২২ বছরের নাছোড় লড়াইয়ের পর সোনা পেলেন শ্যাম! — প্রতীকী ছবি।
২০০১ সালে ছেলের জন্মদিন উপলক্ষে একাধিক নরম পানীয়ের বোতল কিনেছিলেন মথুরার রেস্তরাঁ মালিক শ্যাম লাভানিয়া। বাড়ি গিয়ে তেমনই একটি বোতল খুলতে গিয়ে দেখা যায় তাতে বাম্পার পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। পুরস্কার ছিল ৫০ গ্রাম ওজনের ২২ ক্যারাটের সোনা। তার পর নয় নয় করে কেটে গিয়েছে ২২টি বসন্ত। আইনি লড়াই শেষে অবশেষে সেই সোনা পেলেন শ্যাম। জয় হল দু’দশকেরও বেশি সময় ধরে তাঁর নাছোড় লড়াইয়ের।
পুরস্কার পেয়েছেন জানতে পেরেই শ্যাম যে দোকান থেকে ঠান্ডা পানীয় কিনেছিলেন, দৌড়ন সেখানে। সেই দোকানদার যোগাযোগ করেন রিটেলার, হোলসেলার এবং সংশ্লিষ্ট ঠান্ডা পানীয়ের সংস্থার সঙ্গে। কিন্তু সোনা আর হাতে পাননি শ্যাম। তার পর শ্যাম দ্বারস্থ হন জেলা ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের। ক্রেতা সুরক্ষা দফতর শ্যামের পক্ষে রায় দেয়। কিন্তু সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চতর ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে যায় ঠান্ডা পানীয় প্রস্তুতকারী সংস্থা। দীর্ঘ লড়াই চলে সেখানে। ঠান্ডা পানীয় প্রস্তুতকারক সংস্থাটির সওয়াল ছিল, ওই পুরস্কার দাবি করার সময়সীমা ছিল ২০০১-এর ৩০ এপ্রিল। কিন্তু শ্যাম নির্ধারিত সেই সময়ের মধ্যে পুরস্কারের দাবি করেননি। তাই তিনি পুরস্কার পাওয়ার দাবিদার হতে পারেন না। শেষ পর্যন্ত পুরস্কার পাওয়ার ২২ বছর বাদে সেই ক্রেতা সুরক্ষা আদালত রায় দেয়, ঠান্ডা পানীয় প্রস্তুতকারক সংস্থাকে পুরস্কারে বলা সোনা দিতে হবে শ্যামকে। পাশাপাশি দিতে হবে জরিমানাও।
অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে শ্যাম বলেন, ‘‘আমার শিক্ষাগত যোগ্যতা খুবই কম। পরিস্থিতির কারণে বেশি দূর পড়তে পারিনি। কিন্তু বহু দিন থেকেই আইন-আদালতের বিষয়ে আমার খুব উৎসাহ। তাই এ ব্যাপারে খুঁটিনাটি বিভিন্ন জিনিস আইনজীবীদের কাছে প্রশ্ন করে জানতে পেরেছি। আমি জানতাম, এ ভাবে পুরস্কার না দেওয়াটা সরাসরি প্রতারণা। তাই মামলা চালিয়ে গিয়েছিলাম। আমাকে অনেকেই মামলা বন্ধ করার কথা বলেছিল। শুনিনি। কারণ, আমি নিশ্চিত ছিলাম, পুরস্কার আমি পাবই। এই ভরসাতেই ২২ বছর ধরে লড়ে গেলাম।’’
জানা গিয়েছে, ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের রায় আসার পরই সংশ্লিষ্ট ঠান্ডা পানীয় প্রস্তুতকারক সংস্থার তরফে শ্যামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। সংস্থা প্রস্তাব দিয়েছিল আদালতের বাইরে বিষয়টি মীমাংসার। কিন্তু শ্যাম তাতে রাজি হননি। তিনি আদালতের লড়াইয়ে জিততে চেয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত তা-ই হল। মাঝখান থেকে জীবন থেকে খরচ হয়ে গেল ২২টি বছর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy