্তের সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে একগুচ্ছ মামলা জমে ছিল। সোম ও শুক্রবার বাদে প্রতিদিন এই মামলার শুনানি হবে বলে ঠিক হয়েছে।
মামলাকারীদের তরফে বাঘা বাঘা আইনজীবী সওয়াল করার জন্য মোট ৬০ ঘণ্টা সময় চেয়েছেন। আজ প্রথম দিনের শুনানিতে মামলাকারীদের তরফে আইনজীবী কপিল সিব্বল অভিযোগ তুলেছেন, ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ করে ও পূর্ণ রাজ্যকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করে সংসদ রাজ্যের বিধানসভার ক্ষমতা নিজের হাতে তুলে নিয়েছিল। সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছিল, রাষ্ট্রপতি ওই অনুচ্ছেদ রদ করতে পারেন। কিন্তু একই সঙ্গে তার জন্য জম্মু ও কাশ্মীরের সংবিধান পরিষদের সুপারিশ প্রয়োজন বলেও শর্ত ছিল। আজ প্রধান বিচারপতি বলেছেন, সংবিধান পরিষদ কোনও ভাবেই সংসদ বা সুপ্রিম কোর্টের মতো স্থায়ী সংস্থা নয়। কোনও সংবিধান পরিষদ অনির্দিষ্ট কালের জন্য থাকতে পারে না। জম্মু ও কাশ্মীরের সংবিধান পরিষদ রাজ্যের সংবিধান তৈরির জন্য গঠন হয়েছিল। তার মেয়াদ ফুরোনোর পরে রাষ্ট্রপতির হাতেই ক্ষমতা ছিল।
সিব্বল প্রশ্ন তুলেছেন, রাষ্ট্রপতির হাতে কি অসীম ক্ষমতা থাকতে পারে? জম্মু ও কাশ্মীরের মানুষের ইচ্ছেকে কি খাঁচাবন্দি করে, তাঁদের মুখ বন্ধ করে দেওয়া যায়? গত পাঁচ বছরে জম্মু ও কাশ্মীরে কোনও প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্র নেই। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার মোড়কে গণতন্ত্রকে শেষ করে দেওয়া হয়েছে। অন্য দেশীয় রাজ্যের থেকে জম্মু ও কাশ্মীরের ভারতে যুক্ত হওয়ার ইতিহাস আলাদা। সেই সম্পর্ককে কি এ ভাবে পরিত্যাগ করা যায়? তিনি অভিযোগ করেন, রাজ্যের বিধানসভা ভেঙে দিয়ে রাজ্যপাল রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিজের হাতে তুলে নিয়েছিলেন। বিধানসভা বা জম্মু-কাশ্মীরের সংবিধান পরিষদের বদলে সংসদ কী ভাবে ৩৭০ রদের সুপারিশ করতে পারে?
জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা নিজে এ দিন সুপ্রিম কোর্টে হাজির ছিলেন। তাঁর সঙ্গে আর এক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি আশা প্রকাশ করেছেন, সুপ্রিম কোর্ট কাশ্মীরের মানুষের অবস্থান বুঝবে বলে তাঁরা আশা করছেন। সিব্বল অভিযোগ করেছেন, ৩৭০ রদের আগে কোনও আলোচনা না করে আচমকা সংসদে ঘোষণা করা হয়। কেন্দ্র
সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে জানিয়েছিল, ৩৭০ রদের পরে জম্মু ও কাশ্মীরে শান্তি বিরাজ করছে। সুপ্রিম কোর্ট অবশ্য জানিয়েছে, তারা এর মধ্যে ঢুকবে না। শুধুমাত্র সাংবিধানিক বৈধতাটি বিচার হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy