ফাইল চিত্র।
করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে মারা গিয়েছেন, এমন ৬০ শতাংশেরও বেশি মানুষ প্রতিষেধক নেননি কিংবা প্রতিষেধকের মাত্র একটি ডোজ় নিয়েছেন— এমন তথ্য উঠে এল একটি বেসরকারি হাসপাতালের সমীক্ষায়।
চিকিৎসক সন্দীপ বুদ্ধিরাজার নেতৃত্বে ম্যাক্স হেলথকেয়ার নামে ওই সংস্থাটি এই সমীক্ষা চালিয়েছে। চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। মৃতদের অধিকাংশের বয়সই ৭০-এর বেশি। ক্যানসার, কিডনির সমস্যা, ডায়াবিটিস-সহ একাধিক কোমর্বিডিটি ছিল তাঁদের বলে জানিয়েছে সমীক্ষা। সমীক্ষক সংস্থার হাসপাতালে মোট ৮২ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনার নয়া ঢেউয়ে। মৃতদের মধ্যে ৬০ শতাংশেরও বেশি মানুষের দু’ডোজ় টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়নি। দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈনও এ দিন জানিয়েছেন, করোনায় মৃতদের অধিকাংশেরই হয় কো-মর্বিডিটি ছিল কিংবা টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়নি।
করোনার তিনটি ঢেউয়ের তুলনামূলক সমীক্ষায় ওই বেসরকারি সংস্থাটি জানিয়েছে, তৃতীয় ঢেউয়ে মাত্র ২৩.৪ শতাংশ রোগীর অক্সিজেন সহায়তা প্রয়োজন হয়েছে। দ্বিতীয় ও প্রথম ঢেউয়ে এই সংখ্যাটা ৭৪ ও ৬৩ শতাংশ। অন্য দিকে মৃত্যুর নিরিখে চলতি ঢেউয়ে রোগীমৃত্যু
কম। তৃতীয় ঢেউয়ে মৃত্যু হয়েছে ৬ শতাংশ রোগীর। কিন্তু দ্বিতীয় ও প্রথম ঢেউয়ে এই পরিসংখ্যান যথাক্রমে ১০.৫ ও ৭.২ শতাংশ।
করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে প্রথম দু’টি ঢেউয়ের তুলনায় হাসপাতালে রোগী ভর্তির সংখ্যাও অনেকটাই কমেছে। এমনই দাবি করা হয়েছে সমীক্ষায়। ওই সমীক্ষা থেকে জানা যাচ্ছে, দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়ে যখন দিল্লিতে দিনে ২৮ হাজার জন আক্রান্ত হচ্ছিলেন তখন দিল্লির সব হাসপাতাল ভর্তি ছিল। আইসিইউয়ের বেড খালি ছিল না। বর্তমান ঢেউয়ের সময়ে যখন দিল্লিতে প্রতিদিন একই সংখ্যায় ব্যক্তি আক্রান্ত হয়েছেন তখন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন অনেক কম রোগী। অক্সিজেনও লেগেছে কম রোগীর।
এ দিকে ন্যাশনাল টেকনক্যাল অ্যাডভাইজ়রি গ্রুপ অন ইমিউনাইজেশনের সুপারিশ, কোনও ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হলে সেরে ওঠার অন্তত তিন মাস পরে তাঁকে প্রতিষেধক দেওয়া যেতে পারে। এই সুপারিশ বুস্টার ডোজ়ের
ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। কেন্দ্রের তরফেও রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে এই বিষয়টি চিঠি দিয়ে ইতিমধ্যেই জানানো হয়েছে।
মহারাষ্ট্রে সোমবার থেকে স্কুল খোলার ঘোষণা করা হলেও একটি অনলাইন সমীক্ষা জানাচ্ছে, ৬২ শতাংশ অভিভাবকই বর্তমান পরিস্থিতিতে তাঁদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে ইচ্ছুক নন। মোট ৪৯৭৬ জন সমীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। তাঁর মধ্যে ৬৭ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৩ শতাংশ মহিলা অভিভাবক। প্রসঙ্গত, ওমিক্রন স্ট্রেনে সংক্রমণে বাড়বাড়ন্তের জেরে গত ৮ জানুয়ারি উদ্ধব ঠাকরের রাজ্যে শিক্ষাঙ্গন বন্ধ করার নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল।
পুণেয় গত কাল সংক্রমিতের সংখ্যা ১৬ হাজারেরও বেশি হওয়ায় সেখানেও অন্তত এক সপ্তাহ পরে স্কুল খুলবে বলে জানিয়েছেন উপ-মুখ্যমন্ত্রী অজিত পওয়ার। উত্তরপ্রদেশ সরকার আজ জানিয়েছে, সেই রাজ্যে স্কুল বন্ধের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত।
গত সপ্তাহে দিল্লি সরকার সমস্ত ল্যাবকে নির্দেশ দিয়েছিল ২০ ঘণ্টার মধ্যে কোভিড পরীক্ষার রিপোর্ট জমা দিতে হবে কোভিড-১৯ রেসপন্স সেন্টারে। সেই নির্দেশ মেনেই এ বার তথ্য দেবে ল্যাবগুলি। এর পাশাপাশি দিল্লি সরকার নির্দেশিকায় জানিয়েছে, সমস্ত তথ্য জেলা ও বিধানসভা কেন্দ্র এবং ওয়ার্ড অনুযায়ী বিন্যস্ত করে পাঠানো হবে। একটি অ্যাপে সেই তথ্য প্রকাশ করা হবে।
রিপোর্ট পাওয়ার ৩০ মিনিটের মধ্যে করোনা পজ়িটিভ রোগীদের সঙ্গে যোগাযোগ করবে কোভিড সেন্টারের টেলি কলিং ইউনিট। রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করার প্রয়োজন হলে এক ঘণ্টার মধ্যে পদক্ষেপ করবে কোভিড সেন্টার। এ ছাড়া রিপোর্ট প্রকাশের চার ঘণ্টার মধ্যে একটি দল কোভিড রোগীর বাড়িতে যাবে। ওই দলই সিদ্ধান্ত নেবে রোগীকে বাড়িতেই বিচ্ছিন্নবাসে রাখা হবে না কি হাসপাতালে ভর্তি করা হবে। প্রয়োজনে ভিডিয়ো মাধ্যমে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করবে পরিদর্শনকারী দলটি। রোগীকে বাড়িতে রাখার ব্যবস্থা হলে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ
তৈরি করে সেখানে তাঁকে জুড়ে দেওয়া হবে। এই গ্রুপেই প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হবে।
আজ স্বাস্থ্য মন্ত্রকের প্রকাশিত বুলেটিনে দেখা যাচ্ছে গত কালের তুলনায় ২.৭ শতাংশ কমেছে সংক্রমণ। অ্যাক্টিভ রোগী পেরিয়েছে ২১ লক্ষের গণ্ডি। যা গত ২৩৭ দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ। দৈনিক সংক্রমণ হার গত কালের (১৭.৯৪%) থেকে সামান্য কমে হয়েছে ১৭.২২%। ওমিক্রন সংক্রমণও প্রথম বার ১০ হাজারের গণ্ডি পেরিয়েছে।
আজ করোনা সংক্রমিত হয়েছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবেগৌড়া। তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy