রামমন্দির চত্বরে ভিড় ঠেকানোর আপ্রাণ চেষ্টা পুলিশের। মঙ্গলবার অযোধ্যায়। ছবি: রয়টার্স।
এত দিন তাঁদের ভক্তিরসই রসদ জুগিয়েছে রামমন্দির-উন্মাদনার। ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’র ঠিক এক দিন পর সেই রামভক্তদের দিকেই লাঠি নিয়ে তেড়ে গেল অযোধ্যার পুলিশ। রামমন্দিরের উদ্বোধনের পরে মঙ্গলবারই ভক্তদের দর্শনের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছিল অযোধ্যার রামমন্দিরের দরজা। সেখানে লক্ষাধিক ভক্তের জমায়েতে পরিস্থিতির এতটাই অবনতি হয় যে লখনউ থেকে ছুটে আসতে হয় উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে। প্রথমে হেলিকপ্টারে অযোধ্যার পরিস্থিতি ঘুরে দেখেন যোগী। পরে পৌঁছন রামমন্দিরের ভিতরেও।
মঙ্গলবার সকাল ৭টায় রামমন্দিরের দরজা খোলার কথা ছিল জন সাধারণের জন্য। একে মঙ্গলবার রামভক্তদের জন্য পবিত্র দিন। তার উপর রামমন্দিরের দরজা খুলছে প্রথমবারের জন্য। কনকনে শীতেও ভক্তরা সরযূ নদীতে ডুব দিয়ে ভোর ৩টের সময় পৌঁছে যান মন্দিরের তোরণের সামনে। প্রায় লাখখানেক ভক্তের ভিড়ের চাপে সময়ের আগেই রামমন্দিরের দরজা খুলে দেওয়া হয়। কিন্তু তার পরেও সামলানো যায়নি ভক্তদের স্রোত। চর্মচক্ষে রামলালার দর্শন পেতে পাগলের মতো ধাক্কাধাক্কি শুরু হয় মন্দির চত্বরে। পদপিষ্ট হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়। ভক্তদের রুখতে পুলিশ এবং নিরাপত্তারক্ষীরা একটা সময় লাঠি নিয়ে তেড়ে যান ভক্তদের দিকে। উদ্বোধনের এক দিনের মধ্যেই চূড়ান্ত বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয় রাম মন্দির চত্বরে। সেই বিশৃঙ্খলার খবর পৌঁছয় লখনউয়েও।
মুখ্যমন্ত্রী প্রথমেই ঘটনাস্থলে পাঠান উত্তরপ্রদেশের স্বরাষ্ট্র দফতরের মুখ্য সচিব সঞ্জয় প্রসাদ এবং উত্তরপ্রদেশ পুলিশের বিশেষ ডিজি (আইন ও শৃঙ্খলা) প্রশান্তকুমারকে। তাঁরাই গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। ডিজি জানান, দুপুর ৩টে পর্যন্ত আড়াই থেকে তিন লক্ষ ভক্ত রামলালার দর্শন করেছেন। আরও বহু ভক্ত তখনও দর্শনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন লাইনে দাঁড়িয়ে। পরিস্থিতি যাতে আর নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে না যায়, তাই ৮০০০ নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করা হয়েছে মন্দির চত্বরে। অযোধ্যামুখী সমস্ত বাসের মুখ ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অযোধ্যাগামী সমস্ত রাস্তা ৪-৫ কিলোমিটার আগে থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। একমাত্র যাঁরা পায়ে হেঁটে আসছেন, তাঁরাই লাইনে দাঁড়িয়ে রামলালার দর্শন করতে পারবেন। এ ছাড়া লখনউ-সহ অযোধ্যা সংলগ্ন জেলা প্রশাসনকেও বলা হয়েছে অযোধ্যায় যেন আপাতত কোনও পর্যটককে ঢুকতে না দেওয়া হয়। একই নির্দেশ দেওয়া হয় উত্তরপ্রদেশের পরিবহণ বিভাগেও। এছাড়া রামমন্দির চত্বরেও ভক্তদের শান্ত করার জন্য, নিরন্তর শুরু হয় মাইকে ঘোষণা। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
বিকেল ৪টে নাগাদ হেলিকপ্টারে অযোধ্যার ভিড় মোকাবিলা ব্যবস্থা পরিদর্শন করতে আসেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী। পরে রামমন্দিরের ভিতরেও প্রবেশ করেন তিনি। সেখান থেকেই ভক্তদের আশ্বস্ত করেন যোগী। সেই সঙ্গে জানান ভক্তরা প্রত্যেকেই দর্শন করতে পারবেন। তবে একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে প্রশাসনিক স্তরে নির্দেশ দেওয়া হয়, অযোধ্যার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসা অবধি ভিড় মোকাবিলার যা যা পদক্ষেপ করা হয়েছে, তা আপাতত জারি থাকবে।
উদ্বোধনের দু’দিন আগে উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন জানিয়েছিল, কুম্ভমেলা হলে যা যা ব্যবস্থা থাকে সেই সব ব্যবস্থাই করা হয়েছে অযোধ্যায় আগত তীর্থযাত্রীদের ভিড় এবং তাঁদের প্রয়োজন সামলাতে। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল প্রথম দিনেই রাম-গোলযোগের মুখে পড়ে গোল খেল সেই বন্দোবস্ত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy