Advertisement
২১ নভেম্বর ২০২৪
National news

‘সরি আম্মা’, দু’বছর টানা যৌন নির্যাতন সহ্য করেও দরজায় লিখে গেল ১২ বছরের শিশু

গত দু’বছর ধরে দিনের পর দিন যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে ওই শিশু। মর্মান্তিক এই ঘটনা কেরলের মলপ্পুরমের।

গ্রাফিক্স: তিয়াসা দাস

গ্রাফিক্স: তিয়াসা দাস

সংবাদ সংস্থা
মলপ্পুরম শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৬:০১
Share: Save:

ছোট কাঠের দরজায় লেখা ‘সরি আম্মা’। হাতের লেখাটা ১২ বছরের এক শিশুর। উদ্ধারকারীরা তাকে হোমে নিয়ে যেতে এলে তাড়াহুড়োয় ওই টুকুই সে লিখে যেতে পেরেছিল। গত দু’বছর ধরে দিনের পর দিন যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে ওই শিশু। মর্মান্তিক এই ঘটনা কেরলের মলপ্পুরমের।

তার উপর নির্যাতন শুরু হয়েছিল, যখন বয়স মাত্র ১০। বেকার বাবার উপার্জনের সহজ রাস্তা ছিল স্ত্রী ও ১২ বছরের মেয়েকে যৌন ব্যবসায় নামিয়ে দেওয়া। দিনের পর দিন নির্যাতনের শিকার হত স্ত্রী-মেয়ে, আর কাঁচা টাকায় হাত ভরাত বাবা। এ ভাবেই চলছিল, সম্প্রতি জানাজানি হয়ে যাওয়ায় ওই নাবালিকাকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে মেয়েটির বাবা এবং বাবার দুই বন্ধুকে।

দু’কামরায় ছোট কাঠের ঘরের একটা কামরায় মেয়ে থাকত। পাশের ঘরে তার বাবা-মা। যখনই টাকায় টান পড়ত কাউকে না কাউকে মেয়ের ঘরে ঢুকিয়ে দিত বাবা। বিনিময়ে মিলত কাঁচা টাকা। এ ভাবেই দু’বছর ধরে নির্যাতন চলছিল তার উপর।

দরজায় লেখা ‘সরি আম্মা’। ছবি: সংগৃহীত।

আরও পড়ুন: নারদ-কাণ্ডে প্রথম গ্রেফতার, আইপিএস অফিসার এসএমএইচ মির্জাকে হেফাজতে নিল সিবিআই

সম্প্রতি মেয়েটির এক সহপাঠী স্কুলের শিক্ষিকার নজরে বিষয়টি আনেন। তখনও অবশ্য সহপাঠী বা স্কুলের শিক্ষিকা কেউই জানতেন না কী ঘটেছে। মেয়েটি মাঝে মধ্যেই স্কুলে আসত না, তার আচরণেও অস্বাভাবিকত্ব দেখা দিয়েছিল, প্রায়ই অসুস্থ হয়ে পড়ত। সহপাঠী শুধু এটুকুই জানিয়েছিল স্কুলের শিক্ষিকাকে। স্কুলের তরফেই চাইল্ডলাইন কর্তৃপক্ষকে খবর দেওয়া হয়। চাইল্ডলাইন কর্তৃপক্ষ তার কাউন্সিলিং করান। তখনই জানতে পারেন, কতটা যন্ত্রণা বুকে চেপে রয়েছে ওই ১২ বছরের মেয়েটা। সে জানায়, প্রথমে তার বাবা মায়ের সঙ্গে ঠিক এটাই করত। দু’বছর ধরে তার সঙ্গে এটা ঘটে চলেছে। সব মিলিয়ে মোট ৩০ জন ব্যক্তি তাঁকে ধর্ষণ করেছে। শারীরিক পরীক্ষায় ধর্ষণের প্রমাণও পেয়েছেন চিকিৎসকেরা।

আরও পড়ুন: অপেক্ষাই সার, ছুটির মেয়াদ ফুরলেও কাজে যোগ দিলেন না রাজীব কুমার

স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জেনেছে, মলপ্পুরমের এই অঞ্চলে পাঁচ বছর ধরে ওই পরিবারের বাস। বাড়ির ভিতরে যে খারাপ কিছু ঘটে, তা প্রতিবেশীদের অনেকেই জানতেন। এমনকি, প্রায়ই রাতে ওই নাবালিকার কান্নার আওয়াজ তাঁরা পেতেন। রাত হলেই বাড়ির ভিতরে বাইরের লোক ঢুকতেও দেখতেন। তবু তাঁরা ভয়ে এবং অহেতুক ঝামেলা ভেবে এই বিষয়ে জড়াতে চাননি। প্রতিবেশীদের সাহায্য পেলে অনেক আগেই ওই নাবালিকাকে উদ্ধার করা যেত, জানিয়েছে পুলিশ।

গত শনিবার এই ঘটনা সামনে আসে। শনিবার তাঁকে ঘর থেকে হোমে নিয়ে যায় চাইল্ডলাইন। বাবা হয়ত মেয়ের কথা ভাবেনি, মেয়েকে পণ্য হিসাবে ব্যবহার করেছে, মা-ও মেয়ের পাশে দাঁড়ায়নি, কিন্তু সে চলে গেলে পরিবারের উপার্জনের রাস্তা যে একেবারেই বন্ধ হয়ে যাবে, উদ্ধারের সময়ও সেটাই সবচেয়ে বেশি ভাবিয়েছে ওই নাবালিকাকে। বাড়ি ছাড়ার আগে তাই ছোট হাত কাঠের দরজায় লিখে দিয়েছে, ‘সরি আম্মা’।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy