অভিযুক্ত ৭৪ বছরের প্রবীণ সমাজকর্মী। প্রতীকী ছবি।
অভিযোগকারিণীর পোশাক ‘যৌন উস্কানিমূলক’। এই যুক্তিতে যৌন হেনস্থার একটি মামলায় অভিযুক্তের আগাম জামিন মঞ্জুর করল কোঝিকোড়ের একটি জেলা আদালত।
অভিযুক্ত ৭৪ বছরের প্রবীণ সমাজকর্মী এবং মালয়ালম ভাষার সাহিত্যিক সিভিক চন্দ্রন।
চন্দ্রনের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনে গত ২৯ জুলাই ৩৫৪ এ (২), ৩৪১, ৩৫৪ ধারায় মামলা দায়ের করেছিলেন এক তরুণ লেখিকা। অভিযোগ, ২০২০ সালে কেরলের নন্দী সৈকতে চন্দ্রনের আয়োজিত একটি ক্যাম্পে যোগ দিয়ে তিনি হেনস্থার শিকার হন। অনুষ্ঠানের শেষে তাঁর হাত ধরে নির্জন স্থানে জোর করে টেনে নিয়ে যান অভিযুক্ত। তাঁকে কোলে বসার জন্যে জবরদস্তি করেন চন্দ্রন। তাঁর শরীরে স্পর্শ করেন।
এই মামলায় আদালতে চন্দ্রনের আগাম জামিনের আর্জি জানানোর পাশাপাশি অভিযোগকারিণীর সোশ্যাল মিডিয়া থেকে তাঁর কিছু ছবি নিয়ে তা পেশ করেছিলেন চন্দ্রনের আইনজীবী। সেগুলি দেখার পরে বিচারক এস কৃষ্ণ কুমার বলেছেন, ‘‘অভিযোগকারিণী যৌন উস্কানিমূলক পোশাক পরেছেন। এর পরে ২৫৪ এ ধারায় যৌন হেনস্থার অভিযোগটি আর দাঁড়ায় না। ওই ধারায় অভিযোগ প্রমাণ করতে গেলে হেনস্থাকারীর নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য থাকতে হবে। অভিযোগকারিণী ও অভিযুক্তের মধ্যে শারীরিক স্পর্শ ঘটবে। কিংবা অভিযুক্ত যৌনধর্মী মন্তব্য করেছেন, এমন প্রমাণ থাকা জরুরি।’’
আদালত আরও জানায়, ৭৪ বছর বয়সি ও প্রতিবন্ধী চন্দ্রন ওই তরুণীকে জোর করে কোলে বসিয়েছেন, বলপ্রয়োগ করেছেন— এ কথা বিশ্বাসযোগ্য নয়। সুতরাং এ ক্ষেত্রে অভিযুক্ত আগাম জামিন পেতেই পারেন।সমস্ত অভিযোগ নস্যাৎ করেছেন চন্দ্রন নিজেও। তাঁর আইনজীবীর দাবি, চন্দ্রনের শক্ররা ষড়যন্ত্র করে তাঁকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। আইনজীবী জানান, ঘটনার দিন তরুণীর প্রেমিক ও অন্যান্যেরা ওই ক্যাম্পে ছিলেন। কেউ কোনও অভিযোগ তোলেননি। তা, ছাড়া ওই ঘটনার এত দিন পরে কেন অভিযোগ জানানো হল, সে বিষয়েও তিনি প্রশ্ন তোলেন। সেই প্রসঙ্গে আদালত জানিয়েছে, অভিযোগকারিণী এক জন শিক্ষিতা মহিলা। যৌন হেনস্থার অভিযোগ ও তার ফলাফল সম্পর্কে তিনি ওয়াকিবহাল। নিয়ম অনুযায়ী, অভিযোগ জানাতে এত দেরি হলে তার ব্যাখ্যাও জানাতে হয়। এ ক্ষেত্রে তেমন কোনও ব্যাখ্যা মেলেনি।
প্রসঙ্গত, এ মাসের গোড়ায় আরও একটি যৌন হেনস্থার মামলায় চন্দ্রন আগাম জামিন পেয়েছেন। অভিযোগকারীণীর আইনজীবী আদালতে সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে বলেন, ‘‘যৌন হেনস্থা করা ওঁর (চন্দ্রনের) স্বভাব। আরও অনেকেই এ নিয়ে মুখ খুলতে চলেছেন।’’
তবে অভিযোগকারিণীর পোশাক নিয়ে আদালতের পর্যবেক্ষণে কার্যত হতাশ কেরলের মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন এবং বাম নেত্রী পি সাথীদেবী। তিনি বলেন, ‘‘মেয়েদের পোশাকের দিকে আঙুল তুলে অন্যায়কেই যেন সমর্থন করা হল। এটা দুর্ভাগ্যজনক। যৌন হেনস্থার অন্য মামলাগুলির ক্ষেত্রে এই রায় ভুল বার্তা দেবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy