ফাইল ছবি।
দূরপাল্লার ট্রেনে সংরক্ষিত টিকিটের ক্ষেত্রে প্রায় ৫৩ রকমের ছাড় চালু ছিল। করোনাকালে যাত্রী-ভাড়া খাতে রেলের আয় প্রচণ্ড ভাবে ধাক্কা খাওয়ার পরে তার অধিকাংশই তুলে দেওয়া হয়। এখন গুরুতর অসুখ, শারীরিক প্রতিবন্ধকতা-সহ মাত্র ১২ রকম ক্ষেত্রে ছাড় চালু রয়েছে। যে-সব ছাড়ে কোপ পড়েছে, তার মধ্যে আছে প্রবীণ যাত্রীদের ছাড়ও। ২০২০ সাল থেকে দূরপাল্লার ট্রেনের সংরক্ষিত টিকিটে শুধু বয়স্কদের সেই ছাড় তুলে দেওয়ায় গত দু’বছরে প্রায় ১৫০০ কোটি টাকা বাড়তি আয় করেছে রেল।
অতিমারির বিভিন্ন ঢেউ পেরিয়ে গত নভেম্বরে সারা দেশে দূরপাল্লার ট্রেন পরিষেবা স্বাভাবিক করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। তার পরে প্রবীণ যাত্রীদের টিকিটে ছাড় ফিরিয়ে আনার দাবি একাধিক বার উঠলেও রেল তাতে সাড়া দেয়নি বলে অভিযোগ।
সম্প্রতি তথ্যের অধিকার আইনে করা এক মামলায় রেল জানিয়েছে, অতিমারি পর্বে গত দু’বছরে বিভিন্ন শ্রেণিতে সংরক্ষিত টিকিটে চালু থাকা ছাড় তুলে দেওয়ায় রেলের মোট ৩৪৬৪ কোটি টাকা আয় হয়েছে। মধ্যপ্রদেশের সমাজকর্মী চন্দ্রশেখর গৌড়ের প্রশ্নের উত্তরে রেল জানায়, অতিমারি পর্বের পরে দূরপাল্লার ট্রেনে সংরক্ষিত শ্রেণিতে সফর করা ৭.৩১ কোটি প্রবীণ যাত্রীকে তাঁদের টিকিটে ছাড় দেয়নি রেল। তার মধ্যে চার কোটি ছেচল্লিশ লক্ষই পুরুষ যাত্রী।
৬০ বছর বা তার থেকে বেশি বয়সের প্রবীণ পুরুষ নাগরিকেরা রেলের টিকিটে ৪০ শতাংশ ছাড় পেতেন। আর ৫৮ বা তার থেকে বেশি বয়সের মহিলারা টিকিটে ছাড় পেতেন ৫০ শতাংশ। অতিমারির পরে প্রায় দু’কোটি ৮৪ লক্ষ মহিলা সেই ছাড় পাননি। রূপান্তরকামী ৮৩১০ জন যাত্রীও ছাড়ের সুবিধা পাননি। অতীতে তাঁরাও টিকিটে ছাড় পেতেন।
রেল জানিয়েছে, প্রবীণ পুরুষ যাত্রীদের ছাড় বাতিল করে তাদের আয় হয়েছে ২০৮২ কোটি টাকা। প্রবীণ মহিলা যাত্রীদের ক্ষেত্রে ওই আয়ের অঙ্ক ১৩৮১ কোটি টাকা। রূপান্তরকামী যাত্রীদের টিকিটে ছাড় বাতিল করে রেলের আয় হয়েছে ৪৫ লাখ ৫৮ হাজার টাকা।
রেল জানিয়েছে, বিভিন্ন টিকিটে চালু থাকা ছাড়ের মধ্যে শুধু বয়স্কদের টিকিটের ভাড়ার টাকায় ছাড় দিতে তাদের প্রতি বছর প্রায় দু’হাজার কোটি টাকা খরচ হত। এ বার সেই খরচ সাশ্রয় হয়েছে। দু’বছরের মোট আয়ের নিরিখে এক বছরে দেড় হাজার কোটিরও বেশি টাকা আয় হয়েছে বলে জানান রেলের আধিকারিকরা।
ক্ষতির বহর কমাতে এর আগে, ২০১৬ সালে রেল প্রবীণদের টিকিটে ছাড়ের বিষয়টি ঐচ্ছিক করে দিয়েছিল। তবে সেই তৎপরতায় খুব বেশি মানুষ সাড়া দেননি বলেই খবর। পুরুষ যাত্রীদের মধ্যে মাত্র ১.৭ শতাংশ এবং মহিলাদের মধ্যে ২.৪৭ শতাংশ স্বেচ্ছায় ছাড়ের টাকা ছেড়ে দেন। রেলকর্তাদের একাংশের বক্তব্য, প্রবীণ যাত্রীদের টিকিটের ছাড় রেল আর না-ও ফেরাতে পারে। এক রেলকর্তা বলেন, ‘‘আর্থিক স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগে থাকা রেল এখন সব রকম অতিরিক্ত খরচই এড়াতে চাইছে। আয় বাড়ানোই লক্ষ্য।’’ ফলে প্রবীণ যাত্রীদের ছাড় আদৌ ফিরবে কি না, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy