গত জানুয়ারি মাসে জোশীমঠে এ ভাবেই ফাটল ধরেছিল নানা বাড়িতে। —ফাইল চিত্র।
আবার কি ফাটল-আতঙ্ক ফিরতে চলেছে জোশীমঠে? সেই আশঙ্কাকে উস্কে দিয়ে রবিবার উত্তরাখণ্ডের এই শৈলশহরের একটি মাঠে ৬ ফুট গভীর গর্ত দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। বিষয়টি তাঁরা জানান চামোলি জেলা প্রশাসনকে। উল্লেখ্য যে, জোশীমঠ এই জেলারই অন্তর্ভুক্ত। গত জানুয়ারি মাসে জোশীমঠের একাধিক বাড়িতে বিপজ্জনক ফাটল দেখা যায়। বিপজ্জনক বাড়িগুলি থেকে বাসিন্দাদের হোটেলে এবং অন্যান্য নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনে রাজ্য প্রশাসন। ভারী বর্ষণের কারণে আবার সেই পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা স্থানীয় বাসিন্দাদের।
রবিবার গভীর গর্তটি প্রথম লক্ষ করেন স্থানীয় বাসিন্দা বিনোদ সাকলানি। জোশীমঠের সুনীল ওয়ার্ডের বাসিন্দা এই ব্যক্তির কথায়, “আমি আমার বাড়ির কাছেই একটি ছোট মাঠে ৬ ফুট গভীর গর্ত লক্ষ করি। বর্ষার ভারী বৃষ্টিতেই মাটি বসে গিয়ে এই গর্ত তৈরি হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।” এই প্রসঙ্গে নিজের আশঙ্কার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “বর্ষার মরসুমে আমাদের শহরের আরও ক্ষতি হবে।” আপাতত পাথর এবং মাটি দিয়ে ওই গর্ত বুজিয়ে দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারাই। কিন্তু সমস্যার স্থায়ী সমাধান চাইছেন তাঁরা।
বিনোদ সেই ব্যক্তিদের মধ্যে এক জন, যাঁরা জানুয়ারি মাসে প্রথম জোশীমঠের একাধিক বাড়িতে ফাটল লক্ষ করেন। সেই ভয়ঙ্কর স্মৃতি রোমন্থন করে বিনোদ বলেন, “আমি ৬ জানুয়ারির পর থেকে একটা হোটেলে থাকি। কিন্তু প্রতি দিন আমার বাড়িতে যাই, সেখানে থাকা গরুগুলিকে দেখতে।” তিনি জানান, স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত কিছু ব্যক্তি রবিবার ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। ওই প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, একটা বিশেষজ্ঞ দল গোটা এলাকাটা জরিপ করে দেখবে।
গত জানুয়ারি মাসে জোশীমঠের ৮৬৮টি বাড়িতে ফাটল দেখা যায়। বাড়িগুলির মধ্যে ১৮১টিকে ‘বসবাসের অনুপযুক্ত’ বলে ঘোষণা করে সরকার। বাসিন্দাদের একাংশকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁদের কেউ কেউ এখনও সরকারি আশ্রয় শিবিরে রয়েছেন। এর মধ্যে ১১ দফা দাবি নিয়ে আন্দোলনে বসতে চলেছে ‘জোশীমঠ বাঁচাও সংঘর্ষ সমিতি’। এই সংগঠনের সদস্যরা সম্প্রতি চামোলির জেলাশাসক হিমাংশু খুরানার সঙ্গে দেখা করে তাঁদের দাবিপত্র তুলে দেন। সংগঠনটির প্রধান অতুল সাতি বলেন, “বর্ষায় নতুন করে ফাটল এবং ভাঙনের আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। অথচ সরকারের এ দিকে কোনও হুঁশ নেই। মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দেওয়ার পরেও আমাদের ১১ দফা দাবি মেটানো হয়নি।” নিজেদের দাবি জানাতে সোমবার থেকে অবস্থানে বসতে চলেছেন সংগঠনের সদস্যেরা। প্রসঙ্গত, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে চামোলি জেলায় প্রতি বছর গড়ে ১,২৩০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy