অস্ত্র কিংবা হিংসা দিয়ে পরিবর্তন আনা যায় না। শুধুমাত্র শান্তি এবং উন্নয়নই দিনবদলের একমাত্র পথ। ছত্তীসগঢ়ে নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে ১৬ জন মাওবাদীর মৃত্যুর পর এমনটাই বার্তা দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
শনিবার সকালে ছত্তীসগঢ়ের সুকমায় এক অভিযানে ১৬ জন মাওবাদীর মৃত্যুর ঘটনায় নিরাপত্তাবাহিনীর সাফল্যের প্রশংসা করেছেন শাহ। উদ্ধার হয়েছে প্রচুর পরিমাণে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রও। এর পরেই শাহ বলেন, ‘‘এটি মাওবাদের উপর আর একটি চূড়ান্ত আঘাত।’’ উল্লেখ্য, ২০২৬ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে দেশ থেকে মাওবাদ নির্মূল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার। সেই প্রতিশ্রুতির কথা আরও এক বার মনে করিয়ে দিয়েছেন শাহ। অভিযানের খবর প্রকাশ্যে আসতেই সমাজমাধ্যমে শাহ লেখেন, ‘‘নকশালবাদের উপর আরও এক বার আঘাত নেমে এল! আমাদের নিরাপত্তা সংস্থাগুলি সুকমায় একটি অভিযানে ১৬ জন নকশালকে নিহত করেছে এবং বিপুল পরিমাণে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে আমরা ২০২৬ সালের ৩১ মার্চের আগেই দেশ থেকে নকশালবাদকে নির্মূল করব।’’
আরও পড়ুন:
পাশাপাশি, সশস্ত্র আন্দোলনে জড়িতদেরও বার্তা দিয়েছেন শাহ। তিনি আরও বলেন, ‘‘যাঁদের কাছে এখনও অস্ত্র রয়েছে, তাঁদের প্রতি আমার একটাই আবেদন, অস্ত্র এবং হিংসা কখনও পরিবর্তন আনতে পারে না; কেবল শান্তি এবং উন্নয়নই পারে।’’ গোপন সূত্রে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে শুক্রবার রাতে ছত্তীসগঢ়ের সুকমা-দান্তেওয়াড়া জেলার সীমানায় উপমপল্লি কেরলাপাল এলাকায় জঙ্গলে অভিযান শুরু করে সিআরপিএফ, ডিস্ট্রিক্ট রিজ়ার্ভ গার্ড (ডিআরজি) এবং পুলিশের যৌথবাহিনী। পুরো এলাকা ঘিরে ফেলে শুরু হয় চিরুনিতল্লাশি। বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে জঙ্গলের ভিতর থেকে তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালাতে শুরু করেন মাওবাদীরা। পাল্টা জবাব দেয় বাহিনীও। রাতভর গুলির লড়াইয়ের পর মোট ১৬ জন মাওবাদীর মৃত্যু হয়। তবে নিহত মাওবাদীদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য এখনও জানা যায়নি।
উল্লেখ্য, আগেও ২০২৬ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে দেশকে ‘মাওবাদীমুক্ত’ করার ঘোষণা করেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ। ২০২৩ সালে বিজেপি ছত্তীসগঢ়ের ক্ষমতায় আসার পর থেকেই পুরো শক্তি কাজে লাগিয়ে মাওবাদী দমন অভিযান চলছে। গত ২২ মার্চ সংসদেও সে কথা মনে করিয়ে দিয়েছিলেন শাহ। পাশাপাশি, পরিসংখ্যান উদ্ধৃত করে শাহ জানান, ২০০৪ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ১৬,৪৬৩টি হিংসার ঘটনা ঘটেছে। শহিদ হয়েছেন ১,৮৫১ জন নিরাপত্তা কর্মী। যদিও গত দশ বছরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে হিংসার ঘটনা ৫৩ শতাংশ কমেছে। নিরাপত্তাকর্মী নিহত হওয়ার সংখ্যা ৭৩ শতাংশ কমেছে বলে দাবি শাহের।